Tag Archives: Water Crisis

South Dinajpur News : জলের প্রকল্প বসানো হলেও বিফলে! জল নিতে ছুটতে হচ্ছে পাঁচ ছয় কিলোমিটার দূরে

দক্ষিণ দিনাজপুর : গ্রীষ্মকাল শুরু হতেই, এলাকা জুড়ে তীব্র জল সংকট দেখা দিয়েছে। আগামী দু মাস পর এলাকার পানীয় জলের হাল কী হবে তা ভেবেই শঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। তপন ব্লকের মালঞ্চা, গোফানগর, লস্করহাট, ডাইং-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরই তীব্র জলকষ্ট দেখা দেয়। ভৌগোলিক কারণে এই সমস্ত অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর এতটাই নীচে যে সাধারণভাবে জল ওঠে না। কোথাও সাবমারসিবল, কোথাও মার্ক টু, টিউবওয়েল বসিয়ে জলের ব্যবস্থা চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাও বারবার বিফল হয়।

প্রসঙ্গত, ডাইং গ্রামে অন্তত আড়াইশো মানুষের বসবাস। ২১ সালে এই গ্রামে সোলার পাম্প সেট লাগিয়ে একটি সাবমারসিবল বসানো হয়েছিল এবং সেখানে ১ হাজার লিটারের ওভারহেড ওয়াটার ট্যাঙ্ক বসানো হয়। লক্ষ্য ছিল গ্রামবাসীকে পানীয় জলের টোয়েন্টিফোর ইন টু সেভেন সুযোগ দেওয়া। ফিফটিন ফিন্যান্স ২০২০-২১ খাতে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৭০০ টাকা খরচ করে এই পানীয় জলের প্রকল্প বসানো হয় এলাকায়। কিন্তু সেই প্রকল্প ছয় মাসের মধ্যেই বিকল হয়ে যায়। প্রথম থেকেই এই প্রকল্পের মেশিনপত্র বারবার খারাপ হতে থাকে বলে অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট দফতরকে বিষয়টি একাধিকবার জানানোর পর বার কয়েক মেরামত করে গেলেও পরে আবারও বিকল হয়ে পড়ে। আর হাজার ডাকাডাকিতেও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে পানীয় জলের পাইপলাইন বসালেও সেখান থেকেও নিয়মিত জল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। যার ফলে ছুটতে হচ্ছে ৪-৫ কিলোমিটার দূরে। গ্রামের মহিলা থেকে পুরুষ সকলেই সাইকেল নিয়ে ছুটছেন পানীয় জলের সন্ধানে। বছর দশেক আগে গঙ্গারামপুর সাবডিভিশনের পুনর্ভবা নদী থেকে জল তুলে তপন ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প শুরু হয়েছিল।

সেই প্রকল্প আজও সম্পূর্ণ হয়নি। যার ফলে পানীয় জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি তপন ব্লকের শুখা অঞ্চল গুলিতে। যার ফলে গ্রামবাসীদের এখন ৪-৫ কিলোমিটার দূরে জল আনতে যেতে হয় দিনে দু থেকে তিনবার। পাশাপাশি নিত্য দিনের কাজের জন্য বদ্ধ পুকুরের জল একমাত্র ভরসা। এছাড়া বাসন ধোয়া, কাপড় কাচা বা স্নান করা-সহ গৃহস্থালী কাজকর্মের জন্য পুকুরের জলই ব্যবহার করে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু সেই জল কতদিন থাকবে তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ গ্রীষ্মের মাঝামাঝিতে গিয়ে এই সমস্ত পুকুর শুকিয়ে যাবে তখন পানীয় জলের ব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে এখন থেকেই স্থানীয় বাসিন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

