হুগলি : হুগলি জেলা বারোয়ারি দুর্গা পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় পুজো শ্রীরামপুর ৫ ও ৬ এর পল্লী ব্যবসায়ী সমিতির দুর্গাপুজো যা আর এমএস মাঠের পুজো নামে পরিচিত।
এই বছর জেলার অন্যতম বিগ বাজেট পুজোগুলির মধ্যে একটি হল এই পুজো। এই বছর দুর্গাপুজোয় তাদের নিবেদন লন্ডনের স্বামীনারায়ণ মন্দির। প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা খরচে সেজে উঠেছে গোটা মন্ডপ।
আরও পড়ুন: ঢক ঢক করে জল খান? শরীরের ক্ষতি হয়ে যাবে না তো! কী বলছে বিশেষজ্ঞ
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদীয়া। বছর পরে মা আসছে। তাই উদ্যোগে খামতি রাখছে না পুজো কমিটি গুলি। রথের দিন খুঁটি পুজোর মধ্যে দিয়ে দুর্গাপুজোর সূচনা হয় শ্রীরামপুরের আর এমএস মাঠের এই পুজোর। এই পুজো মূলত শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো নামেই পরিচিত।
আরও পড়ুন: বাথরুমের ড্রেনেজে চুল জড়িয়ে জল জমছে? গা ঘিনঘিনে ছাড়াই ২ জিনিসেই পরিষ্কার হবে
প্রতিবছরই মন্ডপ সজ্জায় থাকে তাদের বিশেষ চমক। বিগত বছরগুলিতে কখনওমালয়েশিয়া টুইন টাওয়ার, আবার কখনওগুজরাটের মন্দির তৈরি করে দর্শনার্থীদের মন জয় করেছেন।
এবছর ও ঘটেনি তার ব্যতিক্রম। লন্ডনের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের আদলে মন্ডপ নির্মাণ করে চমক দিয়েছেন তাঁরা। রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উদ্বোধনের পর জনসাধারণের খুলে দেওয়া হয় মন্ডপের গেট। প্রতিবছরই লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় জমে এই পুজো দেখার জন্য।
এই বছরও পরিবেশবান্ধব মন্ডপ নির্মাণ করেছেন তাঁরা। মন্ডপে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ, প্লাই তার সঙ্গে পুরো মণ্ডপ জুড়েই থাকছে ফাইবার। মন্ডপের ভিতরে থাকছে লক্ষ্মী, নারায়ন ও গণেশের মূর্তি। এছাড়াও থাকছে ৩০ ফুটের একটি বড় ঝাড়।
যার মধ্যে সম্পূর্ণটাই ফইবারের কাজ করা হবে। রথের পরদিন থেকে শুরু হয়েছে মন্ডপ তৈরির কাজ , যা তৈরি করতে সময় লেগেছে তিন মাস। মৃন্ময়ী মূর্তির চিন্ময়ী রূপদান ও হয়েছে মণ্ডপের ভিতরেই।
মন্ডপ নির্মাতা বাবাই বসাক বলেন, স্বামীনারায়ণ কথার মধ্যে অনেক অর্থ লুকিয়ে রয়েছে । নারায়ণের মধ্যে আমরা ৩৩ কোটি দেব দেবীকে দেখতে পাই । তাই প্রথমেই আমরা নারায়ণ ও গণেশের পুজো করেই শুরু করি যে কোন পুজো।
এছাড়া মানুষের সঙ্গে মানুষের একটা মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা করেছি। মন্ডপ নির্মাণ করতে পুরোটাই ব্যবহার করা হচ্ছে ফাইবার। তবে এই মন্ডল শ্রীরামপুরের বুকেই এই প্রথম তৈরি হয়েছে। যা মন জয় করবে দর্শনার্থীদের।
পুজো কমিটির সম্পাদক সন্তোষ কুমার সিং বলেন, এই পুজো সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো নামেই পরিচিত। সাবেকিআনা ও আধুনিক ছোঁয়ার মেলবন্ধনেই এই পুজো হয়।
শোলার সাজে সাজানো হয় প্রতিমাকে। অনেক মানুষ আছেন যারা লন্ডনে যেতে পারবেন না, তাই লন্ডনের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের আদলেই মন্ডপ নির্মাণ করা হচ্ছে।
পুজোর দিনগুলিতে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিজস্ব প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে , সেই সঙ্গে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। মন্ডপের ভিতর বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। পুজোর বাজেট প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
শ্রীরামপুরের সংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উদ্বোধনে। সেখান থেকেই তিনি শ্রীরামপুর বাসীর জন্য বার্তা দেন, উৎসবের আনন্দে যাতে সবাই সুষ্ঠুভাবে মেতে ওঠে। সবাই যাতে সুস্থ থাকে সেই প্রার্থনাই তিনি করছেন দেবী দুর্গার কাছে।
রাহী হালদার