হাতে বানানো জিনিস হাতে বৃদ্ধা

West Medinipur News: বয়স পঁচাশি পেরিয়েছে, এই বয়সে এত্ত গুন, জানলে অবাক হবেন

পশ্চিম মেদিনীপুর : বয়সের ছাপ চোখে মুখে স্পষ্ট। তবে মনের জোর তরুণের মত। সবকিছু সামলেই ছোট থেকে যে নেশায় তিনি বুঁদ হয়ে থাকতেন, এখনও সেই নেশাকেই জিইয়ে রেখেছেন তিনি। বয়সটা এক এক করে ৮৬ পেরিয়েছে। তবে বয়সের ভার দমাতে পারেনি অশীতিপর এই বৃদ্ধ মহিলাকে। বয়সের খাতিরে বৃদ্ধ হলেও তিনি এখনও ঠিক যেন অষ্টাদশীর মত। তার হাতের কাজ এবং শিল্পের নিপুণতা মন ভরাবে আপনার। সূঁচ-সুতা কিংবা উল দিয়ে তৈরি করতে পারেন প্রায় পঞ্চাশেরও বেশি নানান জিনিস। দশ বছর বয়স থেকে করে আসা এই সকল হাতের কাজ এখনও অনায়াসেই করতে পারেন তিনি। বাড়ির সব কাজ সামলে তার ভালো লাগার এবং ভালোবাসার মধ্যে একটি স্টিচের কাজ।

বয়স তখন তার সবে দশ। তৎকালীন সময়ে পড়াশোনা তেমন না থাকলেও বাড়ির কাকিমা কিংবা বয়জ্যেষ্ঠদের থেকে তিনি শিখেছেন উলের কাজ, এমনকি স্টিচের কাজও। কাপড়ের উপর ফুটিয়ে তুলেছেন নানা ছবি। শুধু তাই নয়, একদম হুবহু বিভিন্ন লেখা এবং ছবিকে তৈরি করেছেন সুতোয় স্টিচ কিংবা উল বুনে। একেকটা দিন করে সময় পেরিয়েছে। নিজের জেদ এবং বইয়ের সামান্য স্টেপ দেখে শিখেছেন বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরির কৌশল। তিনি আরতি পৈড়্যা। বাড়ির দাঁতন ২ ব্লকের জেনকাপুরে। তিনি সূঁচ-সুতা দিয়ে স্টিচের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন নানা ছবি, তাও নানান কাপড়ে। অন্যদিকে উলের মোজা, সোয়েটার, বেডশীট সহ নানান জিনিস তৈরি করেছেন। সব মিলিয়ে তার হাতে বানানো জিনিসের সংখ্যা প্রায় ৫০ ছাড়িয়েছে।

আরও পড়ুন : উচ্চমাধ্যমিকের পর ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা? কী নিয়ে পড়াশোনা করলে ভাল, ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার টিপস

আরতী দেবীর বাপের বাড়ি ছিল সাগরদ্বীপ এলাকায়। বিয়ে হয়ে আসেন জেনকাপুরের একটি বৃত্তশালী পরিবারের। সেখানে এসে যৌথ পরিবারে রান্না কিংবা অন্যান্য সাংসারিক কাজ করতে হত। তবে প্রতিদিন নিয়ম করে অবশ্য তাকে বই পড়া এবং এই হাতের কাজ করতেই হত। কারণ এটাই ছিল তার ভালোবাসা এবং ভালোলাগার উৎস। দিন যত গড়িয়েছে সেই চর্চা আরও বেড়েছে। আরতী দেবীর দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে। ছেলেরা বর্তমানে কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন, মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। বাড়িতে কার্যত একাই থাকেন তিনি। সামান্য চাল ফুটিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি যখনই সময় পান অবসর কাটান সূঁচ সুতোয়। বসে পড়েন কাপড়ে নানা ডিজাইন তুলতে।

আরও পড়ুন : এই ফুল থেকেই বড়লোক হতে পারবেন আপনিও !

শুধু তাই নয়, আরতী দেবী দুবার পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পড়াশোনা তো তেমন না থাকলেও তার ঝোঁক বইয়ের প্রতি। বাড়িতেই একটি আলমারি জুড়ে সাজানো রয়েছে শুধুই বই। সারাদিন কাটান বইয়ের সঙ্গে।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

তবে তার হাতের কাজ এবং শিল্পনিপুণতা নজর কাড়বে আপনারও। এই বয়সে এসেও এত সুন্দর হাতের কাজ এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করার এই ভঙ্গিমাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।

রঞ্জন চন্দ