বাঁকুড়া: মানুষের অত্যাচারে পরিবর্তন হয়েছে জলবায়ু। বর্ষা পার করে হচ্ছে অতি বৃষ্টি, আসছে বন্যা। ডুবে যাচ্ছে জনপদের পর জনপদ। এরকম পরিস্থিতিতে কী করবেন? কীভাবে পার করবেন একটি ফুঁসতে থাকা নদী? উঁচু জায়গায় আটকে থাকলে কীভাবে নিচে নেমে আসবেন? এইসব শিক্ষা সচরাচর স্কুলে দেওয়া হয় না। পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যেই মূলত আটকে থাকে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা। তবে বাঁকুড়া এক্সপ্লোরেশন নেচার অ্যাকাডেমির তরফ থেকে করানো হল এক বিশেষ প্রশিক্ষণ। মাউন্টেনিয়ারিং, রিভার ক্রসিং, মাংকি ক্রসিং এবং গ্রাপলিং-এর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হল পড়ুয়াদের।
আরও পড়ুন: রাতের শহরের নিরাপত্তায় বাড়তি নজর জেলা পুলিশের
শুনলে অবাক হবেন এই সমস্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বাঁকুড়ার এক প্রত্যন্ত বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের। ভয়কে জয় করে জিপলাইন ব্যাবহার করে একে একে ছাত্রীরা উপর থেকে নামলেন নীচে। দড়ি ধরে পার করলেন কাল্পনিক নদী। বাঁকুড়ার নাম আঁচুড়ি স্বস্তিক স্মৃতি গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নন্দিতা সরকার মেয়েদের উৎসাহ জোগাতে নিজেও করলেন রিভার ক্রসিং। প্রত্যন্ত এলাকাতে ব্রিজ ভেঙে গেলে বিদ্যালয় যেতে পারে না ছাত্রছাত্রীরা। বর্ষাকালে শিক্ষার সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দেওয়াল তৈরি করে ফুঁসতে থাকা নদী। তবে রিভার ক্রসিং পদ্ধতিতে সুরক্ষার সঙ্গে পারাপার করা যায় নদী। সেটাও শেখানো হয়েছে ছাত্রীদের।
প্রধান শিক্ষিকা নন্দিতা সরকার জানান, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মাধ্যমে মেয়েরা ভয়কে জয় করে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে। যদি কোনওদিন কঠিন পরিস্থিতি সম্মুখীন হয় তারা তাহলে পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবে। ফিজিক্যাল ফিটনেস, আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষমতা, আপৎকালীন শিক্ষা। এই সবকিছুর গুরুত্ব শুধুমাত্র সংবেদনশীল এলাকাতে বসবাসকারী মানুষদের জন্যই নয়, সকলের এগুলো জেনে রাখা প্রয়োজন।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী