Phd করলেন এই বন্দি

Success Story: জীবন কাটে সংশোধনাগারে, সেখান থেকেই পিএইচডি! বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দিলেন অর্ণব দাম

বর্ধমান: সংশোধনাগার থেকে পিএইচডির আবেদন। সেই আবেদনে সাড়া দিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে ইতিহাস বিভাগে এসে ইন্টারভিউ দিল যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি অর্ণব দাম। জেল থেকে পরীক্ষা দিয়েই স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট(সেট)-এ সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এক সময় রাজ্যের শীর্ষ মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রম। রাজ্য কারা দফতর সূত্রে খবর, এর আগে কেউ জেলবন্দি অবস্থায় এ ধরনের কোনও পরীক্ষায় সফল হননি।

এবার সেই অর্ণব দাম পিএইচ ডি করতে চান। সেজন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। আজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে ইতিহাস বিভাগে বিশেষ নিরাপত্তায় তার ইন্টারভিউ হল। যোগ্যদের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারলে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করতে পারবে অর্ণব। তখন হুগলি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ বা কারা দফতর তা অনুমোদন করে কিনা সেটা দেখার।

আরও পড়ুন – Yellow Alert For Rain: সকালেই রাত নামছে কলকাতা ও জেলায়, এটাই কি বর্ষার বৃষ্টি শুরু, রইল ওয়েদারের মেগা আপডেট

গড়িয়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এসকে দামের ছেলে অর্ণব ছোট থেকেই মেধাবী বলেই পরিচিত। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে খড়্গপুর আইআইটি-তে পড়াশোনা করেন। কিন্তু তিনটি সেমেস্টারের পরেই হঠাৎই খড়্গপুর আইআইটির ক্যাম্পাস ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান অর্ণব। সিপিআই (মাওবাদী)-এর রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট হয়ে তিনি ১৯৯৮ সালে যোগ দিয়েছিলেন ওই সংগঠনে।

আইআইটির ক্যাম্পাস থেকে পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ে-জঙ্গলে হাতে একে-৪৭ নিয়ে ডেরা বাঁধেন অর্ণব। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত মাওবাদী পলিটব্যুরো নেতা কিষেনজির অত্যন্ত স্নেহের পাত্র ছিলেন অর্ণব। লালগড় আন্দোলনের সময় অযোধ্যা-বাঘমুন্ডির পাহাড়-জঙ্গলে তাঁর গেরিলা বাহিনী নাজেহাল করে দিয়েছিল যৌথ বাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দাদের। শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা থেকে শুরু করে একাধিক মাওবাদী হামলায় অভিযুক্ত অর্ণব ২০১২ সালে হঠাৎই ধরা পড়েন আসানসোল থেকে। জেলবন্দি হওয়ার পর থেকেই ওই গেরিলা নেতা অসম্পূর্ণ থাকা উচ্চশিক্ষায় মন দেন।

জেল থেকেই পরীক্ষা দিয়ে স্নাতক হন। প্রায় ৭০ শতাংশ নম্বর নিয়ে শেষ করেন স্নাতকোত্তর পাঠ। তিনি জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, অধ্যাপনা করতে চান। তাই ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট(নেট)-এ বসার আবেদন জানিয়েছিলেন।জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে সেই পরীক্ষা তিনি দেন। সেটে পাশ করার পর এবার পিএইচডি করা লক্ষ্য তার।

Saradindu Ghosh