Tag Archives: susunia hill

শুশুনিয়ার কোলে এক অচেনা গ্রাম, যা বর্ষায় আপনার বেরিয়ে আসার সেরা ঠিকানা

শুশুনিয়া বাংলার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান। বাঁকুড়া-পুরুলিয়া যাওয়ার পথে এই প্রাচীন পাহাড়টি ছাতনার দশ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে যা বাঁকুড়া শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে। এই শুশুনিয়াতে রয়েছে একটি লুকানো গ্রাম। যা অপূর্ব সুন্দর। এই বর্ষায় হতে পারে বেরিয়ে আসার অন্যতম ঠিকানা

Monsoon Travel: ঘুরে আসুন শুশুনিয়া পাহাড়ের লুকোনো গ্রাম! কেউ জানেই না এই স্বর্গ গ্রামের কথা! রইল ফোন নম্বর

বাঁকুড়া: শুশুনিয়া পাহাড় বলতে আপনি কী বোঝেন? পাহাড়, ঝরনা আর মন্দির? যদি সেটা ভাবেন তাহলে ভুল করছেন। শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে ছবির মত একটি গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামে গেলে প্রকৃতি এবং শিল্প মন জয় করবে আপনার। কোনও এক সময় এই আদিবাসী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত গ্রামে এসেছিলেন জনৈক সাধু বাবা। গরিব গ্রামবাসীরা সাধু বাবার জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন একটি পাতার কুটির। তারপর ধীরে ধীরে সাধু বাবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় বদলে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামটির চেহারা। তৈরি হয়েছে ঝকঝকে রাস্তাঘাট, পাওয়া যাচ্ছে পরিশুদ্ধ পানীয় জল এবং গ্রামের কচিকাঁচার প্রায় বিনামূল্যে শিখছে পড়াশোনা।

গল্প নয় সত্যি। ঠিক এমনটাই ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শিউলিবোনা গ্রামে। ১৯৯১ সালে শিউলিবোনায় পা রাখেন এক সাধু বাবা , জনপ্রিয়ভাবে পরিচিত “প্রভুজী” বলে। পরবর্তীকালে গ্রামবাসীরা তাঁকে “ধারতী বাবা” বলে ডাকতেন। বাস করত মাত্র সাতটি আদিবাসী দিনমজুর পরিবার। বর্তমানে শিউলিবোনা গ্রাম একটি ছবির মত সাজানো গোছানো গ্রাম। রয়েছে ৮১ টি পরিবার এবং এই গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা রয়েছে দারুণ সব রঙিন ছবি। কোথায় ফুটে উঠছে শিকারের গল্প আবার কোথায় চেন্নাই এক্সপ্রেস। দেওয়ালে জায়গা করে নিয়েছে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমের লোগো। যারা খোঁজ খবর রাখেন তাদের জন্য দারুণ একটা ঘুরে দেখার জায়গা হতে পারে এই গ্রাম।

আরও পড়ুন: ঘুম থেকে ওঠার পরেও ঘুম পায়? সারাদিন ক্লান্ত লাগে? মারণ রোগের ইঙ্গিত! জানুন কী করবেন

এই গ্রামের পাশ দিয়েই পাহাড়ের কোলে একটি শিলালিপি রয়েছে, যা পশ্চিমবঙ্গের  প্রাচীনত  শিলালিপি হিসাবে বিবেচিত। রাজা চন্দ্রবর্মণের শিলালিপি বলে পরিচিত এই শিলালিপি। জানা যায় রাজা চন্দ্রবর্মণ এই স্থানে তৈরি করেছিলেন তাঁর দুর্গ। যদিও বর্তমানে এই দুর্গের কোনও চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। শুশুনিয়া পাহাড়ের একটি দুর্গম স্থানে অবস্থিত এই শিলালিপি। শিউলিবোনা গ্রামে যাওয়ার রাস্তায় ঢুকলেই চোখে পড়বে সুবিশাল একটি মাঠ। সেই মাঠের পথ অনুসরণ করে কিছুটা পাহাড়ে উঠলেই পেয়ে যাবেন শিলালিপিটি। ইতিমধ্যেই শুশুনিয়া পাহাড় বেড়াতে এসে, একাধিক মানুষ পৌঁছে যাচ্ছেন ইতিহাসের স্বাদ নিতে। এই গ্রামের একেবারে পাশেই রয়েছে নতুন একটি রিসোর্ট, যার নাম শিউলিবোনা উইক এন্ড স্টে। যোগাযোগ নম্বর 8927564507

শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে থাকা এই শিউলিবোনা গ্রাম দৃষ্টি আকর্ষণ করবেই আপনার। এই গ্রামে প্রকৃতি সেজে ওঠে নতুন সাজে। পড়ন্ত বিকেলের সূর্যাস্ত অনুভব করতে যদি আসেন শিউলিবোনা। তাহলে বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখতে পাবেন ধাত্রীবাবা এবং শময়িতা মঠের স্পর্শ লেগে রয়েছে পুরো গ্রামটাতে। বলা যায় না হয়ত আপনিও খুঁজে পেতে পারেন নতুন কোন ঘুরে দেখার আবেগ।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

Tourist Destinations: শিমূল-পলাশে রাঙা, অপরূপ প্রকৃতির মাঝে ৯ দিনের নিরামিষ মেলা! ঘুরে আসুন, রইল হদিশ

বাঁকুড়া:  শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে শুরু হতে চলেছে  ৯ দিনব্যাপী বিশেষ মেলা। একদম পাহাড়ের কোলে, মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে অনুষ্ঠিত হবে ছোট্ট এই মেলা। মিষ্টি রোদ ঝলমলে আবহাওয়ায় শুশুনিয়া পাহাড়ে বেড়াতে এলে অবশ্যই ঘুরে দেখতে পারেন এই মেলা।

শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত শুশুনিয়া গ্রাম। এবার সেখানেই গন্ধেশ্বরী নদীর তীরে বসতে চলেছে ৯ দিনব্যাপী ‘নবকুঞ্জ মেলা’। এখানে টানা ৯ দিন ধরে অখণ্ড তারকব্রহ্ম নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন: দুই কন্যাকে দত্তক নিলেন দম্পত্তি, তারা পাড়ি দিচ্ছে বেলজিয়াম! পুরো ঘটনা শুনলে অবাক হবেন

শুশুনিয়ায় শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় বর্ষের ‘নবকুঞ্জ মেলা’। শুশুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে গন্ধেশ্বরী নদীর তীরে নবকুঞ্জ মেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। বাঁকুড়ার ছাতনার শুশুনিয়া গ্রামের গন্ধেশ্বরী নদীর পাড়ে ফুটবল ময়দানে আগামী ১১ ফাল্গুন থেকে ১৯  ফাল্গুন পর্যন্ত চলবে এই নবকুঞ্জ মেলা।

আরও পড়ুন: ভারতীয় পোশাকে বাজিমাত দীপিকার! সব্যসাচীর ডিজাইন করা সোনালি শাড়িতে বাফটা-র মঞ্চে নায়িকা

এই মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে জানিয়েছেন ‘নবকুঞ্জ মেলা’র উদ্যোক্তারা। খড়, বাঁশ, দড়ি প্রভৃতি পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে কুঞ্জগুলি। এছাড়াও এই মেলায় নিরামিষ খাবার ও চড়ক‌-সহ বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য পসরা নিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন শতাধিক ব্যবসায়ী।

মেলার নয়দিনই নিরামিষ মেলার দিন গুলিতে মেলা প্রাঙ্গণে থাকবে না কোন আমিষ খাদ্য। ৯ টি মঞ্চ করে ৯ দিন ধরে চলবে মেলা। দূর-দূরান্ত থেকে বহু ভক্ত আসবেন। সব মিলিয়ে আগামী ক’দিন বেশ জমজমাট থাকবে শুশুনিয়া পাহাড় সংলগ্ন এলাকা। কারণ বসন্তকাল উপলক্ষে এমনিতেই এখানকার প্রকৃতি অত্যন্ত মনোরম হয়ে উঠেছে। এই প্রকৃতি দেখতে পর্যটকরা প্রতিবছরই আসেন। ‘নবকুঞ্জ মেলা’র দ্বিতীয় বছর শুরু হওয়া পর্যটকের ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী