ঘূর্ণিঝড় মানেই আতঙ্ক। ‘দানা’ (Dana Cyclone Alert) আসছে, এ কথা সবাই জানেন। আতঙ্ক ছড়িয়ে গিয়েছে প্রায় গোটা দেশেই। তবে কবে, কোথায়, কতটা শক্তি নিয়ে ল্যান্ডফল— তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা অনেকেরই। এই প্রতিবেদনে আবহাওয়ার টাটকা খবর দেওয়ার পাশাপাশি রইল ‘দানা’-র বিশদ রিপোর্ট।
দানা ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা: বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ জন্ম দেবে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের। অবস্থান: বর্তমানে বকখালি ও পুরী থেকে প্রায় ৮০০ কিমি দূরে, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরের উপর সুস্পষ্ট নিম্নচাপ রূপে রয়েছে এই ঝড়। গতিবেগ এই মুহূর্তে ৪৫ কিলোমিটার/ঘণ্টা।
সিস্টেমটি 1001 millibars. হারে শক্তি বাড়াচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এটি গভীর (Depression) থেকে অতি গভীর নিম্নচাপে (Deep Depression)পরিণত হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় একটি অতি গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়(Cyclonic Storm)পরিণত হবে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় এটি ঘূর্ণিঝড় থেকে তীব্র ঘূর্ণিঝড় (Severe Cyclonic Storm)-এ পরিণত হতে চলেছে।
ঝড়ের গতিপথ ও ল্যান্ডফল সম্পর্কে বিশদে দেখে নেওয়া যাক এবার। প্রজেক্টেড ল্যান্ডফল: ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল। ঝড়ের গতি থাকবে ৮০-১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। বালেশ্বর ও কেন্দ্রপাড়ার মধ্যবর্তী ভীতরকণিকা ম্যানগ্রোভ অঞ্চলের উপর দিয়ে চক্ষু অঞ্চল প্রবেশ করতে পারে ‘দানা’।
পশ্চিমবঙ্গের প্রভাব কতটা পড়বে? ২৩ অক্টোবর (বুধবার) থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে। ২৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) এবং ২৫ অক্টোবর (শুক্রবার) সবচেয়ে খারাপ আবহাওয়া প্রত্যাশিত। ২৩ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা।
উত্তরবঙ্গে বর্তমানে সেরকম কোনও সতর্কতা না থাকলেও পরবর্তীকালে সতর্কতা জারি হতে পারে। বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট থাকতে পারে।
জেলাভিত্তিক সতর্কতা জারির সম্ভাবনা: লাল সতর্কতা (ভারী থেকে অত্যাধিক ভারী): দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম (70-200 mm or more ). 2. কমলা সতর্কতা (ভারী থেকে অতিভারী): উত্তর ২৪ পরগনা হাওড়া হুগলি কলকাতা পুরুলিয়া বাঁকুড়া(70-200 mm). 3. হলুদ সতর্কতা (ভারী থেকে অতিভারী): গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলোতে, যেমন মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া।
সম্ভাব্য ঝড়ের গতি – দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম: 50-100 kmph. 2. দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায়: 40-80 kmph.মৎস্যজীবীদের ২২ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
নিরাপত্তা জনিত সতর্কতা: ১। প্রতিনিয়ত আবহাওয়া আপডেট গুলো ফলো করুন। ২। সরকারিভাবে কোন নির্দেশ থাকলে সাইক্লোন সেন্টার কিংবা ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিন। ৩। প্রাথমিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুত করুন (শুকনো খাবার, পানীয় জল, সাধারণ ওষুধপত্র)। ৪। সতর্ক করা অঞ্চলগুলোতে ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন । ৫। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ডকুমেন্ট, টর্চ, মোবাইল সহ যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদে রাখুন।
হেল্প লাইন নাম্বার — জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (NDRF): 011-23438298. 2. রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল: 1070 (toll-free). 3. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন নম্বর ভয় কিংবা আতঙ্ক নয় সচেতন থাকুন সাবধান থাকুন নিরাপদে থাকুন। সরকারি অফিসিয়াল আবহাওয়া আপডেটে নজর রাখুন। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর ও আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের নির্দেশিকা মেনে চলুন।
আসছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। সেই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে পাশে থাকার আশ্বাস নবান্নের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ইতিমধ্যেই ঝড় নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টা ব্যাপী পরিষেবা চালু আছে নবান্নে। (Dana cyclone)
মমতার দাবি, সতর্ক করা হয়েছে মানুষকে। ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে ওড়িশার পুরী ও সাগর দ্বীপের মধ্যে ল্যান্ডফল হতে পারে। ১২০ কিলোমিটার গতিবেগ হতে পারে এই ঝড়ের।
বাংলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলী, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এই ৭ জেলায় খুব ভারী প্রভাব হবে ডানার। মমতা বলেন, “মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে মানা করা হয়েছে। উপকূলে মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনি (NDRF)। পর্যটকদের গতিবিধিও নজরে রাখা হচ্ছে। উপকূলে ফেরি সার্ভিস বন্ধ আছে।”
ডানা আবহে ২৩ থেকে ২৬ অক্টোবর সব স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে এই ৭ জেলায়। সাতজন অবজার্ভার হিসেবে সাতজন আইএএসকে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মমতা।
মমতা জানান, ২৪ তারিখে cabinet মিটিং আছে। যারা সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে আছেন তাঁদের এলাকা ছাড়তে বারণ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “পূর্ব মেদিনীপুরে কোনও মন্ত্রী নেই, তাই অবজার্ভার পাঠাচ্ছি। ঝাড়গ্রাম জেলার বীরবহা হাঁসদাকেও আসতে বারণ করছি। উলুবেড়িয়া সেকশনে পুলক রায়ের আসার দরকার নেই।”
এরপরই ডিভিসিকে উদ্দেশ্য করে মমতার নির্দেশ, তারা যাতে জল না ছাড়ে। গতকাল ক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্য সচিব। উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায়ও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
এর পরই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে মমতা বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দিয়েছে রাজ্য সেটা আপনারা দেখছেন। কোনও আর্থিক সাহায্য আমরা পাইনি। আমার প্রতিবেশী রাজ্য টাকা পায়। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা টাকা পাইনা।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কালীপুজোর আগে ভাসতে চলেছে উপকূলবর্তী এলাকা। এমনটাই সম্ভাবনা জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ এবং তার জেরে ঘূর্ণাবর্ত। ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন উপকূল তীরবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ঘূর্ণিঝড় ডানার আতঙ্কে ইতিমধ্যেই রাতের ঘুম উড়েছে সুন্দরবনের বাসিন্দাদের। কয়েক মাস আগে সুন্দরবনের উপরে হানা দিয়েছিল রেমাল নামক ঘূর্ণিঝড়।
কাকদ্বীপ মহকুমা বেশ কিছু এলাকায় বাঁধ ছাপিয়ে জল ঢুকে পড়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল একাধিক বাঁধেরও। এবার ফের আসন্ন দানা ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে সুন্দরবন-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের। ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলবর্তী এলাকার মানুষজনদের মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ডানার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।
ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা মাইকিং করে মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার জন্য সতর্কীকরণ বার্তা দেওয়া হচ্ছে। যে সকল মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে এসেছেন, তাঁদের অবিলম্বে বন্দরে নিরাপদে ফিরে আসার জন্য নির্দেশ জারি করেছে মৎস্য দফতর। এছাড়া সমুদ্র এবং নদী উত্তাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই জন্য ফেরিঘাটগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
ইতিমধ্যে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীদের এবং উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদে উঁচু জায়গায় কিংবা ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নেওয়ার কথা জানানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবির। খুলে দেওয়া হয়েছে এলাকার বেশ কিছু স্কুল। মজুত রাখা হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল এবং শুকনো খাবার। চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দলকে প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ডানার আতঙ্কে কাবু উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
সুমন সাহা
গতকালের সুস্পষ্ট নিম্নচাপ আজ সকালে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে। ৭৭০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাগরদ্বীপ থেকে। এটি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতি নিয়ে সাগরদ্বীপ থেকে পুরীর মধ্যে উপকূল ভাগে প্রবেশ করবে। প্রতীকী ছবি।
নিম্নচাপটি বর্তমানে কোথায় রয়েছে সেই নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী। নিম্নচাপটি পারাদ্বীপ (ওড়িশা) থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, সাগর দ্বীপের (পশ্চিমবঙ্গ) ৭৭০কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং খেপুপাড়া (বাংলাদেশ) থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে, জানিয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী। প্রতীকী ছবি।
এটি ২৩ অক্টোবরের মধ্যে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরে, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে থাকলে, এটি ২৪ তারিখ সকালের মধ্যে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতীকী ছবি।
২৪ অক্টোবরের রাত এবং ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে পুরী ও সাগরদ্বীপের মধ্যে উত্তর ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করার খুব সম্ভাবনা রয়েছে। এটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। দমকা হাওয়া-সহ ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১২০ কিমি। প্রতীকী ছবি।
তবে কোন রাজ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়ের। সেই কথাও জানিয়েছেন আইএমডির ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র। প্রতীকী ছবি।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে ওড়িশায়। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ওড়িশায়, সেই সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। প্রতীকী ছবি।
আজ, মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরের সুস্পষ্ট নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। এই নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ধেয়ে আসবে ওড়িশা-বাংলা উপকূলের দিকে। আগামিকাল, বুধবারের মধ্যে এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড় হলে নাম হবে ‘ডানা’। কাতারের দেওয়া এই নাম। Photo Courtesy: Windy.com
এই ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বুধবার থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি ল্যান্ডফল হতে পারে। ল্যান্ডফলের সময় এটির রূপ থাকবে সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম; অর্থাৎ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এখনও পর্যন্ত আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা যতটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছেন ওড়িশা উপকূলের পারাদ্বীপ এবং বালাসোরের মাঝে ভদ্রকের কাছাকাছি কোথাও ল্যান্ডফল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।
মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কবার্তা রয়েছে আবহাওয়া দফতরের। ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে এবং সমুদ্র উত্তাল থাকবে। মঙ্গলবারের মধ্যে মৎস্যজীবীদের উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে সমুদ্রে যেতে মানা মৎস্যজীবীদের। বৃহস্পতিবার উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।
এর প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে উপকূলের জেলাগুলিতে। বুধবার থেকে শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি কোথাও কোথাও প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সঙ্গে বইবে দমকা ঝোড়ো হাওয়া। বুধবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। দু-এক জায়গায় প্রবল বৃষ্টির সতর্কতা।
কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনাতে ভারী বৃষ্টি থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলা এবং উত্তরবঙ্গেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। দুই-এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে।
কলকাতায় আজ, মঙ্গলবার দিনভর শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা কার্যত থাকবে না। মঙ্গলবার বেলার দিকে আবহাওয়ার পরিবর্তন। জলীয় বাষ্প বাড়বে এবং আংশিক মেঘলা আকাশ। বুধবার থেকে শুক্রবার কলকাতাতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হতে পারে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক পশলা ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
আজ, মঙ্গলবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গতকাল, সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের তুলনায় যা ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৬১ থেকে ৯৪ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা থাকবে ২৫ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
ডানায় তছনছ হতে পারে পুরী৷ এমনই সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর৷ আগামী ২৪ অক্টোবর রাতে অথবা ২৫ তারিখ ভোরে পুরীতে আছড়ে পড়তে পারে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ডানা৷ সেকথা মাথায় রেখেই পর্যটকদের নিরাপত্তায় বড় সিদ্ধান্ত নিল ওড়িশা প্রশাসন৷ ওড়িশা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের পুরী ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে৷ আগামী ২৫ তারিখ পর্যন্ত পর্যটকরা যাতে পুরীতে না আসেন, সেই অনুরোধও করেছে ওড়িশা প্রশাসন৷ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাজি সোমবার ঘূর্ণিঝড় ডানার মোকাবিলায় প্রস্তুতি বৈঠক করেন৷ সেখানেই পুরীতে পর্যটকদের নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
সোমবার বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে, তার সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলা ও ওড়িশার উপকূলে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, এই নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসবে ওড়িশা-বাংলা উপকূলের দিকে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, মঙ্গলবার সকালে নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর পর শক্তি বৃদ্ধি করে বুধবার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে সেটি। ঘূর্ণিঝড় হলে নাম হবে ‘ডানা’।
ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর ‘ডানা’ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর সকালেই বাংলা ও ওড়িশার উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে ঘূর্ণিঝড়।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ২৪ অক্টোবর রাত এবং ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে উত্তর ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে ‘ডানা’। বাংলার সাগরদ্বীপ এবং ওড়িশার পুরীর মধ্যবর্তী কোনও জায়গায় ভূভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়।
‘ডানা’র প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন উপকূলের জেলাগুলিতে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে বুধবার ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম এবং উত্তর ২৪ পরগনাতে ভারী বৃষ্টি এবং অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে।
শুক্রবার দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা ও বাঁকুড়ার দুই-এক জায়গায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই আট জেলাতেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব লক্ষ করা যাবে।
বুধবার থেকে সমুদ্রে যেতে মানা মৎস্যজীবীদের। বৃহস্পতিবার উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।
Posts navigation
Just another WordPress site