মুর্শিদাবাদ: প্রায় ৩০ বছর আগে ভাঙনে মুছে গিয়েছিল জলঙ্গির বেশ কিছু গ্রাম। সর্বস্বান্ত হয় শতাধিক পরিবার। অস্থায়ীভাবে তারা ঘাঁটি গেড়েছিল নতুন ঠিকানায়। কিন্তু বছর পাঁচেক পর মূল পদ্মা একেবারে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সরে যাওয়ার ফলে জেগে ওঠে বিস্তীর্ণ চর। জলঙ্গির সাহেবনগর পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা সেই নতুন চরকে আঁকড়ে ধরে নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। তবে সেই পথে এতদিন বাধা হয়েছিল বিএসএফের আউটপোস্ট।
অবশেষে বিএসএফের সেই আউট পোস্ট সরে যাচ্ছে জিরো পয়েন্টে। সীমান্তের চাষিদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই সিদ্ধান্তের ফলে খুশির হাওয়া সীমান্তের চাষিদের মধ্যে। খুব শিঘ্রই বিএসএফের আউট পোস্ট পয়েন্ট সরে যাচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানার কাছাকাছি এলাকায়। দিল্লি থেকে ইতিমধ্যেই এই নিয়ে নির্দেশিকা চলে এসেছে। এই নির্দেশ বাস্তবায়িত হতে চলেছে মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া ও রানিনগরের চর কাকমারী সীমান্ত থেকে রাজানগর সীমান্ত পর্যন্ত এলাকায়।
আরও পড়ুন: কাগজ ছেড়ে শাড়ি, কাপ-প্লেটে ফুটে উঠছে পটের ডিজাইন
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ওই এলাকার কৃষক ও সীমান্ত উন্নয়ন সংস্থার তরফে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরে সীমান্তের জমিতে কৃষকদের চাষবাসের সমস্যার কথা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠির প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের রানিনগর, জলঙ্গি এবং সাগরপাড়ার অনেক চাষি সীমান্তের জমিতে চাষাবাদ করেন। সকালবেলা ওপি পয়েন্টে বিএসএফের কাছে থেকে নথি দেখিয়ে এন্ট্রি নিতে হয় চাষিদের। দীর্ঘ লাইন দিতে হত তাঁদের। অনেক সময় চরের জমিতে চাষের কাজে যেতে দেরি হয়ে যেত চাষিদের। কাজের লোকজন নিয়ে যেতে সময় লাগত বেশি। ফলে সমস্যায় পড়তেন চাষিরা। পাশাপাশি, বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় কৃষকদের ফসল কেটে নিয়ে যেত। সেইজন্য বিএসএফ-এর আউট পোস্ট পয়েন্ট জিরোতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বারবার বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কৃষকদের আলোচনা হয়। অবশেষে সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই সাহেবনগর পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বামনাবাদ, খয়েরতলা, চরকাকমারি সীমান্তে আউটপোস্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
কৌশিক অধিকারী