উত্তর ২৪ পরগনা: জলে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে বিশেষ উদ্যোগ সুন্দরবনে। নদী বেষ্টিত সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় প্রতিবছর জলে ডুবে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়। সুন্দরবন এলাকায় জলে ডোবা প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাদের হাত ধরেই এবার এল এই বিশেষ উদ্যোগ।
একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, সুন্দরবন এলাকার মধ্যে আছে উত্তর ২৪ পরগনার ৬ টি ব্লক ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৩ টি ব্লক। এই মোট ১৯ টি ব্লকে জলে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। জলে ডুবে শিশু মৃত্যুর নিরিখে এই এলাকা গোটা পৃথিবীতে এগিয়ে বলে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। শিশুর সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিনি (Child In Need Institute) প্রতিটি জেলায় সার্ভে শুরু করেছে গত মার্চ মাস থেকে। তাদের সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ২০২৩ -২৪ এবং ২০২৪-২৫ এই দু’বছরের মধ্যে জলে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ২২৩ জন। যা গোটা বিশ্বের নিরিখে বেশ উদ্বেগজনক।
আরও পড়ুন: পাকা রাস্তার উপর থেকে বাজার না সরানো পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ বাস পরিষেবা
জলে ডোবার পর অনেক ক্ষেত্রেই মৃত অবস্থায় শিশুদের দেহ উদ্ধার হয়। আর জীবন্ত উদ্ধার হলেও শিশুকে জল থেকে তোলার পর কী করা উচিত, কীভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে সে ব্যাপারে ধারণা নেই অনেকেরই। তা ছাড়া জলে ডোবা ঘিরে নানা কুসংস্কারও আছে। ফলে অনেকেই চিকিৎসকের পরিবর্তে প্রথমে ওঝা-গুনিনের শরণাপন্ন হন। এতে বিপদ বাড়ে। শিশু মৃত্যুর ময়নাতদন্তও হয় না অধিকাংশ ক্ষেত্রে। ফলে এ ধরনের মৃত্যুর কোনও নথি থাকে না। সেই কারণে জলে ডুবে মৃত্যুর প্রকৃত পরিসংখ্যানও পাওয়া যায় না। এই সমস্যা দূরীকরণে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন ফেরিঘাটে, বিভিন্ন জলাশয়ের ধারে কীভাবে সকলে সচেতন থাকবেন এবং কীভাবে জলে ডোবার হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করবেন সেই বিষয়ে প্রচার অভিযান চালানো হয়। অভিভাবকদের ভাল করে সবটা বোঝান এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা।
জুলফিকার মোল্যা