Tag Archives: Artists

Bangla Video: পেশায় মৃৎশিল্পী নন, দেখে শিখেই ঠাকুর বানাতে সিদ্ধহস্ত শান্তিপুরের যুবক

নদিয়া:  শান্তিপুর লেলিন সরণী কুটির পাড়ার বাসিন্দা অরূপ বঙ্গ। বর্তমানে তার একটি ছোট সেলাইয়ের উপকরণের দোকান রয়েছে। তবে তার পরিচিতি এখন একজন মৃৎশিল্পী হিসেবে। প্রথম একবার দোলের সময় নিজের বাড়ির গোপাল ঠাকুরের মূর্তি বানায় সে। এরপরে ধীরে ধীরে সোশ্যাল মাধ্যমেই বানানো মূর্তির ছবি আপলোড করার পর মূর্তি বানানোর বরাত আসতে শুরু করে তার। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ আট ফুট উচ্চতার নটরাজের মূর্তি বানিয়েছেন অরূপ বাবু। তবে ছোট মিনিয়েচার মূর্তি বানানোর প্রত্যেক বছরই বরাত পান তিনি। এর আগে একটি সরস্বতীর মূর্তি তিনি কুচবিহার জেলায় পাঠিয়েছিলেন।  বিভিন্ন মূর্তি বানালেও তিনি নিজে মনে করছেন তার তৈরি কালী মূর্তি বেশি চাহিদা ।

আরও পড়ুন: বিড়ি শ্রমিকদের জন্য তৈরি হওয়া হাসপাতালে তালা, ভোগান্তিতে রোগীরা!

বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। আর এই ১৩ পার্বণের মধ্যে বেশিরভাগটাই হিন্দু দেবতাদের পুজো। প্রত্যেকটি পুজোতেই অরূপ বাবু, দু একটি করে মূর্তি বানানোর বরাত থাকেই। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কালি মূর্তি কৌশিকী অমাবস্যার কারণে পাঠিয়েছেন বিভিন্ন জায়গায় অর্ডার অনুযায়ী আর বর্তমানে দুর্গা ঠাকুরের মূর্তি বানাতেই ব্যস্ত অরূপ বঙ্গ।

অরুপ বাবু জানান, বড় ঠাকুরের খরচাটা একটু বেশি হয়। কাঠামো থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্রের কারণে খরচের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। কিন্তু ছোট ঠাকুরের ক্ষেত্রে খরচ কম হয় তবে মজুরি হয় বেশি। কারণ এটি অনেক সূক্ষ্ম কাজ, ধৈর্য লাগে অনেক বেশি। আমার বেশিরভাগ ঠাকুরের মূর্তি ছাঁচে হয় না মাটি দিয়ে সম্পূর্ণ হাতে করা হয়।

বর্তমান নেট দুনিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্ভর করে অনেকেই আয়ের বিকল্প কিংবা নতুন পথ খুঁজে বার করছেন। অরূপ বাবু তার ব্যতিক্রম নন। আপাতত সেলাই মেশিনের দোকান কিছুটা বুজিয়ে রেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্ভর করেই নিজের ছোটবেলার শখ পূরণ করেই রোজকারের নতুন পথ বের করেছেন অরূপ বঙ্গ।

মৈনাক দেবনাথ

Bangla Video: বিপদ থেকে বাঁচতে মাটির কয়েলদানির চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, দাম কত জানেন?

উত্তর দিনাজপুর: বর্ষা নামতেই বেড়ে যায় মশার উৎপাত। সন্ধে নামতেই ঘরে ঢুকে পড়ে মশা। এই পরিস্থিতিতে মশার হাত থেকে মুক্তি পেতে গ্রামবাসীদের কয়েল বা মশা মারার ওষুধ জ্বালাতে হয়। তবে বর্ষাকালে প্রায় দিনই লোডশেডিং হয়। রাতে শোয়ার সময়ও তেমন বিদ্যুৎ থাকে না। তখন মশার উৎপাত থেকে বাঁচতে কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমোতে বাধ্য হন গ্রাম বাংলার বহু মানুষ।

