মাদুর বুনছেন গণেশ বাবু

Bangla Video: চাকরির পরীক্ষায় পাশ করেও মেলেনি সুযোগ, মাদুর বুনে টিকে আছেন প্রতিবন্ধী গণেশ

পশ্চিম মেদিনীপুর: জীবনে বেঁচে থাকার জন্য কতটা লড়াই’ই না লড়তে হয়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান থাকলেই তো আর শুধু বেঁচে থাকা হয় না। বেঁচে থাকার জন্য চাই মনের জোর। দু’পা অকেজো, হাতের উপর ভর করে চলে তাঁর যাতায়াত। এভাবেই ছোট থেকে প্রবল পরিশ্রম করে স্নাতক হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং-এর যুবক গনেশ চন্দ্র ঘাঁটা।

জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে বেশ কয়েকবার সরকারি চাকরির পরীক্ষাও দিয়েছেন, যদিও সুযোগ আসেনি। প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া সরকারি কিংবা বেসরকারি তরফে তেমন কোনও সাহায্য সহযোগিতা পান না। বাধ্য হয়ে জীবন চালাতে মাদুর বোনেন শিক্ষিত এই যুবক। আর অল্প কিছু ছাত্র পড়িয়ে চলে জীবন যাপন। জীবনের লড়াইয়ে তাঁর প্রতিদিনের সংগ্রাম যে কারোর চোখে জল নিয়ে আসবে।

আর‌ও পড়ুন: সুন্দরবনের অসহায় মৎস্যজীবী ও মৌলেদের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিল এরা!

ছোট থেকেই লড়াই করে বড় হয়ে ওঠা, করেছেন উচ্চশিক্ষা। দু’বার চাকরির পরীক্ষায় পাস করলেও মেলেনি চাকরি। কেলেঘাই নদীর পাড়ে সবং-এর প্রত্যন্ত গ্রাম নঁওগা। সেই গ্রামেই বাড়ি গনেশ চন্দ্র ঘাঁটা’র। আর পাঁচটা সুস্থ স্বাভাবিক শিশুর মতই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু বছর পাঁচ বয়সে এক অজানা জ্বরে আক্রান্ত হন। তার পর‌ই তাঁর দু’পা অকেজো হয়ে যায়। তখন থেকেই হাতের উপর ভর করে চলাচল শুরু হয়। নিম্নবিত্ত পরিবারের পক্ষে উন্নতমানের চিকিৎসার খরচ চালানো সম্ভব ছিল না।

প্রতিকূলতা, শারিরীক প্রতিবন্ধকতাকে নিত্যসঙ্গী করে জীবন যাপন করছেন তিনি। সাহায্য সহযোগিতা তেমন কিছু পাননি তিনি। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে নিজের জীবন চালাতে এখন ভরসা মাদুর কাঠি দিয়ে মাদুর বোনা। আর সামান্য কটা টিউশন করে নিজের সারাদিনের রোজগার করা। বছর ৩৮-এর গনেশবাবু বেশ কয়েক বছর আগে হারিয়েছে বাবা-মা’কে। ফলে এক অজানা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের গর্ভে এই প্রতিভাবান লড়াকু মানুষের জীবন।

রঞ্জন চন্দ