Tag Archives: Satyajit Ray

Nayan Rahasya Movie Review: দেখো রে নয়ন মেলে অভিনবের অভিনয়! কিন্তু কতটা জমল ফেলু মিত্তিরের মগজাস্ত্রের অভিযান?

শুধু সত্যজিৎপুত্রকেই নয়, ফেলুদা নিয়ে কি কখনও পাঠকদের অভিমানী অনুযোগ শুনতে হয়েছিল স্বয়ং স্রষ্টাকেও? তাই কি ১৯৯১-এর জানুয়ারিতে প্রকাশিত উপন্যাস ‘নয়ন রহস্য’ শুরুই হয়েছে মনমরা ফেলুদাকে দিয়ে? ধুরন্ধর কোনও প্রতিপক্ষ বা কিনারা না হওয়া চন্দননগরের মামলা নয়, বরং প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের বিমর্ষ হওয়ার কারণ ছিল পাঠকদের ছাপ্পান্ন চিঠি৷ যেখানে অনুযোগ ছিল ফেলুদার কাহিনী আর আগের মতো জমছে না৷ জটায়ুও আর সেরকম হাসাতে পারছে না৷ গল্পে ফেলুর বয়ানে পাঠকদের উত্তর দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়৷

কেন থ্রি মাস্কেটিয়ার্সের অভিযান আগের মতো জমছে না, তার ব্যাখ্যা লেখক কী দিয়েছিলেন, সেটা নয়ন রহস্য পড়লেই জানা যাবে৷ তবে যেটা শিক্ষণীয়, সেটা হল সত্যজিৎ রায় লিখেছিলেন পাঠকদের মতামত উপেক্ষা তো দূর অস্ত্, বরং গুরুত্ব দিতেই হবে৷ কারণ তাঁরাই এতদিন ফেলুর পাশে ছিলেন৷ আজ টেলিভিশন-ইউটিউব-মাল্টিপ্লেক্স-ওটিটি সব ফরম্যাট মিলিয়ে সেই পাঠকরাই মূলত ফেলুদার দর্শক৷ সেই পাঠক-দর্শকরা সহমত যে ‘নয়ন রহস্য’ ফেলু মিত্তিরের স্বর্ণযুগের অভিযান নয়৷ জীবনের পড়ন্ত বেলায় লেখা এই উপন্যাসে সত্যজিৎ রায়ই এনেছেন ‘অকালবার্ধক্য’ বিশেষণ৷

সেই অভিযান এখন বড় পর্দায় আনলে হয় যুগের হাওয়ার সঙ্গে যুতসই করতে হবে, নয়তো দর্শককে পিছিয়ে নিয়ে যেতে হবে সিকি দশক আগে৷ এর মধ্যে প্রথমটা করতে যে মুনসিয়ানা দরকার, তার সুখস্মৃতি বাঙালিকে এখনও আচ্ছন্ন করে রেখেছে ‘সোনার কেল্লা’ এবং ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ দেখার পর থেকে৷ আইকনিক এই দুই ছবির সঙ্গে তুলনা করা ছেড়েই দিয়েছেন দর্শক৷ এখন সাম্প্রতিকতম ফেলুদার ছবির তুলনা হয় তার আগেরটার সঙ্গে৷ সেদিক থেকে পরিচালক সন্দীপ রায়ের ‘নয়ন রহস্য’ ভাল হয়েছে ‘হত্যাপুরী’-র তুলনায়৷

উত্তরণের অন্যতম কারণ নয়ন বা জ্যোতিষ্কের ভূমিকায় শিশুশিল্পী অভিনব বড়ুয়ার নিষ্পাপ, গভীর অভিনয়৷ ‘হত্যাপুরী’ ছবিতে ছোট্ট ভূমিকায় অভিনয় করা এই খুদে ‘নয়ন রহস্য’-এ মনে করিয়ে দেয় ‘সোনার কেল্লা’-র কুশল চক্রবর্তী বা ‘তারে জমিন পর’-এর দর্শিল সাফারিকে৷ এই দুই ছবির মতো সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের এক বালকের চলার পথে বিপত্তিই ছবির ভরকেন্দ্র৷ কালীঘাটের নিকুঞ্জবিহারী লেনের ছাপোষা নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলে নয়ন সরকারের চোখের সামনে ভেসে বেড়ায় ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা৷ সংখ্যাই হবে উত্তর, এমন কোনও প্রশ্ন তাকে করলেই পাওয়া যায় অব্যর্থ উত্তর৷ কারণ তখন সেই উত্তরের নির্দিষ্ট সংখ্যাগুলি পাশাপাশি বসে যায় তার চোখের সামনে৷ বাকি সংখ্যারা ভ্যানিশ হয়ে যায়৷ বাকিরা কেউ কিছুই টের পায় না৷

চোখ বন্ধ করে উত্তর দেওয়ার দৃশ্যগুলিতে অনুভবের অভিব্যক্তি অনবদ্য৷ সে সময় তাকে ঘিরে বিভিন্ন সংখ্যার নাচানাচি তুলে ধরাই যেত গ্রাফিক্সে৷ কিন্তু সে সব কিছু করাই হয়নি৷ ছবিতে স্মার্টফোন আছে, সোশ্যাল মিডিয়া নেই৷ কোনও শিশুর এরকম বিস্ময়ক্ষমতা আজকের দিনে থাকলে চোখের নিমেষে ভাইরাল হবে সে৷ সেই প্রসঙ্গ দেখানোই হল না৷ ম্যাজিশিয়ান সুনীল তরফদারের একটা শো থেকেই নয়ন চলে এল শিরোনামে৷ এবং একাধিক দুষ্টু লোকের নজরে৷

আরও পড়ুন : জীবনের সিলেবাসে যাঁরা কেমিস্ট্রিতে কাঁচা, তাঁদের কেমিস্ট্রিতেই বাঁচা

নয়নকে নিয়ে মাদ্রাজে (আজকের চেন্নাই) ম্যাজিক শো করতে যাওয়া, তার পর নয়নের অপহরণ, ফেলুদা কী করে তাকে উদ্ধার করবে, সেই পর্ব ফেলুভক্তদের বহুপঠিত৷ সেই বই-ই যদি পাতার পর পাতা চিত্রায়িত হয়, তাহলে তা দর্শকদের মনঃপীড়ার কারণ হয় বৈ কী! ‘হত্যাপুরী’-র তুলনায় ফেলুদার ভূমিকায় ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তর আড়ষ্টতা কমেছে ঠিকই৷ কিন্তু সংলাপ জড়তায় জড়ানো৷ যতই প্যান ইন্ডিয়া মুক্তি হোক না কেন, দর্শকদের মনে হবেই যে বাংলা বলায় অভিনেতার দুর্বলতা আড়াল করতেই হয়তো চিত্রনাট্যে হিন্দি ও ইংরেজির দাপট৷ সময়ে সঙ্গে সঙ্গে ফেলুদা পাল্টাবে তো বটেই৷ কিন্তু তার চোখে যদি মগজাস্ত্রের ঝিলিক না থাকে, কথায় যদি রসবোধ না উঁকি দেয়, তাহলে তাঁকে নিয়ে দর্শক হাইলি সাসপিশাস হবেই৷

ফেলু মিত্তির ইন্দ্রনীলের মতোই তোপসের ভূমিকায় আয়ুষ দাস এবং জটায়ুর চরিত্রে অভিজিৎ গুহ আগের তুলনায় কিছুটা ছন্দোবদ্ধ হয়েছেন ঠিকই৷ কিন্তু প্রশ্ন হল পাঞ্জাবীতে কলম গোঁজা থাকলেই কি লালমোহন গাঙ্গুলি হওয়া যায়? ছবিতে জটায়ুর পাঞ্জাবী, জামায় সব সময় কলম গোঁজা৷ কিন্তু নোটবুকে কাউকে কাল্টিভেট করার জন্য একবারও তিনি সেটা ব্যবহার করেন না৷ ছবির বাকি কুশীলবদের মধ্যে মোহন আগাশে, দেবনাথ চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, ভরত কৌল যথাযথ৷ অতিনাটকীয় লেগেছে সুপ্রিয় দত্তকে৷ ছবিতে চরিত্র অনুযায়ী তাঁর মেকআপও আরও ভাল হতে পারত৷ আরও বেশি থাকতে পারত নস্টালজিয়ায় ডুব দেওয়া থিম মিউজিক৷ গাওয়াঙ্গিকে করা যেত চরম ভীতিজনক৷ যবনিকা পতন অবিকল বইয়ের লাইনের মতো না হলেও ক্ষতি ছিল না৷

ছোটদের মধ্যে অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার বিচ্ছুরণ বার বার উঠে এসেছে সত্যজিতের কলমে৷ ‘সোনার কেল্লা’, ‘প্রোফেসর শঙ্কু ও খোকা’, ‘নয়ন রহস্য’- সব গল্পেই বিস্ময়কর সেই ক্ষমতা হারিয়ে গিয়ে ফিরে এসেছে সুস্থ স্বাভাবিক শৈশব৷ বিশেষ করে ‘সোনার কেল্লা’ এবং ‘নয়ন রহস্য’ তো পটভূমির দিক থেকে বেশ কাছাকাছি৷ দুটো গল্পেই দুষ্টু লোক এবং সম্মোহন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ অনাবিল সেই ম্যাজিকে সম্মোহিত হয়ে থাকতেই ভালবাসেন ফেলুঅনুরাগীরা৷ অতিরিক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা, কাঁটাছেঁড়া ছাড়া রায়বাড়ির ছাপাখানার, সন্দেশের সাদাকালো পাতার, পুজোবার্ষিকীর গন্ধমাখা নিটোল প্রদোষচন্দ্র মিত্র বার বার ফিরে আসুন তপেশরঞ্জন এবং লালমোহনবাবুর সঙ্গে ব্রোমান্স নিয়ে৷ তবে আর্ডিনারি নয়, ‘এক্সট্রা আর্ডিনারি’ ছবি হয়েই৷

AI গুপি বাঘা! ভূতের রাজা দিল বরের বিশেষ প্রয়াস, শীঘ্রই আসছে সোশ্যাল মিডিয়ায়

নতুন করে সামনে এল 'গুপি গাইন বাঘা বাইন'-এর ছবি গান৷ এই মিউজিক ভিডিয়োর উদ্যোক্তা 'ভূতের রাজা দিল বর'-এর রেস্তোরাঁ ।নতুন করে গানটি গেয়েছেন খরাজ মুখোপাধ্যায় । সম্পূর্ণ নতুনভাবে লেখা গানের সঙ্গে চরিত্রগুলোকে এআই ফরম্যাটে দেখানো হয়েছে।
নতুন করে সামনে এল ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’-এর ছবি গান৷ এই মিউজিক ভিডিয়োর উদ্যোক্তা ‘ভূতের রাজা দিল বর’-এর রেস্তোরাঁ ।নতুন করে গানটি গেয়েছেন খরাজ মুখোপাধ্যায় । সম্পূর্ণ নতুনভাবে লেখা গানের সঙ্গে চরিত্রগুলোকে এআই ফরম্যাটে দেখানো হয়েছে।
কয়েকদিন আগেই গিয়েছে সত্যজিৎ রায়ের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত হল। এই দিনটিকেই 'ভূতের রাজা দিল বর' টিম নিয়ে আসেন 'এআই গুপি বাঘা'। যদিও এখনও সামাজিক মাধ্যমে তা আসেনি কিছু কাজ বাকি থাকায় । সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে রায় পরিবারকে এই উপহার দিলেন 'ভূতের রাজা দিল বর'-এর কর্ণধার রাজীব পাল । পাশাপাশি দুর্গাপুরে বড় পর্দায় প্রদর্শিত হয় এই ভিডিয়োটি ।
কয়েকদিন আগেই গিয়েছে সত্যজিৎ রায়ের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত হল। এই দিনটিকেই ‘ভূতের রাজা দিল বর’ টিম নিয়ে আসেন ‘এআই গুপি বাঘা’। যদিও এখনও সামাজিক মাধ্যমে তা আসেনি কিছু কাজ বাকি থাকায় । সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে রায় পরিবারকে এই উপহার দিলেন ‘ভূতের রাজা দিল বর’-এর কর্ণধার রাজীব পাল । পাশাপাশি দুর্গাপুরে বড় পর্দায় প্রদর্শিত হয় এই ভিডিয়োটি ।
'এআই গুপি বাঘা'-তে গান গেয়ে বেশ খুশি খরাজ মুখোপাধ্যায়। কালজয়ী সুরের গান 'ভূতের রাজা দিল বর' সকলের মনে। এবারও খুবই জনপ্রিয় হয়েছে গানটি৷ এই গানটি গাইতে পেরে শুধু খুশি নন খরাজ, তাঁর কাছে বড় প্রাপ্তিও বটে, নিজেই সকথা বলেছেন তিনি৷
‘এআই গুপি বাঘা’-তে গান গেয়ে বেশ খুশি খরাজ মুখোপাধ্যায়। কালজয়ী সুরের গান ‘ভূতের রাজা দিল বর’ সকলের মনে। এবারও খুবই জনপ্রিয় হয়েছে গানটি৷ এই গানটি গাইতে পেরে শুধু খুশি নন খরাজ, তাঁর কাছে বড় প্রাপ্তিও বটে, নিজেই সকথা বলেছেন তিনি৷
ভূতের রাজা দিল বর রেস্তোরাঁর কর্ণধার রাজীব পাল অত্যন্ত সত্যজিৎ অনুরাগী৷ তাঁর নিজের তৈরি রেস্তোরাঁর নামই তাই তিনি সত্যজিতের সৃষ্টিকে কেন্দ্র করেই রেখেছেন৷ সেখানে এমনকী 'হাতে হাতে দাও তালি' বললেই খাবার এসে যায় টেবিলে । জ্যান্ত ভূতের রাজা তদারকি করেন অতিথিদের!
ভূতের রাজা দিল বর রেস্তোরাঁর কর্ণধার রাজীব পাল অত্যন্ত সত্যজিৎ অনুরাগী৷ তাঁর নিজের তৈরি রেস্তোরাঁর নামই তাই তিনি সত্যজিতের সৃষ্টিকে কেন্দ্র করেই রেখেছেন৷ সেখানে এমনকী ‘হাতে হাতে দাও তালি’ বললেই খাবার এসে যায় টেবিলে । জ্যান্ত ভূতের রাজা তদারকি করেন অতিথিদের!
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখায় সত্যজিৎ রায়ের অমরসৃষ্টি 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' সিনেমা৷ এবছর বরেণ্য পরিচালকের জন্মবর্ষে কিছুটা বিশেষ কর্মকাণ্ড করার উদ্যেশেই তিনি তৈরি করেছেন এআই গুপি গাইন বাঘা বাইনের প্রতিটি চরিত্র৷ আর কয়েকদিনের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থিত হবে এই নতুন জামানার এআই গুপি বাঘা৷
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখায় সত্যজিৎ রায়ের অমরসৃষ্টি ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমা৷ এবছর বরেণ্য পরিচালকের জন্মবর্ষে কিছুটা বিশেষ কর্মকাণ্ড করার উদ্যেশেই তিনি তৈরি করেছেন এআই গুপি গাইন বাঘা বাইনের প্রতিটি চরিত্র৷ আর কয়েকদিনের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থিত হবে এই নতুন জামানার এআই গুপি বাঘা৷

Satyajit Ray Birth Anniversary :‘ফেলুদাকে চিনি না, আমি ব্যোমকেশ পড়ি, স্বপনকুমার আমার খুব ভাল লাগে!’ ৫০ বছর আগে সত্যজিৎকে বলেছিলেন হবু তোপসে