এতদিন মশা মারার কয়েল জ্বালিয়ে রাখার নির্দিষ্ট পাত্র ছিল না। প্লেট বা অন্য যেকোন‌ও পাত্রের উপর কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হত। ফলে যে কোন‌ও সময় আগুন লেগে যাওয়ার একটা ভয় থেকে যায়। এই অবস্থায় চাহিদা বাড়ছে মাটির তৈরি কয়েলদানির। এই মাটির কয়েলদানির মাধ্যমে একদিকে যেমন বিদ্যুতের সাশ্রয় হয়, তেমনই অন্যদিকে অনায়াসে যেখানে সেখানে এই কয়েলদানি রাখা যায়। বাজারে এই কয়েলদানির চাহিদা তুঙ্গে। তাই হাসিমুখে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাড়িতে বসে একের পর এক কয়েলদানি বানাচ্ছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার হাটপাড়ার মৃৎশিল্পীরা। নামমাত্র দামে মৃৎশিল্পীদের হাতে তৈরি এই কয়েলদানি এখন বাজার মাতাচ্ছে।

আর‌ও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের প্রভাব, রাতে জেলার হাসপাতালে পুলিশ কর্তাদের টহল, সিভিক নিয়ে নির্দেশ

মৃৎশিল্পী খোকাবাবু রায় জানান, মাত্র ২০ টাকা দিয়ে এই কয়েলদানি তাঁরা বিক্রি করেন। অন্য কোন‌ও কিছুর উপর মশা মারার কয়েল জাললে বিপদের সম্ভাবনা থেকে যায়। কয়ল থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্রে আগুন লাগতে পারে। তাই এর থেকে বাঁচতে অভিনব উপায়ে মাটির তৈরি কয়েলদানি বিক্রি করছেন এই মৃৎশিল্পিরা। এতে আয় বেড়েছে।

পিয়া গুপ্তা

Idol Artists: নিম্নচাপের বৃষ্টিতে মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের, থমকে প্রতিমা গড়ার কাজ

হুগলি: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো আসন্ন। মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত প্রতিমা তৈরিতে। ইতিমধ্যেই পুজো কমিটিগুলো তাদের প্রতিমা বায়না করে দিয়েছে। সেই বায়না মত প্রতিমা সময়ের মধ্যে তৈরি করতে হবে। গত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে মহালয়া থেকে পুজো উদ্বোধন শুরু হয়ে যাচ্ছে। ফলে অতীতের তুলনায় বর্তমানে অনেক দ্রুত প্রতিমা তৈরির কাজ সেরে ফেলতে হয়। কিন্তু নিম্নচাপের বৃষ্টি ক্রমশ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মৃৎশিল্পীদের।

বৃষ্টি আর ডিভিসির ছাড়া জলে অনেক জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাতেই সমস্যায় পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। প্রতিমা শুকানো থেকে শুরু করে প্রাথমিক রং করা সবই অসুবিধার মধ্যে পড়েছে। অত্যাধিক বৃষ্টির জন্য সমস্ত কুমোর পাড়াতেই ঠাকুর যেখানে তৈরি করে রাখা হয়, সর্বত্র জলমগ্ন। তাই মৃৎশিল্পীরা বাধ্য হয়ে তাঁদের তৈরি ঠাকুর সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উঁচু যায়গায়। নাগাড়ে হয়ে চলা বৃষ্টি কমলেও মাঝে মধ্যে আকাশ কালো করে আসছে।

আর‌ও পড়ুন: হু হু করে জল বাড়ছে ভাগীরথীতে, বন্ধ হয়ে গেল ফেরি যোগাযোগ

এই বিষয়ে কোন্নগরের এক মৃৎশিল্পী জানান, বৃষ্টির জন্য ঠাকুর শুকোতে সমস্যা হয়। সেইসঙ্গে বাইরে প্রতিমা রেখে কাজ করা যায় না। বড় সমস্যায় পড়তে হয় বৃষ্টির কারণে। মাটি আসা বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে কাজের গতি অনেকটাই কমে যায়। আর কয়েকদিন পরেই দুর্গাপুজো। তার আগে বিশ্বকর্মা, গণেশ পুজোর রয়েছে। সমস্ত ঠাকুর এখন আধ কাঁচা অবস্থায়। রোদ না উঠলে বড় বিপদে পড়তে হবে, এমনটাই জানাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা।

রাহী হালদার

Durga Idol Making: এখনও সেভাবে হচ্ছে না বৃষ্টি, পুজোয় ক্ষতি এড়াতে আগেভাগে প্রতিমা তৈরির হিড়িক

