তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুর তথা তমলুকের অধিষ্ঠাত্রী দেবী বর্গভীমা মা। পুরানে বর্ণিত দেবী বর্গভীমা ৫১ সতী পীঠের একপীঠ। বছরের প্রতিদিন চিরাচরিত প্রথা মেনে মায়ের পুজোপাঠ, ভোগ দেওয়া ও বিশ্রাম হয়। প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে শুরু হয় দেবী পুজো দুপুরে ভোগের পর বিশ্রাম আবার বিকেল তিন’টে থেকে রাত্রি আট’টা পর্যন্ত পুজো হয় তারপর বিশ্রাম। তবে এবার দুর্গা পুজোয় এই চিরাচরিত প্রথা ভেঙে ভোররাতে ঘুম ভাঙিয়ে পুজো দেবী বর্গভীমার। দুর্গা পুজোর অদ্ভুত নির্ঘণ্টের কারণে সময়ের আগে বিশ্রাম ভেঙে দেবী বর্গভীমা মাকে জাগিয়ে তোলা হবে ভোর রাতে। তারপর শুরু হবে পুজোপাঠ।
পুরাণে বর্ণিত ৫১ পীঠের অন্যতম পীঠ দেবী বর্গভীমা মন্দির। সারা বছরই দেবী উগ্র তারা রূপে পূজিত হন। তবে দুর্গাপুজোর চারদিন দেবী বর্গভীমা মাকে দুর্গা রূপে পুজো করা হয়। বাঙালির বড় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়ে গিয়েছে, ইতিমধ্যেই তারই প্রস্তুতি চলছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন ও পুরানে বর্ণিত ৫১ সতী পীঠের এক পীঠ দেবী বর্গভীমা মন্দিরে।
আরও পড়ুনঃ পুজোয় ডেস্টিনেশন হোক কলকাতার অদূরের এই জায়গা, একবার পৌঁছলে ফিরতে মন চাইবে না
চলতি বছর দুর্গাপুজোর নির্ঘন্ট অন্যরকম হওয়ায় চারদিন সাধারণত সকাল ছ’টায় মন্দির খোলা হয়। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম। ভোররাতে মাকে জাগিয়ে শুরু হবে পুজো। সেই কারণে শুধু তমলুক শহর নয় দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা যাতে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে সেই কারণে সারারাত খোলা থাকবে মন্দিরের মুল গেট।
আরও পড়ুনঃ ঘুরে আসুন পাহাড়ি এই গ্রামে! প্রতি হোমস্টে থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ, মুগ্ধ হবেন
ষষ্ঠীর দিন সকালে তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি থেকে বর্গভীমা মায়ের মন্দিরে রাজবাড়ির তরোয়াল, অধিবাস সামগ্রী এবং তিনটি পাঁঠা নিয়ে আসা হয়। তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ীর দেওয়া অধিবাস সামগ্রী দিয়ে শুরু হয় মায়ের পুজো। বর্গভীমা মন্দিরের পুরোহিত পুষ্পেন্দু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘সারা বছর ধরে রাতে মায়ের যেভাবে ভোগ দেওয়া হয় দুর্গা পুজোর কটা দিন রাত্রি সাড়ে আটটার মধ্যে ভোগ নিবেদন করা হবে। তারপরই মাকে বিশ্রাম দিতে হবে। ভোররাতে মায়ের ঘুম ভাঙ্গিয়ে স্নান করিয়ে রাজ বেশে সাজানো হবে। তারপরে মঙ্গল আরতি করে পুজো শুরু হবে।’
এবারে দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্টের পরিবর্তন হওয়ার ফলে ভক্তদের আসতে হবে রাত থেকে। মন্দিরে ভক্তের আনাগোনা রাত থেকে হওয়ায় যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই কারণেই আগেভাগেই মন্দির কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান মন্দির কমিটির সম্পাদক শিবাজী অধিকারী।
সৈকত শী