সুস্মিতা গোস্বামী

Bangla Video: ওদের জন্য শহরজুড়ে বসল জলের পাত্র

হাওড়া: দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে টানা তাপপ্রবাহ চলছে। এই তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। সকাল ১০ টার পর থেকে নিতান্তই প্রয়োজন না থাকলে আর রাস্তায় বেরোচ্ছে না কেউ। কিন্তু মানুষের কাছে যে সুযোগ আছে তা তো আর পথকুকুর বা অন্যান্য পথচারী প্রাণীদের নেই। এই গরমে শারীরবৃত্তীয় কারণে সারমেয়দের কষ্ট আরও বেশি হয়। তাছাড়া তীব্র তাপে চারিদিক শুকিয়ে যাওয়ায় তারা ঠিক করে জল পান’টুকুও করতে পারছে না। এই অবস্থায় পথকুকুরদের জন্য এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে হাওড়া শহরজুড়ে জলের পাত্র বসাল পুরসভা।

আর‌ও পড়ুন: পটে আঁকা ছবি গরম থেকে মুক্তির পথ দেখাবে!

এই গরমে হাওড়া পুরসভা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পওশম হাওড়ার’ এমন উদ্যোগের ফলে কুকুরদের পাশাপাশি বিড়াল, পাখিরাও স্বস্তি পাবে। হাওড়া পুরসভা, শরৎ সদন, মেট্রো গেট, কোর্ট চত্বর, মঙ্গলা হাট সহ ৩০ টি জায়গায় এই জলের পাত্র বসানো হয়েছে। যেখানে এই গরমের দিনে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো পশু এবং পাখিরা তৃষ্ণা মেটাতে পারবে।

এই প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা শৈলেশ উপাধ্যায় জানান, তাঁরা সারা বছরই এই ধরনের কাজ করেন। এবার এই গরমে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাই পুরসভার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তাঁরা এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন।

রাকেশ মাইতি

Water Crisis: তপ্ত দুপুরে বাড়ি ছেড়ে বালতি হাতে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে মহিলারা

উত্তর দিনাজপুর: ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রায় যখন বেশিরভাগই বাড়িতে কিংবা অফিসে ফ্যান বা এসির নিচে বসে, তখন অবাক ঘটনা উত্তর দিনাজপুরের এক পঞ্চায়েত অফিসের সামনে। নিজেদের বাড়ি ছেড়ে তীব্র রোদে বালতি হাতে নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে ভিড় গ্রামের মহিলাদের। সকলের মুখে একটাই রা ‘জল জল, জল চাই’।

এইরকমই একটি দৃশ্য দেখা গেল উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের বাঙালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে। তীব্র গরমে জলকষ্টে ভুগছে গোটা গ্রাম। তীব্র দাবদাহের হাত থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন বেশি করে জল পান করতে। কিন্তু সেই জলেরই আকাল দেখা দিয়েছে বাঙালবাড়ি গ্রামের একাধিক এলাকায়। খাবারের জল থেকে স্নানের জল কিছুই নেই গ্রামে। গ্রামে কল থাকলেও জল উঠছে না। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের মহিলারা।

আর‌ও পড়ুন: ইংরেজ আমলে ছিল রেলের সদর দফতর, আজ সেই স্টেশনে ‘ঘুঘু’ চড়ে

বিক্ষোভকারী মহিলারা বলেন, প্রতিবছর এই সময় এলাকায় জলের সমস্যা হয়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার সমস্যার সমাধানে কোন‌ওরকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ভোটের প্রচারের সময় রাজনৈতিক নেতারা জলের বন্দোবস্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতকেও তিনবার জানানো হয়েছে। কিন্তু জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে পুকুরের নোংরা জল দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। যদিও ব্লক প্রশাসনের তরফে সমস্যার দ্রুত সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

পিয়া গুপ্তা

Bangla Video: ক্রমশ‌ই কমছে কাঁসাইয়ের জলস্তর, এই গরমে কী হবে পুরুলিয়ার!

পুরুলিয়া: তাপপ্রবাহ কমার নাম নেই। বরং প্রতিদিনই যেন নতুন রেকর্ড গড়ছে গরম। কোনওভাবেই স্বস্তি পাচ্ছে না পুরুলিয়ার মানুষ। এরই মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পর্যাপ্ত জলের সরবরাহ। এমনিতেই সারা বছর এই জেলায় জলের সমস্যা থাকে। গরমের দিনে তা আরও অনেকখানি বেড়ে যায়। ইতিমধ্যেই দু-বেলার পরিবর্তে এক বেলা জল সরবরাহ করা হচ্ছে পুরসভার পক্ষ থেকে। মানুষ যাতে জল অপচয় না করে তার জন্য বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। জল সরবরাহ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন্য পুরপ্রধান নব্যেন্দু মাহালি কাঁসাই নদীর শিমুলিয়া পাম্প স্টেশন পরিদর্শন করেন।

আর‌ও পড়ুন: গ্রামে বেশি বেশি করে হোম স্টে চাইছেন পটশিল্পীরা! ভোটের আগে এ কী কাণ্ড

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরপ্রধানের সঙ্গে পাম্প স্টেশন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররাও। এদিকে তীব্র গরমে কাঁসাই নদীর জলের স্তর ক্রমশই নেমে যাচ্ছে। তাই সরজমিনে তা খতিয়ে দেখা হয় পুরসভার পক্ষ থেকে। এই বিষয়ে পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নব্যেন্দু মাহালি বলেন, কাঁসাই নদীর জলের স্তর অনেকটাই নিচে নেমে গেছে। চারিদিকে শুধু বালি আর বালি। জল প্রায় শুকিয়ে গেছে। এখানে মাত্র ছয়টি পাম্প বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। আমরা নতুন করে বোরিং করার চেষ্টা করছি।

পুরুলিয়া জেলায় জলের প্রধান উৎস কাঁসাই নদী। প্রতিবছরই গ্ৰীষ্ণের প্রখর দাবদাহে জলের স্তর নেমে যায় কাঁসাই নদীতে। আর তাতেই চরম জলকষ্টে ভুগতে হয় জেলার মানুষদের। পুরসভার পক্ষ থেকে লাগাতার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জল সংঙ্কট রোধ করতে। আগামী দিনে জলেরস্তর স্বাভাবিক রাখতে পুরসভা ঠিক কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে এমনটাই আশা জেলাবাসীর।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি

Monkey viral video: বাড়িতে ঢুকে পিউরিফায়ারের জল খাচ্ছে হনুমান, ভাইরাল ‘স্মার্ট হনুমানের’ ভিডিয়ো

বাঁদরের অনেক ব্য়বহারই মানুষকে মজা দেয়। বাঁদর অনেক সময়ই নকল করতে গিয়ে মানুষের অনেক ব্য়বহারই এতই অবিকল নকল করে ফেলে, যে ভাইরাল হয়ে যায় তাদের আচরণ। তেমনই বেঙ্গালুরুতে ভাইরাল হল এক তৃষ্ণার্ত বাঁদরের জল খাওয়ার ভিডিয়ো।

আরও খবর: রোদের মধ্যে বেরোতে হচ্ছে, মাথায় পরতে পারেন এসি হেলমেট, কোথায় পাওয়া যাবে?

বেঙ্গালুরু-সহ দক্ষিণ ভারত জুড়ে চলছে তীব্র জলসঙ্কট। জলের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকারও। তার মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে বাঁদরের জল খাওয়ার একটি ভিডিয়ো। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে একটি বাঁদর রান্নাঘরে ঢুকে পিউরিফায়ার থেকে জল খাওয়ার চেষ্টা করছে। কল দিয়ে জল পড়ছে না দেখে কিছু ক্ষণ চেষ্টার পরে পিউরিফায়ারের কল খুলে জল খাওয়া শুরু করে। বারান্দায় বসে থাকা অন্য একটি বাঁদর সেই বাঁদরটির জল খাওয়া দেখছে।

আরও খবর: তিন বছর পরে ধরে ভারতে আটকে বাংলাদেশি শিশু, অবশেষে ফিরল দেশে

বাঁদরের এই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরেই নেটাগরিকদের মনে প্রশ্ন যে মানুষের সঙ্গে কি পশুপাখিরাও পানীয় জলের সমস্য়ার মুখোমুখি হচ্ছে। ভাইরাল ভিডিয়োটির ক্যাপশানে লেখা আছে, ’বাঁদর তৃষ্ণার্ত: জলের সন্ধানে রান্নাঘরের জানলা দিয়ে হানা দিচ্ছে। বেঙ্গালুরুর জল সঙ্গটের কারণে শুধু মানুষ নয়, সমস্যায় পড়ছে পশুপাখিরাও সমস্যায় পড়ছে। আসুন তাদের জন্য জল বাঁচাতে সাহায্য় করি’।

Lok Sabha Election 2024: চাই পর্যাপ্ত জল, ভোটে আর কী কী দাবি স্থানীয়দের?

পশ্চিম মেদিনীপুর: দিল্লির মসনদ দখলের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই ‘যুদ্ধে’ ঘাটাল কেন্দ্রে জমজমাট তারাকা যুদ্ধ হচ্ছে। যদিও আমজনতার চাহিদা পুরোটাই দৈনন্দিন জীবন কেন্দ্রিক। এই কেন্দ্রের অন্তর্গত দাসপুরের মানুষের মূল দাবিই হল পর্যাপ্ত পানীয় ও সেচের জলের সরবরাহ নিশ্চিত করা। প্রার্থীদের কাছে সেই দাবিই রাখছেন তাঁরা।

ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে এবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে বিদায়ী সাংসদ তথা টলিউড সুপারস্টার দেব’কে। অপরদিকে বিজেপি প্রার্থী করেছে দলের বিধায়ক তথা টলি তারকা হিরণ’কে। এই লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা জুড়ে বহু মানুষ চাষাবাদের উপর নির্ভর করেন। কিন্তু সেই চাষাবাদ করতে গিয়ে প্রয়োজন জলের। পর্যাপ্ত পানীয় জল ও চাষের জলের দাবি জানাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা।

আর‌ও পড়ুন: ‘রোমান্টিক’ ফল লিচু চাষে খুলেছে কপাল! পুরোটা জানলে…

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার খুকুড়দহ এলাকায় বহু মানুষ কৃষিকাজ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা থাকার কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে পানীয় জল ও চাষের জলের সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বারংবার জানানো হয়েছে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে তবে সুরাহা হয়নি।

ভোট এলেই প্রচারে আসেন বহু নেতা নেত্রী। কিন্তু ভোট পেরোলেই তথৈবচ অবস্থা থাকে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। তাই ভোটের আগে স্থানীয় সমস্যার সমাধানের ডাক দিয়েছেন। পানীয় জল ও চাষের পর্যাপ্ত জলের দাবি জানিয়েছেন কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন।

রঞ্জন চন্দ

Lok Sabha Election 2024: গভীর জঙ্গলে বাস, জলের কষ্ট বারোমাস

পশ্চিম বর্ধমান: সবুজ ঘন জঙ্গল ভেদ করে চলে গিয়েছে কালো পিচের রাস্তা। এই রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় কাঁকসার জঙ্গলমহলের একাধিক গ্রামে। রয়েছে একাধিক আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। যাদের জীবন চালানোর মূল কেন্দ্র জঙ্গলকে নির্ভর করে। তবে সেখানেও এসেছে উন্নতির ছোঁয়া। হয়েছে রাস্তাঘাট। স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিদ্যালয় এখন আর খুব দূরে নয়।

কিন্তু এত কিছুর পরেও সমস্ত অভাব যে মিটে গিয়েছে এমনও নয়। এই সমস্ত গ্রামের বাসিন্দাদের মূল জীবিকা কৃষিকাজ। বর্ষাকাল সহ কৃষির সময় তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় মাঠে-ঘাটে কাজ করতে যান। অন্য দিকে বাড়ির পুরুষ সদস্যরা কেউ কেউ বিভিন্ন কারখানায় কাজ করেন। আর পরিবারের মহিলা সদস্যদের এই সময় জঙ্গল থেকে পাতা সংগ্রহ করেন। তারপর সেই পাতা বাড়ি নিয়ে এসে সেলাই করেন। এরপর সেলাই করা পাতা চলে যায় সোজা বাজারে। তাতে হাতে আসে অর্থ। জীবন, জীবিকা চালানো কিছুটা সহজ হয় তাতে।

আর‌ও পড়ুন: যন্ত্রণার নাম রেলগেট, সমাধানের ওভারব্রিজ যেন ভোটের ‘মোয়া’

শিয়রে লোকসভা নির্বাচন। গত পাঁচ বছরে জঙ্গলের মধ্যে বসবাসরত এই মানুষগুলো কী পেয়েছেন? তাঁদের দাবি কী? সেইসব খোঁজখবর করতেই আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম জঙ্গলমহলের এমনই একটি গ্রামে। সেই গ্রামে ঢুকতেই দেখা গেল বিভিন্ন মহিলা সদস্য এক জায়গায় বসে পাতা সেলাই করছেন। তাঁদের সমস্যা, চাহিদা নিয়ে প্রশ্ন করি আমরা। আর তাতে গভীর জঙ্গলে বসবাসরত এই সরল মানুষগুলির সহজ উত্তর, গ্রামে মাত্র একটাই সাবমারসিবল আছে। তার উপর নির্ভর করে বহু পরিবার। সকাল এবং বিকেল মাত্র এক ঘণ্টা করে জল দেওয়া হয়। এই গরমে তাতে চলে না বিকল্প ব্যবস্থা করলে খুব ভাল হয়।

আর‌ও পড়ুন: সারনা ধর্মের স্বীকৃতি না মেলায় ভোট বয়কটের ডাক আদিবাসী সংগঠনের

তবে গত কয়েক বছরে ধীরে ধীরে এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। ঢালাই করা রাস্তা পেয়েছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ আগের থেকে ভাল হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পান। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্বও অল্প। কিন্তু জল নিয়ে সমস্যা যেন কিছুতেই কাটছে না। এই গরমে জলের জন্য তাঁদের হাহাকার লেগেই রয়েছে। এই ভয়াবহ গরমেও জল সঙ্কটের কারণে খুব মেপে জল খরচ করতে হয়।

নয়ন ঘোষ

Drinking Water Crisis: তৈরি হয়ে পড়ে আছে সুন্দর সুন্দর ওয়াটার রিজার্ভার, কিন্তু চালু হবে কবে?

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কথা ছিল লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ হবে জল জীবন মিশনের কাজ। সেই অনুযায়ী মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় সুন্দর সুন্দর ওয়াটার রিজার্ভার তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেগুলি তৈরি হয়ে পড়েই আছে। সেখান থেকে জল সরবরাহ শুরু হচ্ছে না। ফলে অসুবিধায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ না হ‌ওয়ায় রিজার্ভার তৈরি হয়ে গেলেও জল সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে।এদিকে এই গরমে জলের স্তর নেমে যাওয়ায় একের পর এক নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই ফলতা, মথুরাপুর জল প্রকল্পের মাধ্যমেই বাড়িতে বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ অনেকটাই বাকি। বিভিন্ন জায়গায় ওয়াটার রিজার্ভার, ট্যাঙ্ক সহ একাধিক অফিস তৈরি হয়ে পড়ে আছে। সেগুলিতে সুন্দর করে রং করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় গ্রীষ্মের দাবদাহে খাল, বিল, পুকুর শুকিয়ে ফুটিফাটা। জলস্তর নেমে যাওয়ায় একের পর এক নলকূপ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। কোথাও আবার নলকূপ থেকে ঘোলা জল বের হচ্ছে।

আর‌ও পড়ুন: কাজে যাওয়া হল না, বাড়ি থেকে বেরোতেই ডাম্পারের ধাক্কায় সব শেষ!