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আর কয়েকমাস পরেই দুর্গাপুজো। ইতিমধ্যেই বড় বড় পুজো কমিটিগুলো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় খুঁটিপুজো হয়েছে বা হচ্ছে। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় মাথায় হাত প্রতিমা শিল্পীদের। এবার দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার বৃষ্টি এখনও ভালভাবে শুরু হয়নি। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস এবং অভিজ্ঞতা মিলিয়ে মনে করা হচ্ছে, শরৎকালটা বৃষ্টিতে ভাসতে পারে। তাই ক্ষতি এড়াতে আগেভাগে প্রতিমা তৈরির হিড়িক পড়ে গিয়েছে কুমোরপাড়া-গুলোয়।

খাতায়-কলমে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করে গেলেও এখনও সেই অর্থে বৃষ্টি হচ্ছে না। বৃষ্টি পুজোর ঠিক মুখে হতে পারে বলে মনে করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। আর সেজন্য বৃষ্টি মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন তাঁরা। প্রতিমা শিল্পীরা মাটি তৈরি করছেন ঘেরা জায়গাতেই। সেখানে আবার পাখা লাগানোর বন্দোবস্ত করছেন। সূর্যালোকে শুকনো করার পরিবর্তে বাতাস দিয়ে শুকনো করার পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

আর‌ও পড়ুন: শিশুর মানসিক বিকাশে নিউরো সায়েন্স! এবার বসিরহাটেও মিলবে সুবিধা

সেই সঙ্গে প্রতিমা শুকনো করার জন্য একরম ফ্লেম ব্যবহার করছেন। প্রতিবছর বৃষ্টির জেরে যে সমস্যা হয় তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবছর আগেভাগেই কোমড় বেঁধে নেমেছেন মৃৎশিল্পীরা। বৃষ্টি হলেও কোনও অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছেন মৃৎশিল্পী অমিয় গায়েন।

অমিয়বাবু এই এবছর ১০ টি প্রতিমা নিজে তৈরি করছেন। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, প্রতিমা তৈরির পর প্রতিমা মণ্ডপে নিয়ে যাওয়ার পথে বৃষ্টি হলেও সমস্যা নেই। তাঁরা এমন রং ব্যবহার করছেন যা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। ফলে বৃষ্টি যে এবছর প্রতিমা শিল্পীদের খুব একটা ক্ষতি করতে পারবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

নবাব মল্লিক

Artistic Siblings: শৈশবের মাধুরী মিশেছে সৃষ্টিশীলতায়, ফেলে দেওয়া নারকেলের খোলা কাজে লাগিয়ে বাজিমাত খুদে ভাইবোনের

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঁকুড়া: উল্টোরথকে কেন্দ্র করে বাঁকুড়ার দুই ভাই বোনের কাণ্ড দেখুন। নারকেলের খোলার উপরে জায়গা করে নিলেন জগন্নাথদেব। আবার জায়গা করে নিল বাচ্চাদের জনপ্রিয় কার্টুন ‘ছোটা ভীম’-এর চরিত্র চুটকি। নারকেলের খোলার উপরে জগন্নাথদেব বানালেন তারা। বাঁকুড়া জেলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ঋক গড়াই এবং তার দিদি রিকু গড়াই বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী। গড়াই ভাইবোনের বাবা মা দুজনেই চাকরিজীবী! ছোট থেকেই বাড়িতে একা থাকার সময় হাতের কাজ করে থাকে এই দু’জনে। ঘর সাজানোর জিনিস থেকে শুরু করে রঙিন ছবি কিংবা নারকেল দিয়ে জগন্নাথদেব, সবই একসঙ্গে করে থাকে দুই খুদে।

পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ঋক গড়াই বানিয়েছে একটি জাহাজ। যে জাহাজ দেখতে হুবহু পাল তোলা পুরানো দিনের যুদ্ধ জাহাজের মতো। ঋক বলেছে স্কুলের আঁকার শিক্ষক প্লেন, জাহাজ সম্পর্কে ভাল করে বোঝানোর পরেই তার নিজের মত করে জাহাজ তৈরি করার ইচ্ছা হয়। তার এই জাহাজ ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ছাত্রদের হাতের কাজের প্রতি উৎসাহ দিতে একটি মিউজিয়াম করার কথাও উঠেছে ইতিমধ্যে। এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছেন, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী এবং বাঁকুড়া জেলা স্কুলের শিক্ষক মহাদেব মুখোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন : মাটির নীচে ঘুমিয়ে কয়েকশো বছরের অতীত, ইতিহাসের টানে আসুন ঘরের কাছেই এই ঐতিহাসিক কেন্দ্রে

