Tag Archives: River erosion

Bangla Video: জল উঠছে নদী বাঁধের কাছে, আতঙ্কে সুন্দরবন

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: হঠাৎ নদী ও সমুদ্রের জল ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। সেই জল চলে আসছে নদীবাঁধের গোড়ায়। ফলে আলগা হচ্ছে নদীবাঁধের মাটি। যার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সুন্দরবনের বাসিন্দাদের মধ্যে।

কাকদ্বীপের সাতের ঘেরি এবং সাগরদ্বীপের চকফুলডুবি এলাকায় নদীবাঁধের মাটি ধসে নীচে নেমে গিয়েছে। সম্পূর্ণ বাঁধ না ভাঙলেও একটু একটু করে ক্ষতি হচ্ছে বাঁধ। আর তাতেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে স্থানীয়দের মধ্যে। ফলে জোয়ার এলেই এলাকাবাসীরা বাঁধের উপরে ভিড় করছেন। এছাড়াও ধস নামায় নদী বাঁধ লাগোয়া একাধিক জায়গায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন এলাকার মানুষ।

আরও পড়ুন: ভোটের আগে কী কী দাবি জঙ্গলমহলের মানুষের?

এমনিতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জেরে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকায়। যার ফলে আগেই নদীর জল বাড়ার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছিল। সেই অনুযায়ী জলও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নদীর জল বৃদ্ধির সঙ্গে বাঁধের ক্ষতি হওয়ায় আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। বাঁধের ক্ষতি রুখতে ইতিমধ্যে স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তবুও ভয় কাটছে না মানুষের।

নবাব মল্লিক

Lok Sabha Election 2024: ‘গনি’ মিথ আজ‌ও অটুট? মালদহ দক্ষিণে গঙ্গা ভাঙন ইস্যুর সঙ্গেই চলছে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা

মালদহ: আজও কি বরকত গনি খান চৌধুরীর নামে ভোট হয় মালদহে? গনি পরিবারের খাসতালুক বলে পরিচিত দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রে এবার তারই যেন লিটমাস টেস্ট। তবে তারই পাশাপাশি এই কেন্দ্রে প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে গঙ্গা ভাঙন ও তাতে বিপর্যস্তদের পুনর্বাসনের বিষয়টি।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আট হাজারের সামান্য কিছু বেশি ভোটে জিতে কোন‌ওরকমে গনি খানের ‘গড়’ রক্ষা করেছিলেন তাঁর ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী। তবে এবার বর্ষীয়ান আবু হাসেম ওরফে ডালুবাবু প্রার্থী হননি। পরিবর্তে গনি খানের তালুক রক্ষার দায়িত্ব এসে পড়েছে ঈশা খানের কাঁধে। যিনি সম্পর্কে ডালুবাবুর ছেলে। অবশ্য ইশা খান এর আগে মালদহের সুজাপুর বিধানসভার বিধায়ক ছিলেন। যে বিধানসভা থেকে প্রথমবারের জন্য নির্বাচিত হয়ে রাজ্য বিধানসভায় গিয়েছিলেন গনি খান।

আর‌ও পড়ুন: ‘দিলীপকে দেখেই রাজনীতিতে আসা’, ঘোষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সুকান্ত

দক্ষিণ মালদহ লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভাগুলির সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে নদী ভাঙন। গত কয়েক বছর ধরে গঙ্গা নদী যেন তার ভাঙনের তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে প্রতিবছর বর্ষাকালে বহু মানুষকে নতুন করে ভিটেমাটি হারাতে হচ্ছে। তাই এখানকার বাসিন্দারা চাইছেন, সবার আগে ভাঙন বিপর্যস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক। সেই সঙ্গে গঙ্গা নদীর ভাঙন ঠেকাতে সামগ্রিক পরিকল্পনা করে গোটা এলাকা জুড়ে কংক্রিটের বাঁধ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন অনেকে।

