উত্তর ২৪ পরগনা: গত কয়েক বছর ধরেই অবলা বেশ কিছু সারমেয়র বাসস্থান হয়ে উঠেছিল সল্টলেক এফবি ব্লকের উল্টোদিকে অবস্থিত সেন্ট্রাল পার্ক, বনবিতান পার্ক। প্রাকৃতিক নিয়মে সেখানে ওই কুকুরদের বংশবিস্তারও ঘটে। বেশ কিছু সদ্যোজাত কুকুরছানা আছে ওই জায়গায়। কিন্তু হঠাৎই পরিস্থিতি বদলে গেছে। ওখানে থাকা প্রায় ৪০ টি কুকুর চরম খাদ্য কষ্টে বাঁচছে।
আরও পড়ুন: দেওয়াল লিখন মুছে দিচ্ছে কমিশন! ভোটের শুরুতেই বিতর্ক কোচবিহারে
২০২৩ এর সেপ্টেম্বর এই পার্কের দায়িত্বে আসা নতুন রেঞ্জার প্রণব দাসের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তির কারণেই এমন অমানবিক পরিস্থিতিতে তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকার পশুপ্রেমীরা দাবি করেছেন, গত কয়েক মাসে এখানে খেতে না পেয়ে ১৩ থেকে ১৫ টি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। আগে পার্কে আসা মানুষজন খেতে দিত এই পথ কুকুরদের। ফলে তাদের খাওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু বন বিভাগের তরফ থেকে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই কুকুরদের খাবার দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়, তার ফলেই খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে এই পার্কে গেলে দেখা যাবে শীর্ণকায় চেহারায় ঘুরে বেড়াচ্ছে কুকুরগুলো দেখলেই বোঝা যায় তারা ভাল করে খেতে পায় না। সদ্যোজাত কুকুর ছানাগুলো তো না খেতে পেয়ে যেকোনও মুহূর্তে মারা যাবে সেটা সাদা চোখে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। এমন অমানবিক দৃশ্য দেখে ঠিক থাকতে না পেরে এগিয়ে আসেন পশুপ্রেমী অনির্বাণ মিত্র। কীভাবে এই পথ কুকুরদের তিনি বাঁচাবেন সেই চিন্তা করে লুকিয়ে খাবার নিয়ে পার্কের ভেতরে ঢুকে তাদের মুখে আহার তুলে দেওয়ারও চেষ্টা করেন। এদিকে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েও পার্কের ভেতর থেকে কিছুতেই কুকুরগুলোকে বাইরে বের করা সম্ভব হয়নি। কষ্ট সহ্য করেই অবলা প্রাণীগুলি রয়ে গিয়েছে সেখানে। এই অবস্থায় এমন বিজ্ঞপ্তি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
পশুপ্রেমী অনির্বাণ মিত্র ও কলকাতার এক ব্লগার তথা পশু প্রেমী সুবর্ণ গোস্বামী বিষয়টিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পশুপ্রেমীরা। পার্কের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের এই সিদ্ধান্তকে অমানবিক বলে চিহ্নিত করেন তাঁরা। বিষয়টি জানানো হয় মানেকা গান্ধি সহ বন দফতরের কাছে। বিষয়টি জেনে এগিয়ে আসেন আইনজীবী সোহিনী অধিকারীও। পার্কের তরফ থেকে জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণ বেআইনি ও সংবিধান বিরোধী বলে আখ্যা দেন তিনি। এদিকে বন দফতরের তরফ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
রুদ্রনারায়ণ রায়