ক্রমশ বাড়ছে স্তন ক্যানসার। এজন্য সচেতনতা প্রয়োজন। স্তনে কোনও ধরনের অস্বাভাবিকতা, বা মাংসপিণ্ড অনুভব করা গেলে তা পরীক্ষা করানো জরুরি। শুধু তাই নয়, নিয়মিত নিজেকেও পরীক্ষা করে দেখা দরকার। স্তনে আচমকা ব্যথা কি খুব ভাবাচ্ছে আপনাকে? খুবই দুশ্চিন্তা হচ্ছে? তাহলে এই কয়েকটি দিক খেয়াল করতে হবে। জানুন কেন হতে পারে স্তনে ব্যথা। (Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)স্তনের ব্যথা মানেই তা নিয়ে গুরুতর ভাবনার বিষয় রয়েছে এমনটা নয়। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। নারীরোগ বিশেষজ্ঞ বিশাল মাকওয়ানা বলছেন, স্তনের ব্যথা মাস্টলিজিয়া নামে পরিচিত। তিনি বলছেন, ব্যথা কেমন ধরনের হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। দেখে নেওয়া যাক, স্তনে ব্যথার ৫ টি কারণ।সিস্ট- চিকিৎসক বলছেন, সিস্ট মানেই তা ক্যানসার এমন নয়। তবে আলসার বিভিন্ন রূপে হতে পারে। সিস্ট আর টিউমারের পার্থক্য নিয়ে সচেতন থাকার কথাও বলা হচ্ছে। স্তনের গ্রন্থি যখন বেড়ে যায়, তখন অনেক সময় সিস্ট হয়। সিস্টের জন্য অনেক সময় ব্যথা হয়। তবে সচেতন থাকা জরুরি।চক্রীয় ব্যথা-স্তনে সাইক্লিক ব্যথা প্রজনন চক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি সাধারণত উভয় স্তনকে প্রভাবিত করে এবং পিরিয়ডের ২ সপ্তাহ আগে ব্যথা বাড়ে, পরে ঠিক হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ব্যথা স্বাভাবিক এবং কোন উদ্বেগের কারণ হয় না। এটিতে স্তনে অস্বস্তি হয়।মেস্টাইটিস- স্তনে প্রদাহ হলে মেস্টাইটিস হিসাবে তাকে ধরা হয় প্রাথমিকভাবে। অনেক সময় স্তনের দুধ আসার পর এটি হয়। এটিতে একটি জ্বালাভাব থাকে কখন কখনও। অনেক সময় ব্যথার ফলে জ্বরও হয়। ব্য়থা না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। (Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)ওষুধ- কিছু কিছু ওষুধের সাইড এফেক্ট হিসেবে স্তনে ব্যথা হয়। অ্যান্টি প্রেগন্যান্সি বা কন্ট্রাসেপটিভ পিলের কারণে অনেক সময়ই স্তনে ব্যথা হয়। ফলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকরই একমাত্র সঠিক দিশা দেখাতে পারবেন।ব্রেস্ট ক্যানসার- ব্রেস্ট ক্যানসারে বেশিরভাগ সময় কোনও ব্যথা হয় না। তবে উপাচারে দেরি করলে এই ব্যথা বাড়তে থাকে। সেক্ষেত্রে অস্বস্তি অনুভূত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। এছাড়াও বলা হচ্ছে ভুল ব্রা নির্বাচনেও স্তনে ব্যথা হতে পারে।
স্তনের ফাইব্রোডেনোমা মহিলাদের স্তনের ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া যায়। এটি একধরনের টিউমার সংক্রান্ত সমস্যা মহিলাদের স্তনের। এই সমস্যা বেশি দেখতে পাওয়া যায় যুবতীদের মধ্যে এবং বেশি বয়সের মহিলাদের ক্ষেত্রে। (Reported By: Sarthak Pandit)দৈনন্দিন জীবন যাপন এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাসের ক্ষেত্রে এই সমস্যা তৈরি হতে পারে। মূলত এই সমস্যা পিসিওডি সমস্যার তৈরি করতে পারে মহিলাদের শরীরে। এছাড়াও চুল পড়ার সমস্যা, অনিয়ন্ত্রিত ঋতু স্রাব হওয়া, জ্বর হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে বুকে ব্যথাও দেখা যায়।তবে এই সমস্যা কোন কোন ক্ষেত্রে নিজে থেকেই কমে যায়। কিন্তু, কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। নাহলে এই সমস্যা শরীরের ক্ষেত্রে অন্য কোন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কোচবিহারের এক অভিজ্ঞ চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ সরকার জানান, “স্তনের ফাইব্রোডেনোমা হল একটি ক্ষতিহীন লাম্প বা টিউমার। মূলত এটি অল্পবয়সী মহিলাদের মধ্যে এবং বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই ধরনের টিউমার গ্রন্থি এবং তন্তু উভয় রকমের টিস্যুদ্বারা গঠিত। সাধারণত একটি রুটিন ম্যামোগ্রাম বা স্তন পরীক্ষার সময় ফাইব্রোডেনোমা ধরা পড়তে পারে।যদিও সাধারণত এই লাম্পগুলি ক্ষতিহীন হয়ে থাকে। তবুও কখনও কখনও এগুলি যথেষ্ট বড় হয়ে ব্যথা বা অস্বস্তির কারণ হতে পারে। বেশ কিছু ক্ষেত্র ফাইব্রোডেনোমা ব্রেস্ট ক্যান্সারে রূপান্তর হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এই কারণে, কোনও সন্দেহজনক লাম্প বা টিউমার একজন ডাক্তারের দ্বারা পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।কিছুক্ষেত্রে, টিউমারটি অপারেশন করার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনও দরকার পড়ে।” তিনি আরও জানান, “বেশ কয়েকটি আলাদা আলাদা ধরনের স্তন ফাইব্রোডেনোমা রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের ফাইব্রোডেনোমা উপসর্গ দেখা যায়।স্তনের ফাইব্রোডেনোমার সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গটি হল স্তনে টিউমার তৈরি হওয়া। এই টিউমার কিছু ক্ষেত্রে ব্যথাহীন, আবার কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা যুক্ত হতে পারে। এগুলি ত্বকের মধ্যে দিয়েই অনুভব করা যায়।সাধারণভাবে, ফাইব্রোডেনোমা খুব ধীর গতিতে বৃদ্ধি পায়। তাই কেউ তাৎক্ষণিকভাবে এটিকে অনভবু করতে পারেন না। তবে সঠিক ভাবে জীবন যাপন, দৈনন্দিন শরীর চর্চার মাধ্যমে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব অনেকটাই।তবে মহিলাদের নিজেদের স্তন নিয়ে আরও সচেতন হতে হবে। যদি বিশেষ কোন সমস্যা চোখে পড়ে তবে দ্রুত কোন অভিঞ্জ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।(Reported By: Sarthak Pandit)