কলকাতা : ‘‘স্মার্ট ছেলেরা এসব পাউডার টাউডার মাখে নাকি!’’ এই এককথায় তোপসের ইচ্ছেয় জল ঢেলেছিলেন দীর্ঘদেহী স্রষ্টা৷ ফলে এক বিন্দু মেকআপ না করেই তপেশরঞ্জন মিত্র হয়ে জীবনে প্রথম বার পর্দায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন পাঠভবন স্কুলের প্রাক্তনী৷ ‘সোনার কেল্লা’ ছবি ঘিরে এরকমই শতেক স্মৃতিচারণায় ১ মে ভরে উঠেছিল নন্দন প্রেক্ষাগৃহ৷ একটু আগেই বাইরে তখন বৈশাখের তপ্ত দুপুর৷ আর্দ্রতা, ঘাম, তাপপ্রবাহ সবকিছুকে ছাপিয়ে অপেক্ষা করে আছে সর্পিল লাইন৷ সেই ভিড়ে নানাবয়সিদের মধ্যে চমকে দিচ্ছে আজকের প্রজন্মের উপস্থিতিও৷ সকলে অপেক্ষা করে ছিলেন ‘সোনার কেল্লা’-র সংরক্ষিত সংস্করণ বা রেস্টোর্ড ভার্সন প্রথম বার বড় পর্দায় দেখবেন বলে৷ ৫০ বছর আগে মুক্তি পাওয়া এই ছবি শুধু স্মৃতি নয়৷ বরং ফেলুভক্ত বাঙালির দিনযাপনের অঙ্গ৷ এই ছবির প্রতিটা মুহূর্ত, সংলাপ জড়িয়ে গিয়েছে বঙ্গজদের শ্বাস প্রশ্বাসে৷ সেই কথাই আরও একবার ধরা পড়ল পরিপূর্ণ নন্দনে৷

‘সোনার কেল্লা’ ছবির ৫০ বছর উপলক্ষে সত্যজিৎ রায়ের জন্মবার্ষিকীর আগের দুপুরে ‘সোসাইটি ফর দ্য প্রিজারভেশন অব সত্যজিৎ রায় আর্কাইভস’-এর উদ্যোগে নন্দনে আয়োজিত হয়েছিল আলোচনাসভার৷ যোগ দিয়েছিলেন অশোক মুখোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু বাগচী এবং কুশল চক্রবর্তী৷ সেখানে আইকনিক ছবির এই কয়েকটি মুখ নিজেরাও ফিরে গেলেন অর্ধশতক আগের জয়লসমীরে৷ সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন দর্শকদেরও৷ আলোচনার সূত্রধর তথা সঞ্চালক ছিলেন পরিচালক সন্দীপ রায়৷ সত্যজিৎপুত্র নিজেও ছিলেন এই ছবির ইউনিটের অন্যতম সদস্য৷ সঞ্চালক প্রথমেই মাইক্রোফোন দিলেন সেই ‘সাংবাদিক’-এর হাতে৷ ‘মুকুল ধর কি জাতিস্মর’ শিরোনামে যাঁর প্রতিবেদন দেখে গুপ্তধনের খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন অমিয়নাথ বর্মন এবং মন্দার বোস৷

ছবির সেই আংটি পরা সাংবাদিক অশোক মুখোপাধ্যায় আজ প্রবীণ৷ জানালেন তাঁর মঞ্চাভিনয় দেখে ভাল লেগেছিল সত্যজিৎ রায়ের৷ সাতের দশকে তাঁর বাড়িতে টেলিফোন ছিল না৷ পড়শির বাড়িতে ফোন করেছিলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়৷ জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁর ছবিতে ছোট ভূমিকায় অভিনয় করতে অশোক রাজি কিনা৷ শুনে মঞ্চের দাপুটে অভিনেতা অশোক বলেছিলেন, রাজি হবেন না মানে! সত্যজিৎ রায়ের ছবির শ্যুটিঙে শুধু দাঁড়িয়ে থেকে দেখার অনুমতি পেলেও তিনি আগ্রহী৷

তিন দিনের বদলে দু’দিনেই হয়ে গিয়েছিল অশোকের কাজ৷ তাঁর সঙ্গে একই দৃশ্যে ছিলেন প্রখ্যাত আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষ৷ ছবিতেও তিনি ছিলেন চিত্রগ্রাহকের ভূমিকাতেই৷ তবে তাঁর আক্ষেপ ছিল যে ছবিতে তিনি সংলাপহীন৷ পরিচালককে বলেছিলেন, ‘মানিকদা, আপনি সব সংলাপ তো অশোককেই দিয়ে দিলেন৷’ সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয়েছিল নতুন সংলাপ৷ আলোকচিত্রী বলেছিলেন, ‘একটু হাসো তো খোকা৷ হাসো৷ হাসলে ছবি ভাল হয়৷’ উত্তরে মুকুল বলেছিল ‘আমার হাসি পাচ্ছে না৷’ কিংবদন্তির ইম্প্রোভাইজেশনও আজ মাইলফলক৷

ছবিতে আগাগোড়া গোমড়া মুকুলের মুখে হাসি ফুটেছিল শেষ দৃশ্যে৷ যখন গাড়িচালকের পাঁজাকোলাবন্দি হয়ে সোনার কেল্লা ছাড়ছেন নকল ডাক্তার হাজরা৷ ফেলুদা, তোপসেদার সঙ্গে কলকাতায় নিজের বাড়িতে ফিরেছিল মুকুল নিজেও৷ সেই যে পূর্বজন্মের ফেলে আসা ভাঙা বাড়ি ছেড়েছিল মুকুল, গিয়েছিল চার দশক পর, ২০১৬ সালে৷ মঞ্চে বসে অতীতে ফিরেছিলেন অভিনেতা কুশল চক্রবর্তী৷ বললেন দ্বিতীয় বার সোনার কেল্লায় গিয়ে অভূতপূর্ব অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন৷ দেখেছিলেন তাঁর নামে দোকান৷ যেখানে থরে থরে সাজানো আছে ‘সোনার পাথরবাটি’৷ জয়সলমীরের স্থানীয়রা তাঁকে বলেছিলেন, সত্যজিতের ছবির আগে রাজস্থানের বাকি অংশের লোকেরা ওই জেলাকে বলত ‘যাঃ শালে মর!’ অর্থাৎ এতটাই বন্ধুর, প্রতিকূল ছিল সীমান্তবর্তী ওই এলাকা, যে ওখানে গেলে মৃত্যু অবধারিত৷ সেই শহরকে পর্যটন মানচিত্রে প্রথমসারিতে বসিয়েছেন সত্যজিৎ৷ তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ জয়সলমীরবাসীরা কুশলকে বলেছিলেন, ‘‘মাথার উপরে ভগবান৷ পায়ের নীচে বালি৷ আর আমাদের পাশে সত্যজিৎ৷ উনি আমাদের ভাস্কোদাগামা৷ আমাদের আবিষ্কার করে উনিই পরিচিতি দিয়েছেন৷’’

নন্দনে ‘সোনার কেল্লা’-র কুশীলবরা

এহেন ফেলুস্রষ্টাকে কিনা মুখের উপর সদ্য গোঁফের রেখা ওঠা কিশোর সিদ্ধার্থ বলেছিলেন ‘‘আমি ব্যোমকেশ পড়ি৷ খুব একটা বুঝি না৷ স্বপনকুমার খুব ভাল লাগে৷ তবে কে ফেলুদা, আমি চিনি না৷’’ স্কুলের শিক্ষক পার্থ বসুর বাড়িতে বাংলা ব্যাকরণ বুঝতে গিয়েছিলেন সাড়ে তেরো বছরের সিদ্ধার্থ৷ সেখান থেকে মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে সোজা বিশপ লেফ্রয় রোডের আমোঘ বাড়িতে৷ তাঁর স্বপনকুমারপ্রীতি জেনে একটুও রেগে যাননি সত্যজিৎ৷ বরং একটু একটু করে নানা কথায় আগ্রহী করে তুলেছিলেন অভিনয়ে৷ যদিও ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে প্রথমেই নাকচ করেছিলেন স্কুলপড়ুয়া৷ জানতেন বাবা মা’র অনুমতি মিলবে না৷ কিন্তু সত্যজিতের ব্যক্তিত্বের কাছে শেষ পর্যন্ত নতজানু হয়েছিল অভিভাবকের আপত্তি৷ ফেলুবেশী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাওড়ার ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ৭ নম্বর আপ তুফান এক্সপ্রেসে তোপসে হয়ে বসেছিলেন সিদ্ধার্থ৷ ফেলুর মতো মাস্টার যেমন তোপসে পেল না৷ ঠিক তেমনই, অভিনয় থেকে বহুদূরে নিজের পেশায় লব্ধপ্রতিষ্ঠ হলেও নামী রেস্তরাঁর কর্ণধার সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বঙ্গহৃদয়ে বিরাজ করে গেলেন প্রদোষচন্দ্র মিত্রের স্যাটেলাইট হয়েই৷

সন্দীপ রায় এবং সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়

পাঠভবনের প্রাক্তন শিক্ষক পার্থ বসুর সূত্রে দ্বিতীয় মুকুল শান্তনু বাগচীকেও খুঁজে পেয়েছিলেন সত্যজিৎ৷ তাঁর সঙ্গে প্রথম আলাপের দৃশ্য আজও ভাসে সন্দীপের চোখে৷ বললেন তাঁরা শান্তনুর বাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন৷ পর্দার পিছন থেকে স্কিড করে এসে ঘরে ঢুকেছিল সেই খুদে৷ এই আবির্ভাবেই মুগ্ধ হন সত্যজিৎ৷ পরে ছবিতেও পর্দার পিছন থেকেই উকিল ঠাকুরদা শিবরতন মুখুজ্যের বৈঠকখানায় বসে থাকা ফেলুদাদের সামনে আসে ‘বেলুচিস্তান থেকে আগত’দের হাতে অপহৃত হওয়া দ্বিতীয় মুকুল৷ এয়ারগান হাতে তার বলা ‘মিসটেক, মিসটেক’ আজ অমর সংলাপ৷ ঘটনাচক্রে তিনি নিজেও আজ পরিচালক৷ বললেন ছোটদের সঙ্গে সত্যজিৎ মিশতেন বন্ধুর মতো৷ তাই পর্দায় তাঁর শিশুচরিত্ররা এত প্রাণবন্ত, এত সাবলীল৷ তাঁকে একবাক্যে সমর্থন করলেন মঞ্চে বসা সিদ্ধার্থ এবং কুশলও৷

ঠিক একইভাবে বন্ধু হয়ে ছ’ বছরের কুশলকে সত্যজিৎ বলেছিলেন পছন্দের থিয়েটার থেকে কিছু অভিনয় করে দেখাতে৷ ছোট্ট কুশল নাটক দেখতে ভালবাসতেন৷ বাড়িতে দিব্যি নকলও করতেন তাবড় অভিনেতাদের৷ ঠিক সেভাবেই অতশত কিছু না ভেবে সত্যজিতের বৈঠকখানায় তিনি অভিনয় করে দেখিয়েছিলেন ‘তিন পয়সার পালা’ থেকে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ সঙ্গে তাঁর হাতের আঁকাও মুগ্ধ করেছিল পরিচালককে৷ ছবিতেও নানা দৃশ্যে মুকুলকে ছবি আঁকতে দেখা গিয়েছে৷ পূর্বজন্মের টুকরো স্মৃতির ঘোরে ভেসে আসা রতনদের বাড়ি, গিরিধারীর বাড়ি, তাদের হোলি খেলার জায়গা সে ধরে রাখত আঁকার খাতাতেই৷

 

নন্দনে সোনার কেল্লা-র সংরক্ষিত সংস্করণ প্রদর্শনের আগে তিন চার মিনিটের কিছু ফুটেজ দেখানো হয় স্ক্রিনে৷ শ্যুটিঙের সময় সেই মুহূর্তগুলি ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন সন্দীপ রায়৷ অমূল্য সেই ছবিতে শ্যুটিঙে মগ্ন সত্যজিৎ৷ পরম যত্নে তৈরি করছেন, আগলে রাখছেন আমাদের ছোটবেলা৷ যাতে আমরাও মুকুলের মতো কোনওদিন বড় না হই৷ বড় না হওয়া সেই দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালিতে ভেসে গেল পর্দায় ৫০ বছর আগে ২৭ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া এক ম্যাজিক৷

Manik Babur Panchali: ওটিটি-তে ‘মানিকবাবুর পাঁচালি’, ২২ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত সত্যজিতের একগুচ্ছ ছবি দেখুন এইচডি-তে

কলকাতা: সাদা-কালোর যুগ। কিন্তু রঙিন মেজাজ। পর্দায় উত্তম-সৌমিত্রদের ক্যারিশ্মা। আর পর্দার নেপথ্য থেকে দক্ষ ব্যান্ড মাস্টারের মতো গল্প বুনে চলেছেন সত্যজিৎ রায়। হাতের ক্যামেরাটাই যেন একে ৪৭! গ্রাম বাংলার নিখুঁত চিত্র থেকে সমাজের অসাম্য, তাঁর মানস দর্পণ হয়ে রুপোলি পর্দায় ছায়া ফেলেছে সব কিছুই।

২ মে সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন। আর মৃত্যুদিন ২৩ এপ্রিল। এই সময়সীমাকে ধরেই ২২ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখানো হচ্ছে বিশ্ববরেণ্য পরিচালকের একগুচ্ছ ছবি। নাম দেওয়া হয়েছে ‘মানিকবাবুর পাঁচালি’। স্ট্রিম হচ্ছে ‘Raytrospective’।

আরও পড়ুন– ‘সৌরভ যেন না আসে’, বিয়ের নিমন্ত্রণ পত্রে লিখে দিল বর, পড়ে ভিরমি খেলেন অতিথিরা !

উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরির পৌত্র সত্যজিৎ। সুকুমার রায়ের পুত্র। জন্মসূত্রেই পেয়েছিলেন অন্তর্দৃষ্টি। গল্প কীভাবে বলতে হয়, তাঁর চেয়ে ভাল আর কে জানবে! সাহিত্য তাঁর রক্তে। স্বাভাবিক ভাবেই ছোটদের জন্য লিখেছেন অজস্র গল্প, উপন্যাস। প্রায় সবই কালজয়ী। তাঁর হাতেই তৈরি হয়েছে ফেলুদার মতো অমর চরিত্র। শুধু লেখেননি ছবিও এঁকেছেন। স্কেচ করেছেন নিজের হাতে।

রায় পরিবারের ছেলে সত্যজিৎ নিজের পথ তৈরি করেছেন নিজেই। পারিবারিক সাহিত্যচর্চার উত্তরাধিকার মাথায় নিয়েই পা দিয়েছেন রুপোলি পর্দায়। সেখানেও তিনি কিংবদন্তি। ১৯৫৫ সালে প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালি’। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই ছবি সেই সময় সাড়া জাগাতে না পারলেও পরবর্তীকালে ‘কাল্ট’ ছবির মর্যাদা পেয়েছে।

আরও পড়ুন– পর্যটকদের জন্য ‘ভারত গৌরব’ বিশেষ ট্রেন, ‘রামলালা’ দর্শনের সঙ্গে হবে উত্তর ভারত ভ্রমণও

শুধু ‘পথের পাঁচালি নয়’, ‘চারুলতা’, ‘দেবী’, ‘আগন্তুক’, ‘গণশত্রু’, ‘মহানগর’, ‘জলসাঘর’, ‘জনঅরণ্য’-এ সমাজ জীবনের আখ্যান বুনে গিয়েছেন তিনি। ছোটদের জন্য তৈরি করেছেন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘হীরক রাজার দেশে’, যা সমান ভাবে ভাবিয়েছে বড়দেরও। ‘মহাপুরুষ’, ‘পরশপাথর;-এর মতো ছবি আজও বাঙালি হৃদয়ে সমান সমাদৃত।

সত্যজিতের এই সব ছবির সম্ভার এইচডি-তে বাঙালি দর্শকের সামনে হাজির হয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। ক্লিক ওটিটির কর্ণধার অভয় তাঁতিয়া বলছেন, “ভারতীয় চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ রায় এমনই এক ব্যক্তিত্ব যাঁকে নিয়েই চর্চা করা হোক না কেন কম মনে হয়। ক্লিক ওটিটি-র লক্ষ্য তাঁর ক্লাসিক সিনেমাগুলিকে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় নতুনভাবে তুলে ধরা। যাতে দর্শকদের কাছে উপভোগ্য হয়”। তবে শুধু সিনেমা নয়, ক্লিকের Raytrospective-এ সত্যজিতের তৈরি বেশ কিছু তথ্যচিত্রও দেখতে পাবেন দর্শকরা।

