পাঁচমিশালি Sea Temperature: মাথায় হাত বিজ্ঞানীদের! সমুদ্রের অস্বাভাবিক পরিবর্তন! মানুষ নয়, তবে কি শেষ কথা বলবে সমুদ্রই? Gallery June 30, 2024 Bangla Digital Desk গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিদিন সমুদ্রের তাপমাত্রার রেকর্ড করা হচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে সমুদ্র বিজ্ঞানীদের। শুধু সমুদ্র নয়, পুরো পৃথিবী কয়েক মাস ধরে উত্তপ্ত হয়ে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট রিঅ্যানালাইজার অনুসারে, ১৯৮২-২০১১ সালের তুলনায় বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা প্রায় ১.২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বেশি। এটি একটি বিশাল অসংগতি, যা আবহাওয়া এবং বাস্তুতন্ত্রের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, গত মার্চ মাসে বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ছিল ২১.০৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৬৯.৯৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কোপার্নিকাসের ডেপুটি ডিরেক্টর সামান্থা বার্গেস চলতি সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘২০২৪ সালের মার্চ মাসে ধারাবাহিকভাবে বাতাসের তাপমাত্রা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা উভয়ই জলবায়ু রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে।‘ সমুদ্রের উচ্চ তাপমাত্রা শক্তিশালী ঝড়ের শক্তি আরও বাড়ায়। সমুদ্রের অস্বাভাবিক উষ্ণতা দ্রুত ঘূর্ণিঝড় তৈরির মতো পরিস্থিতি তৈরিতে সহায়তা করে। দীর্ঘদিন ধরেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে, অন্যদিকে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো কোনও ভাবেই কমছে না। ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে পৃথিবীর উষ্ণতাও বাড়ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা বেশি থাকবে, ততক্ষণ মহাসাগরগুলো শক্তি শোষণ করতে থাকবে। এতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা চলতেই থাকবে। গবেষকরা বলছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন সম্ভবত একটি ভূমিকা পালন করছে, তবে সম্ভবত এটিই একমাত্র কারণ নয়। জলবায়ু মডেলগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অবিচ্ছিন্ন বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়, তবে এত দ্রুত নয়। এছাড়া সমুদ্রের পৃষ্ঠের তাপমাত্রাও ওঠানামা করে এবং এল নিনো ও লা নিনার মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতা দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। তাই বিজ্ঞানীরা এখনও সঠিকভাবে জানেন না কেন সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এত বেশি বেড়ে গিয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে শুরু হওয়া একটি এল নিনোর প্রভাবে কাবু হয়েছে পড়েছে বিশ্ববাসী। আবহাওয়ার স্বাভাবিক গতির পরিবর্তনের ফলেই এল নিনো হয়। তবে জলবায়ু পরিবর্তন এবং এল নিনো ছাড়াও আরও কয়েকটি কারণ তাপমাত্রার রেকর্ডে প্রভাব ফেলতে পারে। এর একটি কারণ হলো অ্যারোসল দূষণ। ২০২০ সালে কার্যকর হওয়া নতুন আন্তর্জাতিক জ্বালানি মানদণ্ড অনুসরণ করে, মহাসাগর অতিক্রমকারী কনটেইনার জাহাজ থেকে অ্যারোসল দূষণ হ্রাস করা যেতে পারে। আরেকটি কারণ হল, ২০২২ সালে জলের নিচের হুঙ্গা টোঙ্গা–হুঙ্গা হা‘পাই আগ্নেয়গিরির বিশাল অগ্ন্যুৎপাত। এই আগ্নেয়গিরিটি প্রশান্ত মহাসাগরের নীচে ডুবে যাওয়ায় এর অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বায়ুমণ্ডলের উপরের অংশে লাখ লাখ টন জলীয় বাষ্পও ছড়িয়ে পড়ে। জলীয় বাষ্প একটি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস। তবে গোটা বিষয়েই আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান বিজ্ঞানীরা।