পাঁচমিশালি Knowledge Story: আরশোলায় মারাত্মক ভয়? বলুন তো, কোথা থেকে এসেছে এই আরশোলা? কীভাবেই বা ছড়িয়ে পড়ল সারা বিশ্বে? জানলে চমকে যাবেন! Gallery June 2, 2024 Bangla Digital Desk আরশোলার নাম শুনলে অনেকেই ভয়ে আঁতকে ওঠেন৷ বিশ্বব্যাপী ৪০০০ টিরও বেশি প্রজাতির আরশোলা পাওয়া যায়। জার্মান আরশোলা সারা বিশ্বে পাওয়া সবচেয়ে সাধারণ আরশোলার প্রজাতি। গবেষকদের মতে, জার্মান আরশোলা প্রায় ২,১০০ বছর আগে এশিয়ান আরশোলা থেকে বিবর্তিত হয়েছিল। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, আরশোলা কোথা থেকে এসেছে এবং কীভাবে তারা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে? প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, আরশোলার উৎপত্তি ভারত বা মায়ানমারে। এরপরে, এটি গত ১০০০ বছরে পশ্চিমা দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। বেইলর কলেজ অফ মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক স্টিফেন রিচার্ডস, যিনি গবেষণায় জড়িত ছিলেন, তিনি বলেছেন যে গবেষণায় ১৭ টি দেশ এবং ছয়টি মহাদেশের ২৮০-টিরও বেশি আরশোলার প্রজাতির জেনেটিক্স বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে জানা যায় যে জার্মান আরশোলার উৎপত্তি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়। সারা বিশ্বে ৪০০০ টিরও বেশি প্রজাতির আরশোলা পাওয়া যায়। জার্মান আরশোলা সারা বিশ্বে পাওয়া সবচেয়ে সাধারণ আরশোলার প্রজাতি। গবেষকদের মতে, জার্মান আরশোলা প্রায় ২,১০০ বছর আগে এশিয়ান আরশোলা থেকে বিবর্তিত হয়েছিল। এর জিন বঙ্গোপসাগরে পাওয়া ব্লাটেলা আশাহীনাই প্রজাতির আরশোলার সঙ্গে মিলে যায়। গবেষকদের মতে, প্রায় ১২০০ বছর আগে জার্মান আরশোলা পশ্চিম এশিয়া হয়ে পশ্চিমের দেশগুলিতে পৌঁছেছিল। আরশোলা কীভাবে পশ্চিমা দেশগুলিতে পৌঁছেছে তা নিয়ে দুটি তত্ত্ব রয়েছে। প্রথম- ডাচ ও ব্রিটিশ বাণিজ্য পথ দিয়ে পশ্চিমে যাওয়া পণ্যের মাধ্যমে আরশোলা সেখানে পৌঁছেছিল। দ্বিতীয়- সৈন্যদের জন্য পশ্চিম এশিয়া থেকে পাঠানো রুটির চালানের মাধ্যমে আরশোলা পশ্চিমের দেশগুলোতে পৌঁছেছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে সময়ে জার্মান আরশোলা পশ্চিমা দেশগুলিতে পৌঁছেছিল তখন বাষ্প ইঞ্জিনের মতো জিনিসগুলি উদ্ভাবিত হয়েছিল। যা তাদের আরও ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে। জার্মান আরশোলা ১৭ শতকে ইউরোপে প্রথম দেখা গিয়েছিল। তখন থেকে এটা বিশ্বাস করা হতো যে তাদের উৎপত্তি শুধুমাত্র ইউরোপে।
