শিলিগুড়ি : ট্রেনের মধ্যে আচমকাই প্রসব বেদনা। কাতরাতে শুরু করেছিলেন গর্ভবতী মহিলা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে থামানো হল ট্রেন। ট্রেনের কামরাতেই সন্তানের জন্ম দিলেন ওই মহিলা। আর তাতেই মানবিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন ট্রেনের যাত্রীরা। মা এবং সন্তান সুস্থ আছেন। রেল পুলিশ সূত্রে বিষয়টি সামনে এসেছে।
জানা গিয়েছে, ট্রেনে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বিহারের মুজফফরপুরের বাসিন্দা পূজা দেবী। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাড়ি যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে তিনি অসমের কামাখ্যা জংশন থেকে কবিগুরু এক্সপ্রেসে সওয়ার হয়েছিলেন। মুজফফরপুরে যাওয়ার পথে তিনি বুঝতে পারেন, শরীরে সমস্যা হচ্ছে। প্রসব বেদনা ওঠে তাঁর।
কবিগুরু এক্সপ্রেস শুক্রবার রাতে এনজেপিতে পৌঁছানোর মুহূর্তে তিনি প্রসবযন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠেন। তার চিৎকারের আওয়াজে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কর্তব্যরত আরপিএফের লেডি হেড কনস্টেবল সুনীতা মিঞ্জ এবং কনস্টেবল সুজাতা বর্মন ছুটে যান সেখানে। সেখানে কবিগুরু এক্সপ্রেস এর ২ নম্বর কোচের ৫৭ নম্বর বার্থের সামনে গিয়ে তাঁরা দেখেন প্রসব যন্ত্রনায় ছটফট করছেন ওই মহিলা।
দেরি না করে মুহূর্তে ফাঁকা করে দেওয়া হয় কামরাটি। জরুরি ভিত্তিতে খবর দেওয়া হয় এনজেপি রেলওয়ে হাসপাতালে। সেখান থেকে আসার ক্ষেত্রে দেরি করেননি ডাক্তার এবং নার্সরা। কোচের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে কান্নার আওয়াজ। পূজার সহযাত্রীদের মুখে তখন অনাবিল হাসি। সদ্যোজাত কন্যাকে একপলক দেখার জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যায়। যা সামাল দিতেও বেগ পেতে হয় আরপিএফকে।
তারপর সদ্যোজাত এবং তার মা-কে নিয়ে যাওয়া হয় এনজেপি রেলওয়ে হাসপাতালে। সেখানে কিছুক্ষণ রেখে প্রাথমিক কাজ শেষ করার পর পাঠিয়ে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিউরিটি কমিশনার রজত কুন্দাকর বলছেন, ‘সমস্ত কিছু করা হয়েছে চরম ব্যস্ততার মধ্যে। মা এবং সদ্যোজাতকে এনজেপি রেলওয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে। তবে আমাদের তরফে তো একটা নাম দেওয়া হবেই। আর এক্ষেত্রে অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বা নাম খোঁজা হবে।’
অনির্বাণ রায়