দেবী দুর্গার মুখমণ্ডল শুকনো করতে দেওয়া হয়েছে।

Durga Puja 2024: বর্ষার মাঝেই কুমোরপাড়ায় শারদোৎসবের প্রস্তুতি, জানুন কীভাবে তৈরি হয় মৃ্ন্ময়ীর মুখাবয়ব

নয়ন ঘোষ, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান : এগিয়ে আসছে পুজো। ততই আনন্দ বাড়ছে উৎসব প্রিয় বাঙালির মনে। যে সমস্ত বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়, সেখানে ঠাকুরদালানে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। কাঠামোয় মাটি পড়েছে ইতিমধ্যেই। আবার মৃৎশিল্পীরা নিজেদের ওয়ার্কশপ অর্থাৎ কুমোরটুলিতে চরম ব্যস্ততা এখন। কাঠামো থেকে মৃন্ময়ী রূপ পাওয়া পর্যন্ত ধাপগুলি প্রায় আমাদের সকলেই জানা। প্রথমে মাটি দেওয়া। তারপর রংয়ের প্রলেপ। সবশেষে সাজসজ্জা এবং ফিনিশিং টাচ।

কিন্তু কীভাবে তৈরি হয় প্রতিমার মুখাবয়ব? এই মুখ তৈরি করতে কী পদ্ধতি ব্যবহার করেন শিল্পীরা? কতটা সময় তার জন্য ব্যয় করতে হয়? মুখমণ্ডল তৈরিতে কি কোনও বিশেষ মাটির ব্যবহার হয়? জানিয়েছেন এক প্রবীণ মৃৎশিল্পী। তিনি বলছেন, বেশিরভাগ মানুষের ধারণা ছাঁচে বসিয়ে দেবী মূর্তির মুখ তৈরি হয়। এটা অবশ্যই ঠিক। কিন্তু তার আগে এই ছাঁচ শিল্পীদের নিজের হাতে তৈরি করতে হয়।

তিনি বলছেন, এই মুখমণ্ডল তৈরির জন্য সময় দিতে হয় অনেকটা। মুখমণ্ডলের ছাঁচ তৈরি করতে এক বেলা থেকে শুরু করে গোটা একটা দিন পর্যন্ত লাগতে পারে। মুখমণ্ডল তৈরি করতে এক বিশেষ ধরনের মিহি বেলে মাটি এবং এঁটেল মাটির ব্যবহার করা হয়। তারপর নিখুঁতভাবে তৈরি করতে হয় মুখমণ্ডল। প্রতিমার মুখমণ্ডল ঠিক না হলে প্রতিমার সৌন্দর্য নষ্ট হতে পারে। তাই এই দিকে বিশেষ নজর থাকে শিল্পীদের। তারপর একই ধরনের মুখাবয়ব তৈরি করতে প্লাস্টার প্যারিসের সাহায্যে ছাঁচ তৈরি হয়।

আরও পড়ুন : মহানন্দার পাশে পড়ে আছে নীলচাষের প্রাচীন উনুন, পরিত্যক্ত নীলকুঠিতে কান পাতলেই শোনা যায় অত্যাচারিতদের কান্না

প্রবীণ শিল্পী অনাথ পাল বলেছেন, ‘‘প্রতিমার কাঠামো তৈরি করতে যতটা সময় দিতে হয়, ঠিক ততটাই ধৈর্য প্রয়োজন হয় মুখাবয়ব তৈরি করতে। ছাঁচের ওপর বসিয়ে মুখাবয়ব তৈরি করতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে। তারপর সেটা শুকনো করতে দিতে হয়। সেগুলিকে রাখতে হয় বিশেষ ভাবে যত্ন করে। পুরনো ধাঁচের অথবা আধুনিক-দুই ধরনের মূর্তির মুখমণ্ডল তৈরি করার পদ্ধতি প্রায় একই। প্রতিমা তৈরির কারখানায় একদিকে যেমন কাঠামো তৈরি হয়, তেমনভাবেই এই সময় একাধিক মুখমণ্ডল তৈরি করে রাখতেও ব্যস্ততা থাকে।