পাঁচমিশালি Knowledge: কোন সে প্রাণী, ডাইনোসরের থেকেও পুরনো-শক্তিশালী, ঘুরে বেড়ায় ঘরময়! বেঁচে থাকবে পরমানু যুদ্ধ হলেও! বলুন তো, কোন প্রাণী? Gallery May 20, 2024 Bangla Digital Desk আরশোলা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন কীট। এদের মতো অদ্ভূত কীট সম্ভবত দ্বিতীয় আর নেই। এরা ডাইনোসরদের থেকেও দৃঢ়। পা দিয়ে মারালেও এরা বেঁচে যায়। এমন কোনও জিনিস নেই যা এদের খাদ্য নয়। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই এরা বিরাজমান। আরশোলার একটি পা-কে শক্ত করে ধরে রাখুন। দেখবেন আরশোলা তার পা-টিকে শরীর থেকে ছিন্ন করে পালিয়ে যাবে। কারণ সেইস্থানে নতুন পা আবার সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি এই বিচিত্র গুণ আরশোলাদের প্রদান করেছে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য। এরকম আরও অনেক বিচিত্র গুণের অধিকারী হল আরশোলা। নিজেকে বাঁচাবার এমন সব গুণ আরশোলার আছে যে পৃথিবীতে পরমাণু যুদ্ধ বাঁধলেও তারা বেঁচে থাকবে। আর সম্ভবত তাদের সঙ্গ দেবার জন্য ইঁদুররাও বেঁচে থাকবে। বিজ্ঞানীরা বলেন, আরশোলার ক্ষুদ্র শরীর বিশালাকায় ডাইনোসরদের তুলনায় ৩২ গুণ বেশি। মজবুত। এছাড়াও আরশোলারা নিজেদের শরীরকে আশ্চর্যজনকভাবে সংকুচিত করতে পারে। এইজন্য এরা সরু থেকে সরু ফাটলেও ঢুকে যেতে পারে, যেখানে কোনও শত্রুর পক্ষে ঢোকা অসম্ভব। সংকুচিত আরশোলাকে যদি আপনি জুতো দিয়ে মাড়িয়ে যান, তবুও সে প্রাণে বেঁচে যাবে। বিপদের সময় এক ধরনের আরশোলা সংকুচিত হয়ে এমন গোল হয়ে যায় যে দেখে মনে হয় কোনও গোলাকার বস্তু পড়ে রয়েছে। পৃথিবীর কোন স্থানে আরশোলারা নেই? শুধুমাত্র আন্টার্কটিকা ছাড়া সম্পূর্ণ পৃথিবীতে রাজত্ব করছে আরশোলারা। অবশ্য সমস্ত কিছুকে জমিয়ে দেওয়া আন্টার্কটিকায় আরশোলারা তিনদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। সর্বত্রই বসবাসের পিছনে এদের রহস্য হল যে এরা সব কিছুই হজম করতে সক্ষম। তাদের ‘মেনু কার্ডে” এমন সব জিনিস রয়েছে যেগুলির কথা আপনারা ভাবতেও পারবেন না। যেমন—সাবান, দেওয়ালে সাঁটানো কাগজ, রঙ, ডাকটিকিট লাগানো আঠা, কাপড়, পুস্তকের বাঁধানো মলাট, টিভির ভেতরের তার, কী নয়। এছাড়াও আমরা যা খাই সেগুলোও তাদের পছন্দের মধ্যে রয়েছে। নদী-নালায় বসবাসকারী আরশোলারা সেখান থেকেই তাদের আহারের ব্যবস্থা করে থাকে। আরশোলা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন কীট। প্রায় ৩৫ কোটি বছর ধরে তারা এই পৃথিবীর বুকে রয়েছে। এরা নিজের চোখে বিশালাকায় ডাইনোসরদের জন্ম নিতে, পৃথিবীতে রাজত্ব করতে আর তারপর লুপ্ত হতে দেখেছে। যখন আমাদের পূর্বপুরুষরা ওহাতে আশ্রয় নিয়েছিল, আরশোলারাও সেখানে উপস্থিত ছিল। বিজ্ঞানীদের মতে, আরশোলা আজকের হাজার হাজার কীটের পূর্বপুরুষ। আশ্চর্যের কথা হল, এই কোটি কোটি বছরেও আরশোলাদের মধ্যে নামমাত্র পরিবর্তন হয়েছে। শুধু এদের আকার কমেছে।