পুকুরে জল না থাকায় নলকূপের জলে স্নান, খাওয়া, দাওয়া করতে করতে হচ্ছে সকলকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন জল জীবন মিশনের পাইপলাইন বসানোর কাজ এখন‌ও চলছে। গরমের সময় অনেককে বাধ্য হয়ে জল কিনে খেতে হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চেয়েছেন স্থানীয়রা। যদিও কবে এই সমস্যার সমাধান হবে তার স্পষ্ট উত্তর এখনও কারোর কাছে নেই।

নবাব মল্লিক

Water Crisis: গরম পড়তে না পড়তেই কিনে খেতে হচ্ছে জল, দূষণ ভুলে কেউ কেউ ভরসা রাখছেন নদীতে

পূর্ব বর্ধমান: ‘একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন?’ অবাক জলপানের এই প্রশ্নটাই কার্যত ঘুরপাক খাচ্ছে এই গ্রামের বাসিন্দাদের মাথায়। গরমের শুরুতেই জল পাচ্ছেন না এখানকার মানুষ। তাই বাধ্য হয়ে জল কিনে খেতে হচ্ছে। আর যাদের জল কেনার সামর্থ্য নেই তাঁরা স্বাস্থ্যের বিষয়টি ভুলে বাধ্য হচ্ছেন গঙ্গার জল পান করতে। অনেকে জলের অভাবে রান্নার কাজও গঙ্গার জল দিয়েই সারছেন। এমনই জলকষ্টের ছবি ধরা পড়ল পূর্ব বর্ধমান জেলায়।

গরমের শুরুতেই জল সঙ্কটের ভয়াবহ ছবি উঠে এল পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-২ ব্লকের অন্তর্গত তামাঘাটা গ্রামে। এই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের অবস্থা এখন নাজেহাল। সাইকেল নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে কিনে আনতে হচ্ছে জল। আবার কেউ কেউ নদী থেকে জল নিয়েই কাজ চালাচ্ছেন।

আর‌ও পড়ুন: এবার ভোট ময়দানে বাঘু

গ্রামের প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই টাইমকলের পয়েন্ট রয়েছে। কিন্তু জল নেই। গ্রামের এক মহিলা বলেন, জল আসছে না বলেই সমস্যা হচ্ছে। প্রায় ১ মাস ধরে এই সমস্যা হচ্ছে। এখন জল কিনে খেতে হচ্ছে। আর গঙ্গার জলে ভাত এবং সবজি রান্না করছি। অনেকে জানিয়েছেন জলের পাইপ ফেটে যাওয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে। কখনও জল পড়ে, আবার কখনও জল পড়ে না কল থেকে। গ্রামের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দারা জানান, বাড়িতে টাইম কল বসানোর পর থেকে একদিনের জন্যও তাঁদের কলে জল আসেনি।

এই পরিস্থিতিতে ২০ লিটারের জল কোনও জায়গায় ১০ টাকা আবার কোথাও ১৫ টাকা দিয়ে কিনে পান করতে বাধ্য হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। এখন যদি আপনি তামাঘাটা গ্রামে যান তবে প্রবেশের মুখেই দেখতে পাবেন, বেশ কিছু জায়গায় ভ্যানে করে পানীয় জল বিক্রী হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক তপন চ্যাটার্জি বলেন, মানুষের সচেতন হওয়ার প্রয়োজন আছে। অনেকেই প্রয়োজনের বেশি জল নষ্ট করছেন। এখন বুঝতে পারছে না, আমরা তো জল পেলাম। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম জল পাবে না। মানুষ যতদিন না বুঝবে ততদিন হাজার চেষ্টা করেও কিছু করা যাবে না।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী