পাঁচমিশালি General Knowledge: বলুন তো দেখি, কোন দেশে ৮৫০টি ভাষায় মানুষ কথা বলে? ভারত নয় কিন্তু! দেশের নামটা কিন্তু চমকে দেবে Gallery October 31, 2024 Bangla Digital Desk আচ্ছা বলুন তো, কোনও দেশে সর্বোচ্চ কতগুলো ভাষার প্রচলন থাকা সম্ভব? একটি? দুটি? সর্বোচ্চ ১০টা? আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেই রয়েছে ২২টি ভাষার প্রচলন। অবশ্য প্রায় দেড়শো কোটি মানুষের বাস রয়েছে যে দেশে, সেখানে বৈচিত্র্যের পরিমাণও যে বেশি হবে- সেটাই স্বাভাবিক। তবে মাত্র কয়েক লক্ষ মানুষ যেখানে বাস করে, সেখানে কয়েকশো ভাষার ব্যবহার নিঃসন্দেহে অবাক করার মতো একটি বিষয়। বলছি, ওশেনিয়ার ছোট একটি দেশ পাপুয়া নিউগিনির কথা। জনসংখ্যা কিংবা আয়তন, কোনও দিক থেকেই দেশটি ভারতের সমান বা কাছাকাছি নয়। মাত্র ৭.৬ মিলিয়ন বাসিন্দা নিয়েও এখানে ব্যবহৃত হয় ৮৫০টি ভাষা। পুরো বিশ্বে ভাষার ক্ষেত্রে এরকম বৈচিত্র্যের দেখা মেলে শুধুমাত্র এই দেশটিতেই। পাপুয়া নিউগিনিতে কীভাবে আসল এত ভাষার সমাহার? সেই দেশের বাসিন্দারাই বা কীভাবে এত বিচিত্র ভাষা আয়ত্ত করল? পাপুয়া নিউগিনির পুরনো ভাষাগুলোকে বলা হয় ‘পাপুয়ান’, যা আজ থেকে প্রায় ৪০,০০০ বছর আগে সেখানে প্রথম বসতি স্থাপনকারীদের মাধ্যমে সেখানকার জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ভাষা ‘পাপুয়ান’-এর অন্তর্ভুক্ত হলেও এদের উৎপত্তির ভিত্তি কিন্তু এক নয়। আসলে এই ভাষাগুলো আলাদা আলাদা কয়েক ডজন অসম্পর্কিত পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এরকমও কিছু ভাষার সন্ধান এখানে পাওয়া যায়, যা কোনও পরিবারেরই অংশ না। এর শিকড় কোথায়, তা-ও জানা যায়নি। আজ থেকে প্রায় ৩,৫০০ বছর আগে, পাপুয়া নিউগিনিতে কয়েকটি অস্ট্রোনেশীয় ভাষার আগমন ঘটে। এগুলো দেশটিতে এর পূর্বে প্রচলিত ভাষার তুলনায় ভিন্ন ছিল এবং হয়ত সেগুলো একটি মাত্র উৎস থেকেই এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, উৎসটি তাইওয়ানীয় ছিল। এত বৈচিত্র্যময় ভাষার সমাহারের ধকল সামলাতে না সামলাতেই দেশটিতে নতুন করে আরও ভাষার আগমন ঘটলো উনিশ শতকের দিকে। এই সময় সেখানে ইংরেজ এবং জার্মানভাষীদের আগমন ঘটে এবং দেশটি শাসন করা শুরু করে। স্বাধীনতার পর এত ভাষার মধ্যে পাপুয়া নিউগিনি শুধুমাত্র তিনটি ভাষাকেই সরকারি ভাষার মর্যাদা দেয়। এর মধ্যে প্রথম স্থানেই রয়েছে টোক পিসিন। এটি একটি ইংরেজি-ভিত্তিক ক্রেওল ভাষা। পাপুয়া নিউগিনিতে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ভাষা এবং সেই দেশে এটি সার্বজনীন ভাষা হিসেবে পরিচিত। উল্লেখ্য যে, ক্রেওল হলো ইউরোপীয় এবং কৃষ্ণাঙ্গদের সংমিশ্রিত জাতিবিশেষ। এরপরেই বেশ গুরুত্ব সহকারে অবস্থান করছে হিরি মোতু এবং ইংরেজি। হিরি মোতু একটি অস্ট্রোনেশীয় ভাষা। অস্ট্রোনেশীয় ভাষাগুলো মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মাদাগাস্কার এবং প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এই ভাষা পরিবারে হিরি মোতুসহ মোট ১,২৫৭টি ভাষা রয়েছে। ব্যবহারকারীদের সংখ্যার ভিত্তিতে এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ ভাষা পরিবার। আর ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ভাষার সংখ্যার ভিত্তিতে এটি বিশ্বে দ্বিতীয়। অর্থাৎ, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাষাভাষীর মানুষ এই পাপুয়া নিউ গিনি-তে বসবাস করেন। পাপুয়া নিউ গিনি-র অনেক জায়গা কিন্তু জঙ্গলে ঘেরা। প্রাকৃতিক দৃশ্য অতুলনীয়। ফলে এখানে সারাবছর নানা দেশের পর্যটকের ভিড় জমে।