পশ্চিম মেদিনীপুর: বাংলার আনাচে-কানাচে রয়েছে নানা ইতিহাস। এককালের ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে একাধিক মন্দির, প্রত্ন নিদর্শনগুলো। বাংলা-ওড়িশা সীমানা এলাকায় থাকা একাধিক প্রাচীন মন্দির এখনও প্রাচীন ইতিহাস এবং ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এককালে দাঁতন যা বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত, তা ছিল ওড়িশা রাজ্যের অধীন। এতদ অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল একাধিক মন্দির। সম্রাট শাহজাহানের সময়ের এই মন্দির বহন করে বেশ কয়েকশো বছরের ইতিহাসকে। মন্দিরের গঠনশৈলী, মন্দিরের সামনে টেরাকোটা নির্মাণ প্রকাশ করেছে কয়েকশো বছরের ইতিহাসকে। তৎকালীন সময়ে সম্ভ্রান্ত পরিবারের প্রতিষ্ঠিত মন্দির হলেও এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে হয় নানা আয়োজন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বাংলা ওড়িশা সীমানা এলাকা দাঁতন থানার শরশঙ্কা গ্রামে রয়েছে প্রাচীন জগন্নাথ মন্দির। বেশ কয়েকশো বছরের পুরনো বলে ইতিহাস গবেষকেরা মনে করেন। পুরানো ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল সম্রাট শাহজাহানের আমলে। তৎকালীন সময়ে দাস মহাপাত্র পরিবারের সদস্যরা সুবর্ণরেখা নদীতে কর আদায়ের জন্য নিযুক্ত হয়েছিল। পলাশিয়া গ্রামে গড়ে তুলেছিল বসতভিটা। তবে সুবর্ণরেখা নদীতে বারংবার বন্যার কারণে দাস মহাপাত্র পরিবারের শরিকেরা বসতি স্থাপন করে দাঁতন থানার শরশঙ্কা এবং আঙ্গুয়া এলাকায়। শরশঙ্কা গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন জগন্নাথ মন্দির।
ইতিহাস গবেষক অতনুনন্দন মাইতি বলেন, ওড়িশা সংস্কৃতির আদলে এই মন্দিরটি নির্মিত হলেও, উচ্চতায় অনেকটা অনেক কম।সামনে দেওয়ালে রয়েছে টেরাকোটার আদলে একাধিক ছোট ছোট মূর্তি। মন্দিরের দ্বারমুখে রয়েছে দারোয়ান। এছাড়াও রয়েছে নাট মন্দির। স্বাভাবিকভাবে উৎকল বঙ্গীয় সংস্কৃতির মেলবন্ধন এই প্রাচীন মন্দিরে।
বর্তমানে দাস মহাপাত্র পরিবারের সদস্যরা এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করেন। প্রাচীন ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রেখেছে সম্ভ্রান্ত এই পরিবারের সদস্যরা। তবে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় থাকা এই মন্দির ঐতিহাসিক দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
রঞ্জন চন্দ