Satyajit Ray Grandson Wedding: চুপিসারে বিয়ে হল সন্দীপ-পুত্রের, রায়বাড়িতে আগমন হল সত্যজিতের নাতবউয়ের! চেনেন কি

কলকাতা: রায়পরিবারে খুশির মেজাজ। সত্যজিৎ রায়ের ঘরে আসবে নতুন সদস্য। কিংবদন্তি পরিচালকের নাতির বিয়ে বলে কথা। পরিবারে নতুন সদস্য, সত্যজিতের নাতবউ, সৌরদীপের স্ত্রীকে চিনুন।

কাকপক্ষীকেও টের পেতে দেওয়া হয়নি। এরই মাঝে বিয়ে সেরে ফেলেছেন সন্দীপ রায়ের ছেলে সৌরদীপ। অন্য এক সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতেই আইনি বিয়ের বন্দোবস্ত হয়েছিল। ১২ বছরের প্রেমিকা সৃজাতার সঙ্গে আপাতত সংসার শুরু করে ফেলেছেন সন্দীপ-পুত্র। তবে আগামী ১ মার্চ টলি ক্লাবে রিসেপশনের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে ইন্ডাস্ট্রির ঘনিষ্ঠদের নিয়ে খাওয়াদাওয়া হবে।

আরও পড়ুন: ৪২ বছর ধরে সেই কণ্ঠের সঙ্গে যাপন দেশবাসীর, থেমে গেল ‘গীতমালা’র আমিন সায়ানির স্বর. প্রয়াত কিংবদন্তি রেডিও সঞ্চালক

সংবাদমাধ্যমকে সত্যজিতের নাতি জানান, ব্যক্তিগত রাখতে চেয়েছিলেন বলেই কাউকেই এই বিয়ের কথা জানাননি তাঁরা। তাঁর স্ত্রী সৃজাতা থাকেন বেহালাতে। মাঝে মাঝে শ্বশুরবাড়ি, মাঝে মাঝে বাপেরবাড়ি, এই ভাবেই যাতায়াত করে দুই সংসার সামলাচ্ছেন সৃজাতা। নবদম্পতির আলাপ ১২ বছর আগে। একটি রেডিও চ্যানেলে কাজ করতে গিয়েই বন্ধুত্ব, তারপর ধীরে ধীরে প্রেম।

সত্যজিতের স্ত্রী বিজয়া রায়, ছেলে সন্দীপ রায়, পুত্রবধূ ললিতা রায় এবং নাতি সৌরদীপ রায়ের সঙ্গে একটি বিরল ছবি পাওয়া গিয়েছে ফেসবুক সূত্রে। ফ্যামিলি ফোটোর কৃতিত্ব: প্রখ্যাত আলোকচিত্রকর নিমাই ঘোষ।

সত্যজিতের পরিবার
সত্যজিতের পরিবার

যেখানে ছোট্ট সৌরদীপকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে সন্দীপ। আর আজ সেই খুদেও নিজের সংসার শুরু করে ফেলেছেন।

Sharmila Tagore Childhood: সত্যজিতের ছবির ডাক পেতেই কলকাতার স্কুলে না ঢোকার নির্দেশ শর্মিলাকে! কারণ শুনলে চমকে যাবেন

১৩ বছরের ছোট্ট মেয়ে। চোখে এমন গভীরতা যে, সত্যজিৎ রায় পর্যন্ত অভিভূত হয়েছিলেন। সেই শর্মিলা ঠাকুরকে নিজের অপুর ছোট্ট কনে অপর্ণা রূপে সাজিয়ে তোলেন পরিচালক।
১৩ বছরের ছোট্ট মেয়ে। চোখে এমন গভীরতা যে, সত্যজিৎ রায় পর্যন্ত অভিভূত হয়েছিলেন। সেই শর্মিলা ঠাকুরকে নিজের অপুর ছোট্ট কনে অপর্ণা রূপে সাজিয়ে তোলেন পরিচালক।
‘অপুর সংসার’, ‘দেবী’, ‘কাশ্মীর কি কলি’, ‘অমর প্রেম’, ‘আরাধনা’... ১৯৬০-এর দশকে একের পর এক মূলধারার ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন ঠাকুরবাড়ির মেয়ে।
‘অপুর সংসার’, ‘দেবী’, ‘কাশ্মীর কি কলি’, ‘অমর প্রেম’, ‘আরাধনা’… ১৯৬০-এর দশকে একের পর এক মূলধারার ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন ঠাকুরবাড়ির মেয়ে।
কৃতী ছাত্রী ছিলেন শর্মিলা। কলকাতার সেন্ট জনস ডায়েসেশিয়ান স্কুলে পড়াশোনা করতেন। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। স্কুলের অধ্যক্ষ তাঁকে স্কুলে যেতে নিষেধ করে দেন।
কৃতী ছাত্রী ছিলেন শর্মিলা। কলকাতার সেন্ট জনস ডায়েসেশিয়ান স্কুলে পড়াশোনা করতেন। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। স্কুলের অধ্যক্ষ তাঁকে স্কুলে যেতে নিষেধ করে দেন।
কারণ হিসেবে বলা হয়, বিনোদন জগতে পা দেওয়ায় অন্য বাচ্চাদের উপর ‘খারাপ প্রভাব’ পড়তে পারে। তাঁর বাবা অধ্যক্ষর মন পরিবর্তন করার শত চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
কারণ হিসেবে বলা হয়, বিনোদন জগতে পা দেওয়ায় অন্য বাচ্চাদের উপর ‘খারাপ প্রভাব’ পড়তে পারে। তাঁর বাবা অধ্যক্ষর মন পরিবর্তন করার শত চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
তখনই তাঁর রীতিমতো ঘোষণা করেছিলেন, সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে কাজ করা খুবই সম্মানের। এবং তিনি তাঁর মেয়েকে রায়ের ছবির অংশ হতে দিতে চান। যে স্কুল এই প্রাপ্তির প্রশংসা করতে পারে না, সেই স্কুলে পড়ানোর চেয়ে রায়ের ছবির অংশ হলে তিনি বেশি খুশি হবেন।
তখনই তাঁর রীতিমতো ঘোষণা করেছিলেন, সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে কাজ করা খুবই সম্মানের। এবং তিনি তাঁর মেয়েকে রায়ের ছবির অংশ হতে দিতে চান। যে স্কুল এই প্রাপ্তির প্রশংসা করতে পারে না, সেই স্কুলে পড়ানোর চেয়ে রায়ের ছবির অংশ হলে তিনি বেশি খুশি হবেন।
কিন্তু একটি ১৩ বছরের বাচ্চার জন্য বন্ধুদের এবং স্কুল ছেড়ে আসাটা কঠিন ছিল। পরে তাঁকে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু একটি নতুন ভাষায় পড়াশোনা করাটা শর্মিলার জন্য খুব ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু একটি ১৩ বছরের বাচ্চার জন্য বন্ধুদের এবং স্কুল ছেড়ে আসাটা কঠিন ছিল। পরে তাঁকে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু একটি নতুন ভাষায় পড়াশোনা করাটা শর্মিলার জন্য খুব ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায়।
শর্মিলার কথায় জানা যায়, ‘‘ইংরেজিতে কথোপকথন এড়ানোর জন্য আমি স্কুলে সকলের থেকে লুকিয়ে থাকতাম। এতই ভয় করত ভাষাটিকে।’’
শর্মিলার কথায় জানা যায়, ‘‘ইংরেজিতে কথোপকথন এড়ানোর জন্য আমি স্কুলে সকলের থেকে লুকিয়ে থাকতাম। এতই ভয় করত ভাষাটিকে।’’