এই নদী ভাঙন ইস্যুতে একে অপরকে নিশানা করে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে এবার জমজমাট ত্রিমুখী লড়াই দেখা যাচ্ছে। বিজেপি এবারেও প্রার্থী প্রার্থী করেছে গতবারের পরাজিত শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে। শেষ বাজি কোন পক্ষ মারবে তা ৪ জুন ভোট গণনার আগে বলা কঠিন।

দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৭ লক্ষ ৮২ হাজার। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে এই লোকসভা আসন। এরমধ্যে দুটি বিধানসভা মুর্শিদাবাদের। দক্ষিণ মালদহের গড় ধরে রাখার জন্য মুর্শিদাবাদের অন্তর্গত দুটি বিধানসভার উপর প্রবল ভরসা করছে কংগ্রেস। সেই সঙ্গে এই ভোটেই ঠিক হয়ে যাবে আজও গনি খানের নামে মালদহের মানুষ ভোট দেয় কিনা।

হরষিত সিংহ

River Dam Guard: নদীর পাড়ে জড়ো হয়ে রোজ সকাল-সন্ধে ওরা কী করেন!

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: শুরু হয়েছে বাংলার প্রথম মাস বৈশাখ। এরপরই ক্রমান্বয়ে আসবে জৈষ্ঠ্য ও আষাঢ়মাস। আর সেজন্য চিন্তায় ঘুম উড়েছে কুলপির হাঁড়া গ্রামের বাসিন্দাদের। নদীর পাড়ে এক হয়ে এখন থেকেই সকাল, বিকাল ও সন্ধে নিয়ম করে পাহারা দেন তাঁরা।

কিন্তু কেন? স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জৈষ্ঠ্য-আষাঢ়মাসে নদী ফুলে ওঠে। নদীর পাড় টপকে জল চলে আসে গ্রামে। সেজন্য এখন থেকেই তাঁদের নজর রাখতে হচ্ছে বাঁধের উপর। জল বাড়লেই খবর দিতে হয় গ্রামে। বিপদ ঘনিয়ে এলে সবাই চলে আসেন বাঁধের উপর। এই একটি বাঁধই ভরসা গ্রামবাসীদের। আগে একাধিকবার হাঁড়া গ্রামে ঘটেছে বাঁধ ভাঙার মত ঘটনা। অতীতের সেই দুঃখজনক ঘটনার পুনাবৃত্তি এড়াতেই গ্রামবাসীদের এই ব্যবস্থা।

আর‌ও পড়ুন: মমতার সভা থাকলেই ট্রাই সাইকেল নিয়ে হাজির হয়ে যান অজিত, অসুস্থতাও দমিয়ে রাখতে পারে না

সেবার সবাইকে আশ্রয় নিতে হয়েছিল উঁচু জায়গায়। সাপ সহ অন্যান্য জলজ প্রাণী ঢুকে গিয়েছিল বাড়ির মধ্যে। আর তাই বৈশাখ মাস এলেই আতঙ্কে ভোগ দিয়ে শুরু করেন এখানকার মানুষজন। স্থানীয়রা এই আতঙ্ক থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত বাঁধ সারাইয়ের আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তা যতদিন না হচ্ছে এইভাবেই পাহারা দিয়ে যেতে হবে এই গ্রামের মানুষদের।

নবাব মল্লিক

Lok Sabha Election 2024: ফি বছরের বন্যা থেকে বাঁচতে সুবর্ণরেখার সম্পূর্ণ পাড় বাঁধানোর দাবি

