হরিকান্ত শর্মা, আগ্রা: উত্তর ভারত-সহ দেশের একাধিক শহরে তাপমাত্রা রেকর্ড ছুঁয়েছে। গরমে নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার। এই তালিকায় রয়েছে আগ্রাও। ১২৪ বছরে দ্বিতীয়বার আগ্রার তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৮ ডিগ্রি। হাঁসফাঁস দশা শহরবাসীর। গরম থেকে বাঁচতে এসি-র দোকানে লম্বা লাইন পড়েছে। কিন্তু আগ্রার দয়ালবাগ কলোনির ছবিটা পুরো উল্টো।
দয়ালবাগের কোনও বাড়িতে এসি নেই। শুধু পাখা চলছে। কোনও কোনও বাড়িতে কুলার। তাতেই দিব্যি রয়েছেন এখানকার মানুষ। এমন নয় যে, দয়ালবাগের বাসিন্দাদের এসি কেনার ক্ষমতা নেই। আইএএস, আইপিএস, বিচারকরা এই কলোনিতে থাকেন। তাই ক্ষমতা যথেষ্টই আছে, কিন্তু দরকার পড়ে না। কারণ এখানকার তাপমাত্রা শহরের অন্যান্য অংশের তুলনায় কম।
গাছ লাগানোর ফলে তাপমাত্রা কম: দয়ালবাগ আগ্রা শহরের একেবারে কেন্দ্রে অবস্থিত। এক ডজনেরও বেশি কলোনি রয়েছে এখানে। অধিকাংশই ৫০ থেকে ৯০ বছরের পুরনো। এই অঞ্চলের কম তাপমাত্রার কারণ হল, চমৎকার ইকোসিস্টেম এবং সবুজ পরিবেশ। এখানকার প্রতিটা বাড়ি গাছগাছালিতে ভরা। ঘরগুলো এমন ভাবে তৈরি যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে। আর্দ্রতা বজায় থাকে। আশপাশের কলোনিগুলোতেও প্রচুর গাছ। কোনও বাড়িতেই এয়ার কন্ডিশনারের দেখা মিলবে না।
স্বামী নগর, দয়াল নগর, প্রেম নগর, বিদ্যুৎ নগর, শ্বেত নগর, কার্যবীর নগর, রাধা নগর, শরণ নগর, মেহর বাগ এবং ডিইআই কলোনি। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ পরিবারের বাস। শুধু ফ্যান আর কুলার চলছে। এসির নামগন্ধ নেই।
এয়ার কন্ডিশনার নয়, গাছ: দয়াল নগরের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সিএম সিং বলেছেন, “আমাদের বাড়ি ঠান্ডা, কারণ আমরা গাছ লাগিয়েছি। এসি নয়। এসি কখনই স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। কিন্তু গাছ এসির কাজ করে। আমাদের বাড়ি চারদিক থেকে গাছগাছালিতে ঘেরা। সূর্যের আলো কম ঢোকে। ফলে ঘরের ভিতরের তাপমাত্রাও কম থাকে। শুধু কুলার বা ফ্যান চলে। সবার এসির বদলে গাছ লাগানো উচিত।’’
দয়ালবাগ পরিবেশবান্ধব, সব কিছুই অর্গানিক: রাধা নগরের গুরমৌজ চাভদা জানান, তাঁর কলোনিতে এয়ার কন্ডিশনার বসানোর অনুমতি নেই। বাসিন্দারা যে এয়ার কন্ডিশনার কিনতে পারে না তা নয়। এর প্রয়োজন নেই। কারণ গাছ আছে। তাই তাপমাত্রা খুবই কম। দয়ালবাগকে পরিবেশবান্ধব করতে এই উদ্যোগ। এর জন্য কয়েক বছর আগেই থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন এখানকার বাসিন্দারা।