মালদহ: একের পর এক বাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গায়। নিমেষে বিলিন হয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি থেকে বসত বাড়ি। এবার ভাঙনের মুখে দিয়ারা অঞ্চলের একমাত্র হাইস্কুলটিও। চিন্তিত পড়ুয়া থেকে শিক্ষকেরা। একসময় গঙ্গা থেকে এই স্কুলের দূরত্ব ছিল প্রায় ৩০ কিলোমিটার। কিন্তু ভাঙনের জেরে সেই দূরত্ব কমতে কমতে এখন দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। মাত্র ২০০ মিটার দূরে অবস্থান করছে গঙ্গা।
এদিকে ভাঙন হচ্ছে প্রতিবছর। আগামী দুই থেকে এক বছরের মধ্যে এই স্কুল গঙ্গায় বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মালদহের এই স্কুলের পড়ুয়া রিয়া সাহা বলেন, আমরা আতঙ্কে রয়েছি। আমাদের স্কুলের দিকে গঙ্গা এগিয়ে আসছে। গঙ্গার ভাঙনে স্কুল তলিয়ে গেলে আমরা কোথায় পড়াশোনা করব?
আরও পড়ুন: চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে রোগী দেখলেন হাসপাতালের সুপার
মালদহের রতুয়া-১ নম্বর ব্লকের দিয়ারা অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কাটাহা দিয়ারা হাইস্কুল। স্কুলটি স্থাপিত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। এলাকার একমাত্র স্কুল এটি। এখান থেকে পড়াশোনা করেছে দিয়ারা অঞ্চলের অনেকেই বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত হয়েছেন। এমনকা রতুয়ার বিধায়কও এই স্কুল থেকেই পড়াশোনা করেছেন। এই এলাকায় গঙ্গা ভাঙন গত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
এক সময় গঙ্গা বিহারের রাজমহল পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে বয়ে যেত। ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করায় ক্রমশ স্কুলের দিকে এগিয়ে আসছে গঙ্গা। একের পর এক গ্রাম বিলীন হয়ে বর্তমানে স্কুল থেকে গঙ্গার দূরত্ব মোটে ২০০ মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে স্কুল বাঁচানোর অপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ থেকে গ্রামের বাসিন্দারা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক পলাশ মুখার্জি বলেন, হঠাৎ ভাঙনের মুখে পড়লে স্কুলের পুরনো সমস্ত নথি নষ্ট হয়ে যাবে। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। স্কুলটি গঙ্গায় বিলীন হলে দিয়ারা অঞ্চলের মানুষ সমস্যায় পড়বেন।
এই অঞ্চলের পড়াশোনার একমাত্র ভরসা এই স্কুল।স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২৭০০। দীর্ঘ প্রায় ৭৫ বছরের নথি রয়েছে স্কুল অফিসে। গঙ্গা ভাঙনের কবলে পড়ে এই স্কুল বিনিল হলে নথিপত্র সমস্ত কিছুই নষ্ট হয়ে যাবে। এই অঞ্চলের বর্তমান থেকে শুরু করে বিগত দিনের পড়ুয়ারা নানান সমস্যায় পড়বেন। স্কুলের খুব কাছে গঙ্গা এগিয়ে আসায় স্কুল বাঁচানোর আর্জি কর্তৃপক্ষের।প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে স্কুলের পক্ষ থেকে আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। ফলে আতঙ্কে স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে গ্রামের বাসিন্দারা।
হরষিত সিংহ