জীবন যুদ্ধ চালাচ্ছেন সুরভী বেগম

Success Story: অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েও হার মানেননি, লড়াইয়ের শেষে রইল সাফল্যের কাহিনী

বীরভূম: এটা বীরভূমের এক লড়াকু মেয়ের গল্প। মনের ইচ্ছে এবং শক্তি থাকলে যে সবকিছুই করা সম্ভব তার প্রমাণ এই মেয়েটি। অল্প বয়সে বাবাকে হারায়। একসময় অর্থের অভাবে কোচিংয়ে যেতে দ্বিধাবোধ করত। আজ সেই মেয়েটি শত শত বেকার ছেলেমেয়ের অনুপ্রেরণা।

এই লড়াকু তরুণীর নাম সুরভী বেগম। বীরভূমের মল্লারপুরের শিউলিয়া গ্রামের মেয়ে সুরভী। ২০১৬ সালে দু’চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে রামপুরহাটের একটি বেসরকারি কোচিং সেন্টারে চাকরির পরীক্ষার কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালে হঠাৎ‌ই তাঁর জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।

আর‌ও পড়ুন: বিডিও অফিস নাকি বাচ্চাদের পার্ক? গোঘাটে এলে গুলিয়ে যেতে পারে

সুরভীর বাবা রোগভোগের পর প্রয়াত হন। এর ফলে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয় পরিবারে। একদিকে পরিবার অন্যদিকে পড়াশোনা, কী করবে বুঝে উঠতে পারছিল না সে। সেই সময় তার পাশে এসে দাঁড়ায় আদিল কোচিং সেন্টারের কর্ণধার আদিল স্যার। সুরভী এবং তার বোন দু’জনকে বিনামূল্যে ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে পড়াশোনার সুযোগ করে দেন। ২০২২ সালে সুরভী ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ, আবগারি দফতর সহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসে পাস করেন। পাশাপাশি আসানসোল কোর্টের পরীক্ষায় পাশ করলেও সব জায়গায়তেই ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় কিছুটা খামতি রয়ে যায়। এরপরই কোচিংয়ের শিক্ষক সমস্ত রকমভাবে তাঁকে সাহায্য করেন।

সুরভীকে সেই কোচিং সেন্টারে বিনামূল্যে সম্পূর্ণ সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। এর কয়েক বছরের মধ্যেই সুরভী একের পর এক পরীক্ষায় পাস করতে থাকেন। অবশেষে এল তাঁর জীবনের কাঙ্খিত দিন। ঝাড়গ্রাম কোর্টের বেঞ্চ ক্লার্ক পদে জয়েন করেন সুরভী বেগম পরীক্ষায় ৩০ নম্বরের মধ্যে ২৭ নম্বর পান। তাঁর এই সাফল্যে খুশি এলাকাবাসী থেকে শুরু করে পরিবার ও শিক্ষকরা। বর্তমানে তিনি ঝাড়গ্রাম আদালতে কর্মরত।

সৌভিক রায়