পশ্চিম মেদিনীপুর: গ্রামের গা ঘেঁষে বয়ে চলছে শান্ত সুবর্ণরেখা। কিন্তু বর্ষাকাল এলেই ফুলে ফেঁপে উঠে শান্ত এই নদী। তখন সে তার কী ভয়ঙ্কর রূপ! বর্ষাকালে একদিকে বর্ষার জল আর অন্যদিকে ব্যারেজের ছাড়া জলে ভয়াল রূপ নেয় সুবর্ণরেখা। নদীর খরস্রোতা প্রবাহ ভেঙে ফেলে পাড়। ফলে হামেশাই বানভাসি হয় দুই কুলের মানুষজন। নদী ভাঙনের জেরে ঘটা বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে সুবর্ণরেখার সম্পূর্ণ পাড় বাঁধানোর দাবি তুললেন স্থানীয়রা।

পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সুবর্ণরেখা। গিয়েছে ওড়িশার মধ্য দিয়েও। বেশ কিছু জায়গায় সুবর্ণরেখার পাড় বাঁধানো হলেও বেশ কিছু জায়গা আগের মতই পড়ে আছে। যার ফলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন নদীর পাড়ে থাকা জনপদগুলির বাসিন্দারা। নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে মাঠ, গাছপালাও। বন্যার জলে বানভাসী হয় নদী তীরের মানুষজন।

আর‌ও পড়ুন: শিল্পীর এ কেমন নেশা! জানলে অবাক হবেন

বর্ষাকালে ক্রমশ জল গ্রামের মধ্যে ঢুকতে থাকলে আশ্রয় নিতে হয় স্কুলে বা উঁচু জায়গায়। স্বাভাবিকভাবে গবাদি পশু থেকে কৃষিকাজ সবকিছুতেই মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়। দাঁতন ব্লকের বড়া, মহেশপুর, কাঁটাপাল সহ একাধিক গ্রাম নদীর তীরে অবস্থিত। কিছু জায়গায় নদীর পাড় বাঁধানো হলেও কিছু জায়গায় এখনও হয়নি। স্বাভাবিকভাবে বাঁধানো না হওয়া অংশে ভাঙছে নদীর পাড়। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে নদীর সম্পূর্ণ পাড় বাঁধানোর দাবি তুললেন এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা।

রঞ্জন চন্দ

Lok Sabha Election 2024: ভাঙন কবলিতদের কাছে ভোট চাইতেও আসে না কেউ! অসহায় মানুষগুলো শুধুই সংখ্যা

কোচবিহার: দু’বছর আগে নদীর ভাঙনে হারিয়ে গিয়েছে ভিটামাটি সবকিছু। তখন থেকেই তাঁরা কয়েকজন প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রিত হয়ে আছেন। অষ্টাদশ লোকসভা ভোটের আগে এই অসহায় মানুষগুলো কী চাইছেন? তাঁদের মনের কথাটা কী? সরকারি সহায়তা না পেয়ে প্রতিদিন চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাঁচছেন এই মানুষগুলো

দু’বছর আগে নদী ভাঙনের জেরে এক নিমেষেই পথে এসে বসতে হয়। চোখের পলকে শেষ হয়ে গিয়েছিল সর্বস্ব। চোখের সামনে নদীর গ্রাসে চলে গিয়েছিল আবাদি জমি ও বসত ভিটে। তখন থেকেই এলাকার কিছু স্থানীয় মানুষের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছে তাঁদের। প্রশাসনিক আধিকারিকরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসে সমস্যার সমাধানের অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও মেরামত হয়নি নদী বাঁধ, পাননি পুনর্বাসন।

আর‌ও পড়ুন: দেবী অন্নপূর্ণার কলস যাত্রায় ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মর্জিনা বিবি, মিহির উদ্দিন মিঁয়া ও আমিনুর মিঁয়া জানান, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি। অনেকের তো জব কার্ড‌ও নেই। আবাস যোজনার ঘরের লিস্টে নাম নেই। এই পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকাটাই কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কোচবিহারের এই অসহায় মানুষগুলো পরিষ্কার জানিয়েছেন, যে দলের প্রার্থী আগামী দিনে তাঁদের দুঃখ কষ্ট মোচনের লক্ষ্যে কাজ করবেন তাঁকেই ভোট দেবেন। এলাকার বাসিন্দারা সকলে একত্রিত হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে নির্বাচনী প্রচারে এখন‌ও পর্যন্ত কোন‌ও দলের প্রার্থীর‌ই দেখা মেলেনি এই এলাকায়। অথচ ১৯ এপ্রিল এই কেন্দ্রে নির্বাচন।

সার্থক পণ্ডিত

Lok Sabha Election 2024: গঙ্গা ভাঙনে সব হারিয়ে ৮ বছর ধরে স্কুলে বাস, পুনর্বাসনের আশায় ভোট দেবেন ওঁরা

মালদহ: ভিটেমাটি থেকে বসতবাড়ি সমস্ত কিছুই বিলীন হয়েছে গঙ্গার গ্রাসে। গঙ্গা ভাঙনের কবলে পড়ে গৃহহীন হয়েছে বহু পরিবার। প্রায় নয় বছর কেটে গেলেও এখনও মেলেনি পুনর্বাসন। স্থানীয় স্কুল ভবনের একাংশে ত্রাণ শিবিরে রয়েছে একাধিক পরিবার। একের পর এক নির্বাচন আসে, মেলে শুধু প্রতিশ্রুতি। কিন্তু পূর্ণবাসন আজও মেলেনি মালদহের বৈষ্ণবনগর বিধানসভার বিরনগর পঞ্চায়েতের ভাঙন কবলিত এলাকার সর্বহারাদের।

এই পরিস্থিতিতে অতিকষ্টে পরিবার নিয়ে স্কুলের মধ্যে কোন‌ওরকমে বসবাস করছে পরিবারগুলি। সরকারি কোন‌ওরকম সহযোগিতা না মেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পরিবারগুলির সদস্যরা। ফুলকুনি মণ্ডল বলেন, ২০১৬ সালের গঙ্গা ভাঙনে আমাদের বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত পুনর্বাসন পাইনি। অনেকেই পেয়েছে তবে আমাদের দেওয়া হয়নি, তাই স্কুলেই বসবাস করছি। ভোটের আগে আমরা আমাদের পুনর্বাসনের দাবি তুলছি।

আর‌ও পড়ুন: আর ছুটতে হবে না দুর্গাপুরে, আসানসোলেই এবার উন্নত চিকিৎসা

পুনর্বাসনের আশা নিয়েই এই অসহায় মানুষগুলো এবার‌ও ভোট দেবেন। প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা আসছেন তাঁদের দুয়ারে ভোট চাইতে। নতুন করে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আর বিশ্বাস হচ্ছে না দূর্গতদের। এই প্রসঙ্গে বৈষ্ণবনগরের প্রাক্তন বিধায়ক স্বাধীন সরকার বলেন, এক হাজার পরিবার বাড়িঘর সমস্ত কিছু গঙ্গা ভাঙনে হারিয়েছে। রাজ্য সরকার মাত্র ৩০০ টি পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে। বাকি পরিবারগুলি এখনও স্কুলে। কেউ আবার খোলা আকাশের নিচে রয়েছেন।

২০২৩ সাল পর্যন্ত গঙ্গা ভাঙনে ওই এলাকার চিনা বাজার, সরকারটোলা , বিননগর সহ বিস্তীর্ণ এলাকা গঙ্গা গর্ভে বিলীন হয়েছে। বাড়িঘর জমি জায়গা সর্বস্ব হারিয়েছে প্রায় এক হাজার পরিবার। কেউ খোলা আকাশের নিচে, আবার কেউ স্থানীয় স্কুলে বসবাস শুরু করছেন।‌ কিছু পরিবারকে সরকারিভাবে পূর্ণবাসন দেওয়া হয়েছে। তবে অধিকাংশ পরিবার এখনও কোন‌ওরকম সাহায্য পাননি।

হরষিত সিংহ

Lok Sabha Election 2024: ভোট প্রচারে বেরিয়ে সত্যাগ্রহ বিজেপি প্রার্থীর! কারণ জানলে অবাক হবেন

মালদহ: জেলার সবচেয়ে বড় সমস্যা নদী ভাঙন। বছরের পর বছর মালদহ জেলার গঙ্গার তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভাঙন অব্যাহত। আক্ষেপের বিষয় হল এই ভাঙন প্রতিরোধ নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্থায়ী সমাধান হয়নি। আর তাই লোকসভা ভোটের প্রচার চলাকালীন ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের স্বার্থে সত্যাগ্রহ শুরু করলেন দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী।

মানিকচক লোকসভা কেন্দ্রের ভুতনি গোবর্ধনটোলা এলাকায় গঙ্গার তীরে দিনভর সত্যাগ্রহ আন্দোলন করেন বিজেপি প্রার্থী। পাশাপাশি ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের মঙ্গল কামনায় গঙ্গাতীরে মহা মঙ্গল যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের সমস্যার সমাধানে এখনও কোনও স্থায়ী কাজ হয়নি। একটি পরিবার থেকেই মালদহে বছরের পর বছর সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। কেন্দ্রে বেশিরভাগ সময়ই কংগ্রেসের সরকার ছিল। কিন্তু ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের জন্য কোন‌ও স্থায়ী কাজ হয়নি। বর্তমানে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আছে। কিন্তু মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রটি কংগ্রেসের দখলেই আছে। তারা এই অঞ্চলের মানুষের জন্য কোন‌ও স্থায়ী কাজের চিন্তাভাবনা করেনি। আমরা দেখেছি শুধুমাত্র বর্ষার মরশুমে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা হয়েছে। তবে বিস্তীর্ণ এই ভাঙন কবলিত অঞ্চলে প্রয়োজন স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধ কাজের।

আর‌ও পড়ুন: পাথর শিল্পীর অনন্য সৃষ্টি ‘নিরক্ষরতা দূরীকরণ’

বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরী বলেন, ডালুবাবু সাংসদ থাকাকালীন অনেক ফান্ড নিয়ে এসেছেন। কাজও হয়েছে অনেক। আমি যখন বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক ছিলাম সে সময় অনেক ফান্ড এসেছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় কাজ হয়েছে। মালদহ জেলার রতুয়ার দিয়ারা, মানিকচক ব্লকের ভুতনি সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও কালিয়াচক-৩ ব্লকের বেশ কিছু অঞ্চলজুড়ে প্রতিবছর ব্যাপক হারে গঙ্গা ভাঙন হচ্ছে। একের পর এক গ্রাম বিলীন হয়েছে এই গঙ্গা ভাঙনের কবলে। বহু পরিবার গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু তাঁদের সমস্যার সমাধান আজও হয়নি।

হরষিত সিংহ

River Erosion: নদীর গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট! কলকাতার কাছে বলাগড়ে ভয়াবহ অবস্থা

হুগলি: বলাগড়ে আজও ভাঙছে নদী পাড়। ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গার তীরবর্তী এলাকা। নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে ধীরে ধীরে গ্রাস করতে বসেছে রাস্তাঘাট এমনকি মানুষের ঘর-বাড়িও। ভাঙন নিয়ে দুশ্চিন্তায় বলাগড় গ্রামবাসীরা। ভাঙনের কারণে রাতের ঘুম উড়েছে।

বলাগড় চাঁদরা কলোনি এলাকায় নদী পাড় ভাঙনের ফলে গ্রামের রাস্তা তলিয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে গুপ্তিপাড়া-১ পঞ্চায়েতের নদীর পার ভেঙে জলে তলিয়ে যায়। এই এলাকার বাসিন্দারা মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে গেছে চাষের জমি, ঘরবাড়ি। বলাগড়ের ভাঙন সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেই সমস্যা কবে মিটবে, আদৌ মিটবে কিনা জানা নেই বলাগড়বাসীর।

আর‌ও পড়ুন: cগরম পড়তেই চওড়া হাসি বাঁকুড়ার সদানন্দের মুখে! দাবদাহ বাড়লে খুশি বাড়ে

ভোট এলেই দেখা মেলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের, মেলে প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু আদতে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না বাসিন্দাদের। গুপ্তিপাড়া-১ পঞ্চায়েতের ফেরিঘাট সংলগ্ন গঙ্গা পাড়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেইমত ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে রাজ্য সরকার গঙ্গা ভাঙন রোধে কাজ করছে। বোল্ডার ফেলে, বালির বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা হয়। স্থানীয়দের দাবি, যেভাবে গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে একদিন পুরো এলাকাটাই গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যাবে। অভিযোগ, রাজ্য বা কেন্দ্র সরকার সম্পূর্ণভাবে উদাসীন। বড় প্রকল্প না হলে গঙ্গা ভাঙন রোধ করা যাবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা টিঙ্কু বৈদ্য জানান, বর্ষা এলেই শুরু হয় গঙ্গার ভাঙন। প্রায় বিঘার পর বিঘা জমি গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যায়। একসময় যে জায়গায় চাষ হত এখন সেই জমি গঙ্গা-বক্ষে তলিয়ে গিয়েছে। গুপ্তিপাড়া, চরকৃষ্ণবাটি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এই গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে। বাম আমল থেকেই মেলে প্রতিশ্রুতি, বর্তমান সরকারের আমলেও মিলেছে সেই প্রতিশ্রুতি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। বিদায়ী বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেও কোন‌ও সমস্যার সমাধান হয়নি। ফেরিঘাট পার হয়ে যাতায়াত করতেও সমস্যা হয়। আবার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে ভোট। তাই যেই জিতুক তাঁর কাছে দাবি থাকবে গঙ্গা ভাঙন রোধ করার।

আর‌ও পড়ুন: বাবা-মাকে শ্রদ্ধা জানাতে যে কাণ্ড ঘটান পাঁচলার এই চিকিৎসক!

গুপ্তিপাড়া-১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই গঙ্গার ভাঙন চলছে। তারমধ্যে ফেরি ঘাটের ডানদিকে প্রায় ১৫০ মিটার ও বাঁদিকে প্রায় ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে রোধ করা সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে ভাঙন রোধে কাজ করা প্রয়োজন। হুগলি লোকসভায় যারা প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের কাছে করজোরে আবেদন, বলাগরবাসীর পাশে দাঁড়ান।

রাহী হালদার

Malda Disaster: গঙ্গা ভাঙনে আগেই হারিয়েছিল ভিটেমাটি, এবার অস্থায়ী বাড়িও গেল অগ্নিকাণ্ডে

মালদহ: গঙ্গার গ্রাসে বাড়িঘর থেকে ভিটেমাটির সমস্ত কিছু আগেই হারিয়েছিলেন তাঁরা। অসহায় পরিবারগুলি অস্থায়ী বাড়ি তৈরি করে ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে কিছুটা দূরে বসবাস শুরু করেছিলেন। কিন্তু এবার আগুনের গ্রাসে সর্বস্ব খুইয়ে বাঁচার শেষ সম্বলটুকুও হারিয়ে বসল ১৫ টি পরিবার।

গত কয়েক বছর ধরেই অস্থায়ী বাড়িতে বসবাস করছিলেন মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার পার অনুপনগর গ্রামের এই ১৫ টি পরিবার। কিন্তু সেই অস্থায়ী বাড়িও আর থাকল না। আগুনের লেলিহান শিখা অস্থায়ী বাড়ি ভস্মীভূত করে দিয়েছে। ফলে ফের ভিটেহারা হলেন গঙ্গা তীরবর্তী গ্রামের অসহায় পরিবারগুলো।

আর‌ও পড়ুন: ভোট আসে-যায়, পরিস্থিতি বদলায় না! নিজের বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে থাকে গোটা গ্রাম

এদিন দুপুরে হঠাৎই ওই এলাকায় একটি বাড়িতে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তা সফল হয়নি। নিমেষের মধ্যেই পরপর গ্রামের ১৫ টি বাড়িপুড়ে ছাই হয়ে যায়। দ্রুত আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছে গ্রামের এক মহিলা ও শিশু। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও গবাদি পশুও অগ্নিদগ্ধ হয়ে জখম হয়েছে। বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও এলাকায় দমকল গিয়ে পৌঁছায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, গঙ্গা ভাঙনে ভিটেমাটি অনেক আগেই হারিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা। এবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাড়িঘর সহ সমস্ত কিছু পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনী বিধি লাগু থাকায় কিছু করার উপায় নেই আমার। তবে দলের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়ার।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছিল ওই পরিবারগুলো। এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হবে। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রার্থী। তাঁরা ঘুরে দেখেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা।

হরষিত সিংহ

Lok Sabha Election 2024: ভোট আসে-যায়, পরিস্থিতি বদলায় না! নিজের বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে থাকে গোটা গ্রাম

আলিপুরদুয়ার: ভোট আসে, ভোট যায়। কিন্তু পরিস্থিতি আর বদলায় না তোর্ষা পাড়ে। ধ্বংসাবশেষের মাঝে পুরনো স্মৃতি খুঁজে বেড়ান বাসিন্দারা। পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছেন ছোট মেচিয়া বস্তি এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু তাঁদের দাবি আজও পূরণ হয়নি। লোকসভা নির্বাচন সামনে। কিন্তু কোন‌ও দলের প্রার্থী তাঁদের এলাকায় পরিদর্শন করতে আসেন না, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন না বলে অভিযোগ ছোট মেচিয়া বস্তির বাসিন্দাদের।

নিজের ভাঙা বাড়ি দেখে এখনও চোখের জল ফেলেন ললিতা বিশ্বকর্মা। তাঁর স্বামী অনেক কষ্ট করে পাকা বাড়ি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু নদীর গ্রাসে বাড়ির অধিকাংশই তলিয়ে গিয়েছে। যা রয়ে গিয়েছে তা বসবাসের যোগ্য নয়। বাধ্য হয়ে অন্যত্র মাসে হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। একই পরিস্থিতি কণিকা বর্মন, মুন্না বর্মনদের। নদীতে পাকা বাঁধ নির্মাণ হবে কিনা জানেন না তাঁরা। বিকল্প উপায় হিসেবে পুনর্বাসনের দাবি তুলছেন। এই মানুষগুলো জানিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্যত্র জায়গা দিলে তাঁরা আবার নতুন করে বসতি গড়ে তুলতে পারবেন। এতে ভাড়া বাড়িতে অন্ততপক্ষে থাকতে হবে না।

আর‌ও পড়ুন: খামখেয়ালি আবহাওয়ায় পটল চাষে ক্ষতি

শহর থেকে দূরে হাওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীরা এখানে আসেন না, এমনই মন্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের অভিমানের কথা ব্যক্ত করেন অসহায় মানুষগুলো। এক কথায় তাঁদের দুঃখ-দুর্দশা দেখার ও শোনার মত কেউ নেই। বর্ষাকালে ফুলেফেঁপে ওঠে নদীর জল। নদীর এই রূপ দেখলে ভয় পেয়ে যেতে হয়। দুবছরে নদীর পারে ছোট মেচিয়া বস্তিতে অতলে চলে গিয়েছে ৩৫ টি বাড়ি। সকলেই বর্তমানে অন্যত্র ভাড়া থাকছেন। সকলেরই এখন একটাই প্রশ্ন, আর কখনও কি স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়া যাবে?

অনন্যা দে