শ্রীরামপুর রাজবাড়ির ছবি

Durga Puja 2024: ঠাকুরদালানে ৩৫০ বছরের এই দুর্গাপুজো প্রিয় ছিল সত্যজিৎ থেকে উত্তম-সুচিত্রার

রাহী হালদার, হুগলি: শ্রীরামপুরের গোস্বামী বাড়ির দুর্গাপূজা, প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন এই বনেদি বাড়ির পুজো। বৈষ্ণব মতে দেবী দশভুজার পুজোপাঠ হয়। রীতি মেনেই দুর্গা পুজোর ঠাকুর দালানে এক চালার ঠাকুর পুজো হয়। এক সময় এই পুজতেই চারদিন ভিয়েন বসত। পাত পড়ত সকলের জন্য। পালাগানের আসর বসত রাতভোর। এখন আর সেই জৌলুস নেই। তবে রীতি মেনে পুজো হয়। কুমারীপুজো থেকে সন্ধিপুজো-নিয়মনিষ্ঠার খামতি থাকে না। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের পর কাঠামো থেকে যায় বছর বছর। জাঁকজমক কমেছে আগের তুলনায়, তবে নিয়ম নিষ্ঠা এখনো আছে আগের মতোই।

শ্রীরামপুরের গোস্বামী বাড়িকে সিনেমায় দেখেছেন অনেকেই। ভূতের ভবিষ্যতের কথা মনে আছে? সেইখানে ভুতেদের যে বাড়িটি ছিল সেটি হলো হুগলি শ্রীরামপুরের গোস্বামীবাড়ি। শ্রীরামপুর শহরের মধ্যে এটি শ্রীরামপুর রাজবাড়ী নামেও বিখ্যাত। সুবিশাল বৃহৎ এই অট্টালিকার তৈরির পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস।নবাব আলিবর্দির খাঁ-এর শাসনকালীন ঘটনা। কথিত, পরিবারের পূর্বপুরুষ রামগোবিন্দ গোস্বামী একদিন পাটুলি থেকে গঙ্গাবক্ষে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তাঁর স্ত্রী মনোরমা দেবীর প্রসববেদনা ওঠে। তাই শ্রীরামপুরে থামতে বাধ্য হন।

নৌকা থেকে নামার পর শ্রীরামপুর তাঁর খুব পছন্দ হয়। সে সময়কার শেওড়াফুলির রাজা মনোহর রায় জানতে পেরে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করেন। রামগোবিন্দ দুর্গাপুজো শুরু করেন যা ‘বড় বাড়ি’ নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে রামগোবিন্দর নাতি হরিনারায়ণ গোস্বামীর আমলে পরিবার ভাগ হয়। তিনি ও তাঁর পুত্র রঘুরাম গোস্বামী চাতরায় বিশাল অট্টালিকা তৈরি করেন। বিরাট নাটমন্দির, ঠাকুর দালান তৈরি হয়, সেখানেই শুরু হয় দুর্গা পুজো। সত্যজিৎ থেকে উত্তম সুচিত্রা-বাংলা চলচ্চিত্রের তাবড় নক্ষত্রের পছন্দ ছিল এই রাজবাড়ির দুর্গাপুজো।

আরও পড়ুন : রুগ্ন শিল্প বাঁচাতে প্রয়াস, নদিয়ার গর্ব তাঁতের ধুতি-কাপড়েই সেজে উঠছেন দশভুজা ও তাঁর সন্তান সন্ততি

বর্তমানে, পারিবারের অনেকেই বিদেশে থাকেন। তবে পুজোতে সবাই নিজের বাড়িতে আসার চেষ্টা করেন। তবে যাঁরা আসতে পারেন না, তাঁদের জন্যই প্রতিবছর সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং করা হয় গোস্বামী বাড়ির ফেসবুক পেজ থেকে। যাতে দূরে থেকেও আপনজনরা পুজোর আনন্দ একইভাবে অনুভব করতে পারে।