ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যের এক নিদর্শন ধান্যকুড়িয়া গাইন গার্ডেন

Travel Destination: কলকাতার কাছেই এক টুকরো ইউরোপ! অল্প খরচে ঘুরে আসুন এই গ্রাম থেকে

জুলফিকার মোল্যা, বসিরহাট: ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যের এক নিদর্শন ধান্যকুড়িয়া গায়েন গার্ডেন। ধান্যকুড়িয়া! বলা যেতে পারে এটি বসিরহাটের ইতিহাসের একটি খনি। ধান্যকুড়িয়া ও পার্শ্ববর্তী এলাকা পরিদর্শন করলে পরতে পরতে চোখে পড়বে ঐতিহাসিক নিদর্শন, যার মধ্যে অন্যতম ধান্যকুড়িয়ার এই গায়েন গার্ডেন। বারাসাত থেকে বসিরহাটগামী টাকি রোডের পাশে এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সুবিশাল ফটক। সেই ফটকের তার দু’দিকে বৃত্তাকার দুটি স্তম্ভ। তার মাঝে ধনুকাকৃতি ঝুলন্ত ছাদ।

মাথায় পাথরে খোদাই করা একটি মূর্তি। সেই মূর্তিতে ছোরা দিয়ে সিংহ বধ করছেন এক ইংরেজ সাহেব। আর এই ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই প্রকাণ্ড এক রাজবাড়ি। রাজবাড়ির থেকে তাকে দুর্গ বলাই শ্রেয়। যা আজও ধান্যকুড়িয়ার প্রাচীন ইতিহাসের ঐশ্বর্যের প্রমাণ দেয়। বসিরহাটের নিকটবর্তী ছোট্ট জনপদ ধান্যকুড়িয়া। সেখানে গেলেই দেখা মিলবে এই আশ্চর্য স্থাপত্যের। ধান্যকুড়িয়ায় গায়েন, সাউ ও বল্লভ রাজবাড়ির মধ্যে গায়েনদের এই বাগানবাড়ি অন্যতম। যার প্রতি দেওয়ালের ইটের পাঁজরে লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস।

আজ থেকে প্রায় ২৫০ বছর আগের কথা। ধান্যকুড়িয়ার এই সুবিশাল এই রাজবাড়ি বানিয়েছিলেন জমিদার মহেন্দ্রনাথ গায়েন। সে সময় ধান্যকুড়িয়ার জমিদারের পাটের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছিল। ইংরেজদের সঙ্গেই চলত তাঁর ব্যবসা, সেই সুবাদেই উত্তর ২৪ পরগনার এই প্রান্তিক অঞ্চলেও নিত্যদিন লেগে থাকত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহেবদের আনাগোনা। তাঁদের বিলিতি সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে উস্কে দিতেই ইউরোপীয় দুর্গের আদলে এই রাজবাড়ি নির্মাণ করেন মহেন্দ্রনাথ। ইন্দো-ইউরোপীয় মিশ্র আঙ্গিকের সুদৃশ্য এই প্রাসাদটি এখনও সকলকে অবাক করে। এই বাগান বাড়িতে জমিদার ও তাঁদের ব্যবসায়িক সহযোগী ইংরেজদের বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল।

আরও পড়ুন : পড়বে বাজ! আগামী ২ ঘণ্টায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝেঁপে বৃষ্টি আসতে চলেছে এই জেলাগুলিতে! দিনের শেষে কলকাতাও কি ভিজবে স্বস্তির বর্ষণে? জানুন বড় আপডেট

প্রাচীন ইতিহাসের এই ধান্যকুড়িয়াকে ইতিমধ্যে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এবার গায়েন গার্ডেন-সহ ধান্যকুড়িয়াকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা জানালেন, দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার ডিরেক্টর এটিএম আব্দুল্লাহ রনি। ৩৩ বিঘা জমি জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই রাজবাড়ির মধ্যেই রয়েছে আস্ত এক পুস্করিণী, যাতে দূর থেকে রাজবাড়ির প্রতিচ্ছবি ঝলমল করে সারাদিন। গোটা দুর্গকে কেন্দ্র করে রয়েছে বিশাল এই বাগান।