পশ্চিম মেদিনীপুর : জীবনের বেশ কয়েকটা দশক তিনি কাটিয়ে ফেলেছেন ইতিমধ্যে। বার্ধক্য এবং সারাদিনের ক্লান্তি তার চোখে মুখে স্পষ্ট। বয়স প্রায় আশি পেরোলেও এখনও প্রতিদিন নিয়ম করে তিনি রোগী দেখেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভর্তি থাকে তার চেম্বার। এলাকায় তিনি পরিচিত হাড় ভাঙা ডাক্তার হিসেবে। এই বয়সে এসে সারাদিন চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার পরেও অবসরে যা করেন এই চিকিৎসক, জানলে অবাক হবেন। রোগী দেখার ফাঁকে ও রাত জেগে চলে আর এই কাজ। সারাদিন সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি তার এই বিশেষ ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
বেশ কয়েক দশক ধরে তিনি যুক্ত চিকিৎসা পরিষেবায়। সরকারি হাসপাতালে কাজের পর তিনি ব্যক্তিগত চেম্বারে দেখেছেন হাজারও হাজারও রোগীকে। একটা সময় থেকে শুরু এখনও প্রতিদিন বেশ ভালো ভিড় হয় তার চেম্বারে। এলাকায় তিনি পরিচিত যোগেন ডাক্তার হিসেবে। তিনি গরিবদের কাছে ভগবান। বেশিরভাগ সময় তিনি বিনামূল্যে কিংবা সামান্য ফি নিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে থাকেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন তার কাছে। তবে প্রতিদিন বয়স বাড়ছে। বর্তমানে তার বয়স প্রায় আশি পেরিয়েছে। এই বয়সে এসেও তিনি করেন সাহিত্যের চর্চা। নিয়মিত সাদা কাগজে কলমের আঁচড় কেটে তিনি ফুটিয়ে তোলেন একাধিক উপন্যাস, ছোট গল্প থেকে গান এমনকি সচেতনতামূলক লেখাও। অবসর সময়ে এবং প্রতিদিন রাত্রিতে রাত জেগে চলে তার সাহিত্যের চর্চা। ইতিমধ্যেই তার লেখা একাধিক উপন্যাস-গল্প সংকলিত বই প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন : বাড়ি নাকি লাইব্রেরি বুঝতে পারবেন না, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর ভাবনা অবাক করবে
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার বাসিন্দা চিকিৎসক যোগেন্দ্রনাথ বেরা। তিনি পরিচিত হাড়ভাঙা ডাক্তার হিসেবে। এই বয়সে এসেও তার বার্ধক্য যেন কোথাও বাধা সৃষ্টি হতে পারেনি চিকিৎসা পরিষেবায়। চোখে মুখে বলিরেখা স্পষ্ট বার্ধক্যের ।প্রথম পর্যায়ে বহু মানুষের ব্লাড গ্রুপ সংকলিত রক্ত দর্পণ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। যা জনমানসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। ছোট থেকেই তার লেখালেখির হাত। এক এক করে তিনি লিখেছেন বই। প্রকাশও করেছেন তিনি। একাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে, বেশ কয়েকটি প্রকাশের পথে। এছাড়াও তিনি যুক্ত একাধিক ক্লাব সংগঠনের সঙ্গে। তিনি লিখেছেন একাধিক সিনেমার স্ক্রিপ্টও।
আরও পড়ুন : আর চাকরি করতে হবে না…! এই কাজ একবার শিখে নিলে বাড়িতে বসেই আয় করবেন মোটা টাকা
রাত জেগে অবসর সময়ে চলে তার এই কাজ। সারাদিনের কাজের পর বাড়তি সময় তিনি নষ্ট করতেই চান না। তার সঙ্গে থাকা একটি ডায়েরিতে লিখে চলেন এক একটি লাইন। যা সৃষ্টি করে আস্ত একটি বই। চিকিৎসা পরিষেবার পাশাপাশি সাহিত্যে ডুবে এই চিকিৎসক। ‘গরিবের ভগবান’ যোগেন বাবুর এই ভাবনা এবং তার দিনযাপন সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তারই ভাবনাচিন্তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।
রঞ্জন চন্দ