শিলিগুড়ি: এই স্টিমার, লঞ্চ, জাহাজের যুগে ৩০০ বছর আগে বাংলার লৌকিক জলযান কেমন ছিল জানেন? আচ্ছা সরঙ্গা’র কথা শুনেছেন? সরঙ্গা হল গোটা শাল গাছের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি এক বিশেষ ধরনের নৌকা। যা আজ থেকে ৩০০ বছর আগে এই বাংলায় বহুল মাত্রায় প্রচলিত ছিল।
সরঙ্গা কালের নিয়মে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তা আর এখন কেউই ব্যবহার করে না। তবে এই বিশেষ জলযান কেমন দেখতে ছিল তা চাকুস করার এক দুর্দান্ত সুযোগ এসে গিয়েছে সকলের সামনে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অক্ষয় কুমার মিত্র সংগ্রহশালায় গেলেই এই সরঙ্গা দেখতে পাবেন। এর দুটি সেখানে সংরক্ষিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: গোটা গ্রামটাই যেন আস্ত এক ছবি! একবার ঘুরে আসুন
শিলিগুড়ির চম্পাসারি এলাকায় মহানন্দা নদী থেকে উদ্ধার হয়েছিল এই সরঙ্গা। সংগ্রহশালায় দুটি সরঙ্গা সংরক্ষিত রয়েছে। কার্বন ডেটিং করে জানা গিয়েছে ওই সরঙ্গার বয়স ২০০ থেকে ৩০০ বছর পুরনো। অনুমান করা হয় যে, দেবী চৌধুরানী এই সরঙ্গায় করেই এই অঞ্চলে চলাফেরা করতেন।
প্রসঙ্গত, একসময় নিম্ন মধ্যবিত্তের মানুষ, বড় কাঠের গুঁড়ির মাঝখানটা খোদাই করে নৌকা তৈরি করত। গোটা নৌকা একটা গুঁড়ি দিয়েই তৈরি হত। সেগুলিকে সরঙ্গা বলা হয়। পরবর্তী সময়ে কাঠের তক্তা দিয়ে নৌকা বানানোর কৌশল আবিষ্কৃত হলে ধীরে ধীরে সরঙ্গা হারিয়ে যেতে থাকে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অক্ষয় কুমার মিত্র সংগ্রহশালার তত্ত্বাবধায়ক ড: মলয় সাহা জানান, উত্তরবঙ্গের লৌকিক জলযানগুলির অন্যতম নিদর্শন হল এই সরঙ্গা। এই সরঙ্গা দেখলেই একটা ধারণা পাওয়া যায় যে কী করে ব্রিটিশ আমলে গাছ কাটা হতো এবং সেই গাছ কেটে সেটিকে সরঙ্গা আকারে তিস্তার গতিপথ ধরে ব্যবহার হত।
অনির্বাণ রায়