সমাজ পাল্টেছে। যুগ বদলে যাচ্ছে। বড় বড় শহর গুলিতে রং তুলি ছেড়ে হাতে স্মার্টফোন ধরেছে স্কুলপড়ুয়ারা। কিন্তু বাঁকুড়ায় অন্য ছবি। এখনও যে বাবা মা বাড়িতে না থাকলে আঁকার খাতা নিয়ে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা, তাদের এই জ্বলন্ত উদাহরণ হল ঋক ও রিকু। উল্টোরথের দিন নারকেলে তারা ফুটিয়েছে জগন্নাথ দেবকে। শৈশবের মাধুরী মিশিয়েছে সৃষ্টিশীলতায়।

Wood Artist: কাঠের পেঁচা ছেড়ে এই জিনিসে মন দিতেই হাল ফিরেছে নতুনগ্রামের শিল্পীদের

পূর্ব বর্ধমান: জেলার নতুনগ্রামের বেশিরভাগ মানুষই জড়িত রয়েছেন শিল্পের সঙ্গে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও যুক্ত শিল্পের সঙ্গে। বর্তমানে এই গ্রাম অনেকের কাছেই বেশ জনপ্রিয়। এখানে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে কাজে ব্যস্ত শিল্পীদের। বর্তমানে বিদেশি পর্যটকদেরও যাতায়াত বেড়েছে এই গ্রামে। এক কথায় বলতে গেলে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থেকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই জীবনযাপন করছেন গ্রামের শিল্পীরা। অনেকের কাছে এই গ্রাম শিল্পীগ্রাম হিসেবে পরিচিত, আবার বিভিন্ন জনের কাছে কাঠ পুতুলের গ্রাম নামেও পরিচিত।

তবে একসময় এখানকার শিল্পীদের তৈরি জিনিসের চাহিদা কিছুটা হলেও কমে ছিল। কারণ এখানকার সকল শিল্পী প্রথম দিকে শুধুমাত্র কাঠের পেঁচা এবং গৌর নিতাইয়ের মূর্তি তৈরি করতেন। একসময় সেই কাঠের পেঁচা, গৌর নিতাই মূর্তির চাহিদা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু মাঝখানে চাহিদা কমে যায়। তবে বর্তমানে আবার হাল ফিরতে শুরু করেছে এখানকার শিল্পীদের। আধুনিকতার যুগে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন কাঠের জিনিস তৈরি করছেন শিল্পীরা। আর বর্তমানে এই সকল আধুনিক জিনিসের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে।

আর‌ও পড়ুন: ‘দুর্বল সেতু’ লিখেই দায় শেষ! ইংরেজ আমলে তৈরি এই হেরিটেজ ব্রিজের ভবিষ্যৎ কী?

এই প্রসঙ্গে নতুনগ্রামের শিল্পী গৌরাঙ্গ ভাস্কর বলেন, আমরা এখন নিজেরা বুদ্ধি খাটিয়ে কাঠের আসবাবপত্র, ঘড়ি, টেবিল, চেয়ার, ফটো ফ্রেম, ঠাকুর রাখার দোলনা সহ আরও বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করছি। শুধুমাত্র পেঁচা তৈরি করে আমাদের শিল্পীদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আধুনিক জিনিস তৈরি করে আমাদের আবার হাল ফিরেছে। আমরা শিল্পীরা এখন ভাল আছি।

বর্তমানে এই নতুন গ্রামের খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছে গিয়েছে। এই গ্রাম একসময় ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। ছিল না কোনও জনবসতি। গ্রামবাসীদের কাছে জানা গিয়েছে, আজকের এই নতুনগ্রামে একসময় ছিল গভীর জঙ্গল। একদল কাঠুরিয়া কাঠ কাটতে এসে এই গ্রাম গড়ে তুলেছিলেন। সেই থেকেই নাম হয় নতুনগ্রাম। প্রথমে পাথরের মূর্তি গড়লেও পরে শিল্পীরা এই কাঠের শিল্পকে আপন করে নেন। বর্তমানে নেটদুনিয়ার দৌলতে নতুন গ্রামের শিল্পীদের তৈরি জিনিস পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যেও। শিল্পীদের তৈরি ঘর সাজানোর বিভিন্ন কাঠের জিনিস নজর কাড়ছে বহু মানুষের।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী

West Medinipur Artist: বাঁশি আর তোলে না সুর, অভাবের জেরে শেষমেশ এইকাজ করেন শিল্পী! জানলে চোখে জল আসবে

পশ্চিম মেদিনীপুর: সংসারে অভাব। মনে বেশ চিন্তা, তবুও বাঁশের বাঁশিতে ঠোঁট দিলেই বেজে উঠে নানা সুর। কখনও বাঁশের বাঁশিতে সুর উঠে আনন্দের, কখনও সুর বাজে বিষাদের।ছোট থেকেই শুরু লড়াই। বাঁশের বাঁশি নিয়ে জীবনের সুর তোলা শুরু, শুরু জীবন ছন্দের উত্থান পতন।

ছোট থেকে পড়াশুনা ছেড়ে লেগে পড়া বাঁশি নিয়ে। বাঁশের বাঁশি নিয়ে ধ্যান জ্ঞান। কিন্তু সংসার চালাতে ভরসা হাটে গিয়ে সবজি বিক্রি। নামের সঙ্গে লক্ষ্মী থাকলেও সংসারে লক্ষ্মীলাভে সারাদিন বেশ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় তাকে।

আরও পড়ুন: ছাদে পুড়ছে জলের ট‍্যাঙ্ক, ট‍্যাপ খুললেই বেরোচ্ছে আগুনের মত গরম জল! ৪ সহজ টিপসেই হবে কনকনে ঠান্ডা

পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় থানার রেডিপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত পাইকারা। প্রত্যন্ত গরিব পরিবার থেকে বড় হয়ে ওঠা তার। মাত্র চতুর্থ পড়ার পর বাঁশির প্রতি ঝোঁক থাকায় জীবনটা শুরু করেছিলেন বাঁশির সুরে।গ্রামেরই গুরুর কাছ থেকে তালিম নিয়ে শুরু তার বাঁশুরির জীবন। ছোট থেকে বাউলগান-সহ একাধিক সামাজিক অনুষ্ঠানে সুর তুলেছেন। রাত জেগে বিভিন্ন যাত্রাদলে নানা আবহ সৃষ্টি করেছেন লক্ষ্মীকান্ত বাবু। কিন্তু নিজের জীবনের আবহে ভাটা। সংসার চলে কোনওভাবে।

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন প্রাণীর ৭৫০ টি পা রয়েছে? ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন, আপনি জানেন কি?

ছোট থেকেই বাঁশের বাঁশি নিয়ে শুরু জীবন। বয়স যখন সবে ২০ গোড়ায়, শুরু তার কর্মজীবন। কলকাতা, হাইরোড, বেলদার বিভিন্ন যাত্রাদলে বাঁশির আবহ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে, বাঁশির সুর আর জোগাতে পারেনি সংসারের অর্থ। ফলত সংসারের চাকা ঠেলতে ভরসা বিভিন্ন হাটে হাটে গিয়ে কাঁচা সবজি বিক্রি করা।আর সঙ্গে দু’একটা সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম।সেভাবেই বছর দশকের সেই লক্ষ্মীকান্ত আজ পঞ্চাশের দোরগোড়ায়।শুধু ব্লকস্তর কিংবা জেলাস্তর নয় রাজ্যস্তরের যুব প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছেন লক্ষ্মীকান্ত বাবু, জিতেছেন পদকও।

সকাল কিংবা বিকেল হলেই তাঁকেই দৌড়তে হয় হাটে হাটে।আসলে সেই কাঁচা সবজি বিক্রির পরই জুটবে অন্নসংস্থান। লক্ষ্মীকান্ত পাইকারা চান সরকারিভাবে সাহায্য করা হোক তাকে। নিদেনপক্ষে সরকারী চাকরি। কোনও অনুষ্ঠানে যেন ডাক পান তিনি। সরকারি কোনও সাহায্য সহযোগিতা পেলে হয়ত শিল্পীর বাঁশির সুরটা বেঁচে থাকবে।

বয়সের ভারে রোগও থাবা বসিয়েছে লক্ষ্মীকান্ত বাবুর পরিবারে। ছেলে মেয়ে স্ত্রী সংসার। সেদিনের বাঁশি আজ তুলে না তেমন আবহ, সংসার জুড়ে শুধু করুণ সুর। সংসার-দারিদ্র এর মাঝেই যেন চাপা পড়ছে শিল্পীর শিল্পসত্ত্বা।

রঞ্জন চন্দ