নতুনগ্রামের শিল্পী 

Wood Artist: কাঠের পেঁচা ছেড়ে এই জিনিসে মন দিতেই হাল ফিরেছে নতুনগ্রামের শিল্পীদের

পূর্ব বর্ধমান: জেলার নতুনগ্রামের বেশিরভাগ মানুষই জড়িত রয়েছেন শিল্পের সঙ্গে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও যুক্ত শিল্পের সঙ্গে। বর্তমানে এই গ্রাম অনেকের কাছেই বেশ জনপ্রিয়। এখানে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে কাজে ব্যস্ত শিল্পীদের। বর্তমানে বিদেশি পর্যটকদেরও যাতায়াত বেড়েছে এই গ্রামে। এক কথায় বলতে গেলে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থেকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই জীবনযাপন করছেন গ্রামের শিল্পীরা। অনেকের কাছে এই গ্রাম শিল্পীগ্রাম হিসেবে পরিচিত, আবার বিভিন্ন জনের কাছে কাঠ পুতুলের গ্রাম নামেও পরিচিত।

তবে একসময় এখানকার শিল্পীদের তৈরি জিনিসের চাহিদা কিছুটা হলেও কমে ছিল। কারণ এখানকার সকল শিল্পী প্রথম দিকে শুধুমাত্র কাঠের পেঁচা এবং গৌর নিতাইয়ের মূর্তি তৈরি করতেন। একসময় সেই কাঠের পেঁচা, গৌর নিতাই মূর্তির চাহিদা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু মাঝখানে চাহিদা কমে যায়। তবে বর্তমানে আবার হাল ফিরতে শুরু করেছে এখানকার শিল্পীদের। আধুনিকতার যুগে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন কাঠের জিনিস তৈরি করছেন শিল্পীরা। আর বর্তমানে এই সকল আধুনিক জিনিসের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে।

আর‌ও পড়ুন: ‘দুর্বল সেতু’ লিখেই দায় শেষ! ইংরেজ আমলে তৈরি এই হেরিটেজ ব্রিজের ভবিষ্যৎ কী?

এই প্রসঙ্গে নতুনগ্রামের শিল্পী গৌরাঙ্গ ভাস্কর বলেন, আমরা এখন নিজেরা বুদ্ধি খাটিয়ে কাঠের আসবাবপত্র, ঘড়ি, টেবিল, চেয়ার, ফটো ফ্রেম, ঠাকুর রাখার দোলনা সহ আরও বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করছি। শুধুমাত্র পেঁচা তৈরি করে আমাদের শিল্পীদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আধুনিক জিনিস তৈরি করে আমাদের আবার হাল ফিরেছে। আমরা শিল্পীরা এখন ভাল আছি।

বর্তমানে এই নতুন গ্রামের খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছে গিয়েছে। এই গ্রাম একসময় ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। ছিল না কোনও জনবসতি। গ্রামবাসীদের কাছে জানা গিয়েছে, আজকের এই নতুনগ্রামে একসময় ছিল গভীর জঙ্গল। একদল কাঠুরিয়া কাঠ কাটতে এসে এই গ্রাম গড়ে তুলেছিলেন। সেই থেকেই নাম হয় নতুনগ্রাম। প্রথমে পাথরের মূর্তি গড়লেও পরে শিল্পীরা এই কাঠের শিল্পকে আপন করে নেন। বর্তমানে নেটদুনিয়ার দৌলতে নতুন গ্রামের শিল্পীদের তৈরি জিনিস পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যেও। শিল্পীদের তৈরি ঘর সাজানোর বিভিন্ন কাঠের জিনিস নজর কাড়ছে বহু মানুষের।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী