নৌকা চালাতে ব্যস্ত অমৃত দাস মাঝি

Boatman: তিনি না থাকলে বন্ধ ঘাট পারাপার! এই মাঝির জীবন কাহিনী অবাক করবে

কোচবিহার: নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ঘাটিয়াল বলে ডাক দিলেই অন্য পাড় থেকে নৌকা নিয়ে হাজির হন তিনি। পান খাওয়া মুখে লেগে থাকে লাল দাঁতের চওড়া হাসি। তবে কোন‌ও রাগ নয়, অভিমান নয়। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা সব মরশুমেই তার একই ভূমিকায় দেখা যায় মাঝি অমৃত দাস’কে (৬১)। ৪০ বছর ধরে মানুষকে নদী পারাপার করিয়ে চলেছেন।

কোচবিহারের ২ নম্বর কালীঘাট এলাকার এই মাঝির জীবন এক অবাক করা কাহিনী বলে যায়। বছর ১৮ থেকে তাঁর এই খেয়া পারাপারের জীবন শুরু। তারপর আর বিশ্রাম মেলেনি এই কাজ থেকে। বর্তমানে তাঁর বয়স ৬১ বছর। এখনও পর্যন্ত বহু মানুষকে নদী পারাপার করিয়ে উপকার করছেন তিনি। নেন যৎসামান্য মূল্য।

আর‌ও পড়ুন: বর্ষায় এলেই এখানে নৌকার কদর বাড়ে! কীভাবে তৈরি হয়, কত দাম জানেন?

মাত্র ১০ টাকায় সাইকেল-বাইক থেকে শুরু করে মানুষ, সকলকেই পারাপার করান তিনি। বহু দিন ধরে এই খেয়া পারাপার করার ফলে এলাকার মানুষদের কাছে তিনি পরিচিত ঘাটিয়াল নামেই। বহু দুস্থ মানুষকে বিনা পয়সায় পারাপার করিয়ে দেন এই তিনি। সংসারে স্ত্রী গত হয়েছেন বহুদিন আগেই। একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন এই নদী পারাপার করিয়েই। বর্তমানে একার সংসার। তাই খুব একটা অসুবিধা হয় না সারাদিন এই কাজ করতে। গত ১০ বছর ধরে বাড়িও যান না এই কাজের জন্য।

তোর্সা পাড়ের দুই বাসিন্দা জোৎস্না দাস ও বাহারুল হক জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই এই মাঝি নদী পারাপার করছেন এখানে। একটা সময় আমার বাবাকে দেখতাম ওনার নৌকা করেই নদী পারাপার করতে। বর্তমানে আমিও করি। কোনদিন এখানের নৌকা বন্ধ থাকতে দেখিনি। সকাল ৭টা থেকে শুরু করে সন্ধে পর্যন্ত তাঁরা এই নৌকা দিয়ে মানুষেরা পারাপার করেন এখানে। ঘুঘুমারি ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে হলে অনেকটা ঘুরে চলাচল করতে হয়। এই নৌকা দিয়ে পারাপার করলে সেই সময় অনেকটাই কম লাগে।

সার্থক পণ্ডিত