বাঁকুড়া: দেখুন বিষ্ণুপুরের এক মেয়ে তৈরি করছেন দশাবতার গয়না। দশাবতার গয়না আসলে কি? বিষ্ণুপুরের দশাবতার তাস একটি অদ্ভুত সৃষ্টি। সুতির কাপড়কে তেঁতুল বীজের আঠার সঙ্গে মিশিয়ে শুকিয়ে গোল চাকতির মতো করে কেটে চাকতির উপর রাখা হয় বিষ্ণুর দশ অবতারকে। এরকম একটি পুরো সেটকে বলে দশাবতার তাস। এবার সেই তাস জায়গা পাচ্ছে গয়নায়। গলার হার এবং কানের দুল, একদম ম্যাচ করা সেট।
মোগল ইতিহাস এবং বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্য। দুর্গাপুজোকে উপলক্ষ করে তৈরি করা হচ্ছে এই গয়না। তৈরি করছেন বিষ্ণুপুরের শিল্পী শিল্পা সূত্রধর। দুর্গাপুজোর আগে মার্কেটের ট্রেন্ড ধরতে এমন নতুনত্ব একটা আইডিয়া নিয়ে আসেন শিল্পা। শিল্পা বলেন যে এই গয়নাগুলি তিনি দশবতার তাস যেভাবে তৈরি হয় ঠিক সেভাবেই তৈরি করেছেন। সেট গুলি তৈরি করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মার্কেটিং করেন শিল্পা। এরপর অর্ডার অনুযায়ী বিক্রি করে থাকেন রাজ্যের বিভিন্ন অংশে।
আরও পড়ুন- বলুন তো, এমন কোন প্রাণী দুধ ও ডিম দু’টোই দেয়? ৯৯ শতাংশই উত্তর দিতে গিয়ে ডাহা ফেল! আপনি কি জানেন?
শিল্পা সূত্রধর বলেন, পুজোর আগে বিষ্ণুপুরের ক্লাসিক দশাবতার তাসের গয়নাগুলির চাহিদা দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী পারদের মতো বাড়ছে। এক একটি সেট প্রায় ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন শিল্পা। তবেই দাম আলোচনা সাপেক্ষ। দশাবতার তাস তৈরি করতে যা যা ব্যবহার করা হয় ঠিক সেই উপকরণ ব্যবহার করি তৈরি করছেন তিনি, ফলে বিষ্ণুপুরি ঘরানার মধ্যে কোনও পরিবর্তন আনছেন না এই শিল্পী। ঘোড়া নাকি সম্মান জানিয়ে আধুনিক নারীদের জন্য তৈরি করেছেন এই গয়না।
আরও পড়ুন- বলুন তো, এমন কোন প্রাণী দুধ ও ডিম দু’টোই দেয়? ৯৯ শতাংশই উত্তর দিতে গিয়ে ডাহা ফেল! আপনি কি জানেন?
“ইভোলিউশন” বলে একটা কথা আছে, যার অর্থ হল বিবর্তন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিল্পী শিল্পাও যেন বিবর্তন করলেন। মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে ঠিক দুর্গাপুজোর আগে নিজের শহরের অন্যতম বিশেষ শৈল্পিক ঘরানাকে ফুটিয়ে তুলেছেন গয়নার সেটে। যাতে সাধারণ মানুষের হাত ধরে আরও পৌঁছে যাবে দশাবতার তাসের অনন্য গল্প।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী