কানপুর: উত্তর প্রদেশের কানপুরে অবাক করা ঘটনা। ২০২৪-এর ২৭ এপ্রিল। কানপুর সেন্ট্রালে টহল দিচ্ছিল আরপিএফের একটি দল (এসআই আসলাম খান, এসআই আরতি কুমারী এবং এএসআই হরিশঙ্কর তিওয়ারি)। হঠাৎ এক আরপিএফ ইন্সপেক্টরের নজরে আসে বড় দাড়ি, লম্বা চুলের, পরনে ময়লা শতছিন্ন পোশাক পরা এক ব্যক্তি এক ফোঁটা জলের জন্য আকুল হয়ে ঘুরছেন স্টেশনে।
একনজরে দেখে মনে হবে, ভিখারি বোধহয়। ইন্সপেক্টরও তাই ভেবেছিলেন। তাঁর কাছে একটা জলের বোতল ছিল। ওই ব্যক্তির দিকে সেটাই বাড়িয়ে দেন তিনি। কিন্তু জল খেয়ে তিনি যা বললেন, তাতেই চমকে ওঠেন ইন্সপেক্টর। জল খেয়ে মুখ মুছে স্পষ্ট ইংরেজিতে ব্যক্তি বলে ওঠেন ‘থ্যাঙ্ক ইউ’। চমকে যান ইন্সপেক্টর। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে ‘ভিক্ষুকে’র আসল গল্প।
২ বছর আগে অপহরণ: আরপিএফের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ২ বছর আগে এই যুবককে অপহরণ করা হয়েছিল। তাঁর নাম মহাবীর সিং। তিনি আউরিয়ার বাসিন্দা। ওই যুবক পুলিশকে জানান, বছর দুয়েক আগে তিনি এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এটিএমে টাকা না থাকায় তিনি পাশের একটি দোকানে যান। সেখান থেকে আধার কার্ড ব্যবহার করে টাকা তোলেন।
এরপর ওই যুবক জানান, টাকা তুলে বাড়ি যাবেন বলে বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন। সেই সময় একটা গাড়ি তাঁর সামনে এসে থামে। কয়েকজন বেরিয়ে আসে। তাঁকে চ্যাংদোলা করে তুলে গাড়িতে ঢুকিয়ে নেয়। তিনি জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরলে দেখেন, একটা বাথরুমে পড়ে আছেন। কিছুদিন পর তারা যুবককে একটা খনিতে নিয়ে যায়। সেখানে শ্রমিক হিসেবে খাটায়। সেখান থেকে কোনওরকমে পালান তিনি। ট্রেনে করে চলে আসেন কানপুর।
পুলিশ ও বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ: এরপর আরপিএফ দল যুবকের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বিধুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে গোটা বিষয়টা জানানো হয়। বিধুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, যুবককে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ২ বছর পর বাড়ির ছেলের সন্ধান পেয়ে আর পিএফকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মহাবীরের পরিবার।