তপন ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে তীব্র জল সংকট 

South Dinajpur News : জলের প্রকল্প বসানো হলেও বিফলে! জল নিতে ছুটতে হচ্ছে পাঁচ ছয় কিলোমিটার দূরে

দক্ষিণ দিনাজপুর : গ্রীষ্মকাল শুরু হতেই, এলাকা জুড়ে তীব্র জল সংকট দেখা দিয়েছে। আগামী দু মাস পর এলাকার পানীয় জলের হাল কী হবে তা ভেবেই শঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। তপন ব্লকের মালঞ্চা, গোফানগর, লস্করহাট, ডাইং-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরই তীব্র জলকষ্ট দেখা দেয়। ভৌগোলিক কারণে এই সমস্ত অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর এতটাই নীচে যে সাধারণভাবে জল ওঠে না। কোথাও সাবমারসিবল, কোথাও মার্ক টু, টিউবওয়েল বসিয়ে জলের ব্যবস্থা চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাও বারবার বিফল হয়।

প্রসঙ্গত, ডাইং গ্রামে অন্তত আড়াইশো মানুষের বসবাস। ২১ সালে এই গ্রামে সোলার পাম্প সেট লাগিয়ে একটি সাবমারসিবল বসানো হয়েছিল এবং সেখানে ১ হাজার লিটারের ওভারহেড ওয়াটার ট্যাঙ্ক বসানো হয়। লক্ষ্য ছিল গ্রামবাসীকে পানীয় জলের টোয়েন্টিফোর ইন টু সেভেন সুযোগ দেওয়া। ফিফটিন ফিন্যান্স ২০২০-২১ খাতে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৭০০ টাকা খরচ করে এই পানীয় জলের প্রকল্প বসানো হয় এলাকায়। কিন্তু সেই প্রকল্প ছয় মাসের মধ্যেই বিকল হয়ে যায়। প্রথম থেকেই এই প্রকল্পের মেশিনপত্র বারবার খারাপ হতে থাকে বলে অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট দফতরকে বিষয়টি একাধিকবার জানানোর পর বার কয়েক মেরামত করে গেলেও পরে আবারও বিকল হয়ে পড়ে। আর হাজার ডাকাডাকিতেও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে পানীয় জলের পাইপলাইন বসালেও সেখান থেকেও নিয়মিত জল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। যার ফলে ছুটতে হচ্ছে ৪-৫ কিলোমিটার দূরে। গ্রামের মহিলা থেকে পুরুষ সকলেই সাইকেল নিয়ে ছুটছেন পানীয় জলের সন্ধানে। বছর দশেক আগে গঙ্গারামপুর সাবডিভিশনের পুনর্ভবা নদী থেকে জল তুলে তপন ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প শুরু হয়েছিল।

সেই প্রকল্প আজও সম্পূর্ণ হয়নি। যার ফলে পানীয় জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি তপন ব্লকের শুখা অঞ্চল গুলিতে। যার ফলে গ্রামবাসীদের এখন ৪-৫ কিলোমিটার দূরে জল আনতে যেতে হয় দিনে দু থেকে তিনবার। পাশাপাশি নিত্য দিনের কাজের জন্য বদ্ধ পুকুরের জল একমাত্র ভরসা। এছাড়া বাসন ধোয়া, কাপড় কাচা বা স্নান করা-সহ গৃহস্থালী কাজকর্মের জন্য পুকুরের জলই ব্যবহার করে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু সেই জল কতদিন থাকবে তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ গ্রীষ্মের মাঝামাঝিতে গিয়ে এই সমস্ত পুকুর শুকিয়ে যাবে তখন পানীয় জলের ব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে এখন থেকেই স্থানীয় বাসিন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

সুস্মিতা গোস্বামী