Digha New Attraction: শীতের ছুটিতে দিঘায় বেড়াতে যাবেন? সৈকতশহরের নতুন এই আকর্ষণ নিয়ে এখনই জানুন

 সৈকত শহর দিঘায় বছরভরই উপচে পড়ে পর্যটকদের ভিড়। শীতে বা বছরশেষের ছুটিতে সেই ভিড় যেন তুঙ্গে ওঠে।
সৈকত শহর দিঘায় বছরভরই উপচে পড়ে পর্যটকদের ভিড়। শীতে বা বছরশেষের ছুটিতে সেই ভিড় যেন তুঙ্গে ওঠে।

 

পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকা দিঘা নিত্যনতুন আকর্ষণে সেজে উঠছে। এ বার সেখানে তৈরি হচ্ছে সত্যজি‍ৎ রায় থিম পার্ক৷
পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকা দিঘা নিত্যনতুন আকর্ষণে সেজে উঠছে। এ বার সেখানে তৈরি হচ্ছে সত্যজি‍ৎ রায় থিম পার্ক৷

 

সিনেমা থেকে বইয়ের পাতা-সত্যজিতের তৈরি কালজয়ী চরিত্রগুলির মূর্তি থাকবে ওই থিম পার্কে৷
সিনেমা থেকে বইয়ের পাতা-সত্যজিতের তৈরি কালজয়ী চরিত্রগুলির মূর্তি থাকবে ওই থিম পার্কে৷

 

গুপী গাইন বাঘা বাইন, জাদুকর বরফি, হীরকরাজ তো আছেনই৷ সেই পার্কে থাকবেন প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু এবং ভূতের রাজাও৷
গুপী গাইন বাঘা বাইন, জাদুকর বরফি, হীরকরাজ তো আছেনই৷ সেই পার্কে থাকবেন প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু এবং ভূতের রাজাও৷

 

কলকাতা-সংলগ্ন নিউটাউনে ইতিমধ্যে একাধিক সত্যজিৎ রায় থিম পার্ক হয়েছে৷ সেই ধরনের পার্ক এ বার তৈরি হবে দিঘাতেও৷
কলকাতা-সংলগ্ন নিউটাউনে ইতিমধ্যে একাধিক সত্যজিৎ রায় থিম পার্ক হয়েছে৷ সেই ধরনের পার্ক এ বার তৈরি হবে দিঘাতেও৷

 

নতুন বছর শুরুর আগেই পর্যটকদের জন্য দিঘায় খুলে যাবে ‘সত্যজিৎ রায় পার্ক’। নতুন পার্ক তৈরির দায়িত্বে রয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)।
নতুন বছর শুরুর আগেই পর্যটকদের জন্য দিঘায় খুলে যাবে ‘সত্যজিৎ রায় পার্ক’। নতুন পার্ক তৈরির দায়িত্বে রয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)।

 

দিঘায় বিশ্ব বাংলা দ্বিতীয় পার্কের পাশে গড়ে উঠছে সত্যজিৎ রায় নামাঙ্কিত এই পার্ক। আগামী নতুন বছর শুরু হওয়ার আগে পাকাপাকিভাবে সেই পার্ক পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
দিঘায় বিশ্ব বাংলা দ্বিতীয় পার্কের পাশে গড়ে উঠছে সত্যজিৎ রায় নামাঙ্কিত এই পার্ক। আগামী নতুন বছর শুরু হওয়ার আগে পাকাপাকিভাবে সেই পার্ক পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।