মণ্ডপ সজ্জার কাজে মগ্ন চিত্রকর দম্পতি

Durga Puja 2024: হংকঙের পুজোমণ্ডপ সাজবে বাংলার পটচিত্রে, ব্যস্ততা তুঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের পটশিল্পী দম্পতির

সৈকত শী, চণ্ডীপুর: বাংলার অন্যতম লোকসংস্কৃতির ধারক ও বাহক পটচিত্র এ বার বিদেশের দুর্গাপুজোয় মণ্ডপসজ্জায় ফুটে উঠবে। হংকংয়ে একটি দুর্গাপুজোর মণ্ডপ সজ্জিত হবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর ব্লকের হবিচক গ্রামের পটশিল্পীদের শিল্পকলায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রামের পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলায় বেশ কয়েকটি অঞ্চলে চিত্রকরদের বাস। তাদের মধ্যে অন্যতম উল্লেখ্যযোগ্য হল চণ্ডীপুর ব্লকের হবিচক গ্রাম। এই গ্রাম পটচিত্রের জন্য বিখ্যাত। এখানকার চিত্রকরেরা জাতীয় ও রাজ্যস্তরে নানা পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন। এমনকি বিদেশের মাটিতেও বাংলার লোকসংস্কৃতির ধারক বাহক পটশিল্প এবং পটের গান পরিবেশন করেছে। এবার তাদের শিল্পকলা স্থান পাবে বিদেশের দুর্গামণ্ডপসজ্জার কাজে।

প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় পটশিল্পী বা চিত্রকরদের ডাক পড়ে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ সজ্জার কাজে। মূলত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দুর্গাপূজার মণ্ডপ সজ্জার সঙ্গে যুক্ত থাকেন চণ্ডীপুরের এই এলাকার চিত্রকররা। তবে এবার রাজ্য ও দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের দুর্গাপুজোয় ফুটে উঠবে চিত্রকরদের পটশিল্প। সারা বছর পট আঁকা ও গান বাঁধার পাশাপাশি জলের বোতল থেকে ঘর সজ্জার নানান জিনিস এমনকি পোশাক আশাকেও পটশিল্প ফুটিয়ে তোলে নিজেদের রোজগারের তাগিদে কিংবা এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে। সম্প্রতি কয়েক বছর এই পটশিল্পের চাহিদা বেড়েছে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ সজ্জায়। শুধু জেলায় নয় রাজ্যে নয় এবার বিদেশেও পটশিল্পের কদর বাড়ছে।

আরও পড়ুন : পাঁচ শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাপুজোয় দেবীর মূর্তি নির্মাণে বিশেষ প্রথা! প্রয়োজন বিশেষ এলাকার মাটি

পটচিত্রের কদর বিদেশের পুজোর সাজে। দক্ষিণ চিন সাগরের উপকূলে হংকংয়ের বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের পুজোর মণ্ডপ এবার সেজে উঠবে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের পটচিত্রে। পুজোর প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। মণ্ডপ সজ্জা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে গিয়ে তাঁদের মাথায় আসে বাংলার পটচিত্রের কথা। কাজের বরাত পেয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর থানার হবিচক গ্রামের আবেদ চিত্রকর। তাঁর স্ত্রী সায়েরা চিত্রকর পটচিত্র ও পটের গান নিয়ে গতবার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বিশ্ব লোকগীতির আসরে হাজির ছিলেন। স্বামীর সঙ্গে এই কাজে হাত লাগিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে আবেদ চিত্রকর জানান, ‘প্রতিবছর পুজোর সময় পুজো মণ্ডপ সজ্জার জন্য ডাক বা বরাত আসে। এবার বিদেশের একটি পুজো মণ্ডপে কাজ করার সুযোগ মিলেছে। হাতে আঁকা পটশিল্প ফুটে উঠবে হংকং এর বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপুজোর মণ্ডপে। সেই কাজ চলছে।’ বর্তমানে দিনরাত এক করে ২০০ টি পাখা ও ১০০ টি কুলোর উপর সপরিবারে মা-দুর্গার পট আঁকছেন তাঁরা। দিন সাতেক আগে কাজের বরাদ পেয়েছেন আবেদ। পাখা ও কুলো জাহাজে এসে নিয়ে যাবেন পুজো উদ্যোক্তারা। বাকি কাজও দ্রুত শেষ করতে হবে। তাই কাজের চাপে এখন দম ফেলার ফুরসৎ নেই চিত্রকর দম্পতির।