সুস্মিতা গোস্বামী, দক্ষিণ দিনাজপুর : প্রতিটি বাঙালির রান্নাঘরে স্বাদ ও স্বাস্থ্যের চাহিদা মেটাতে মাছ, ডিমের পাশাপাশি থালায় সাজানো থাকে তিতো সবজিও। তবে এই সবজি খেতে ভালবাসেন না অনেকেই। কিন্তু, স্বাস্থ্যের জন্য পাতে থাকা খুবই প্রয়োজন। আবার রোজকার একঘেয়ে পাঁচমিশালি সবজি মুখে রোচে না অনেকেরই। তবে সেই রোজকার সবজিতেই যদি একটু টুইস্ট আনা যায়, তাহলে কিন্তু মন্দ হবে না। সেরকমই পুরনো দিনের মা-ঠাকুমাদের হাতের একটি রান্নার রেসিপি করলার চাপড় ঘণ্ট। কীভাবে বানাবেন করলার এই চাপড় ঘণ্ট, জানুন।
প্রথমেই পরিমাণ মতো মটরডাল আগে থেকে উষ্ণ গরম জলে বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে এতে ডাল অনেকটাই নরম হয়ে যাবে। এরপর ডাল থেকে জল ঝরিয়ে নিয়ে ডালটা একটা মিক্সি জারে ঢেলে দিয়ে উপর থেকে সামান্য জল দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে মিশ্রণটি যেন খুব পাতলা না হয়।
এরপর ডালের মিশ্রণটি একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে তাতে বেশ কিছুটা পরিমাণ নুন, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কার গুঁড়ো ও সামান্য চিনি দিয়ে হাতের সাহায্যে মিশ্রণটি বেশ ভালভাবে ফেটিয়ে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে ডাল যেন দানা দানা হয়ে না থাকে। এবার কড়াইতে সামান্য সর্ষের তেল দিয়ে হালকা নেড়ে নিয়ে তাতে ডালের মিশ্রণটি দিয়ে হাতের সাহায্যে চেপে চেপে দিতে হবে। এক পাশ ভাল মত ভাজা হয়ে গেলে কয়েকটা টুকরো করে আবার উল্টে পাল্টে বড়ার আকারে ভেজে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে ডালের বড়াগুলো মাঝারি হয়।
আরও পড়ুন : মণ্ডপসজ্জায় ফেলুদা-তোপসে-জটায়ুর সঙ্গে মগনলাল-মছলিবাবা-মন্দার বোস! দুর্গাপুজোয় মগজাস্ত্রের উদযাপন
অপরদিকে আবারও কড়াইতে পরিমাণ মতো সর্ষের তেল গরম করে তাতে মেথি ফোড়ন দিয়ে বেশ কয়েকটা চেরা কাঁচালঙ্কা দিয়ে নেড়ে নিয়ে ঝিরি ঝিরি করে কাটা আলু দিয়ে দিতে হবে। হালকা লাল হয় এলে এরপর তাতে ঝিরিঝিরি করে কেটে নেওয়া করলা দিয়ে ভালভাবে নেড়ে চেড়ে নিতে হবে। এবারে উপর থেকে সামান্য নুন ও হলুদ দিয়ে হালকা উপর নীচ করে একটা পাত্র দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। বেশ কিছুক্ষণ পর ঢাকা তুললে দেখা যাবে বেশ ভাজা ভাজা হয়ে এসেছে। এরপর তাতে সামান্য চিনি দিয়ে নেড়েচেড়ে নিয়ে আগে থেকে ভেজে রাখা ডালের বড়াগুলো দিয়ে বেশ ভালভাবে করলার সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে ডালের বড়া গুলো একটু হাতের সাহায্যে ভেঙে ভেঙে দিতে হবে। যাতে সহজেই করলার সঙ্গে ভালভাবে মিশে যায়। সবশেষে ওপর থেকে সামান্য আদাবাটা ও বেশ কিছুটা পরিমাণ ঘি ঝরিয়ে নেড়ে-চেড়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি গরমাগরম করলার চাপড় ঘন্ট। দুপুর হোক বা রাত ঠাকুমার হাতে তৈরি পুরনো যুগের এই এক বাটি করলার চাপড় ঘণ্টর সঙ্গে সাফ হবে আপনার প্লেটের খাবার।