লক্ষ্মী ভাণ্ডারের টাকায় দুর্গাপুজো

Durga Puja 2024: গ্রামে দুর্গাপুজো আয়োজনে মহিলারা, সাহস জোগিয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার

: গ্রামে দুর্গাপুজো হত না। গ্রামের মহিলাদের অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে যাওয়া হোক কিংবা পুজো দেখতে যেতে হত পার্শ্ববর্তী এলাকার পুজো মণ্ডপে। গ্রামের মহিলারা গ্রামের দুর্গা পুজোর আয়োজনে উদ্যোগী হয়। আর তাদের এই পুজো আয়োজনে সাহস যোগায় রাজ্য সরকারের দেওয়া মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ভাতা। সেই ভাতা থেকেই গ্রামের মহিলারা চাঁদা দিয়ে শুরু করেন দুর্গাপুজো। ২০২৩ সালে প্রথম গ্রামের মহিলারা নিজেদের লক্ষ্মীর ভান্ডারে প্রাপ্ত অর্থ থেকে শুরু করেন দুর্গাপুজো। চলতি বছর সেই পুজো দ্বিতীয় বছরে পড়ল।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার অন্তর্গত ধুরপা গ্রাম। এই গ্রামে হত না দুর্গাপুজো। আশ্বিনের সারদের আকাশ যখন কালো মেঘ সরিয়ে নীল সাদা মেঘের ভেলা সাজিয়ে প্রকৃতি আহ্বান জানায়দেবী দুর্গাকে,তখন এই গ্রামে মন খারাপের মেঘ ভিড় করে থাকত। চারিদিকে যখন পুজো, পুজো গন্ধতখন এই গ্রামে পরিবেশ গুরুগম্ভীর। কোথাও যেন বিষাদের ছোঁয়া! কারণ গ্রামে বাঙালির বড় উৎসব দুর্গাপুজোর আয়োজন হত না কোনওদিনই। পুজোয় মন খারাপের মেঘ দূর করতে গ্রামের মহিলারা সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন। শুরু করেন গ্রামে দুর্গাপুজো। আর তাদের এই দুর্গাপুজোর আয়োজনে সাহস যোগায় রাজ্য সরকারের দেওয়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডার।

আরও পড়ুন: আর নয় দার্জিলিং এবার বোলপুর গেলেও মিলবে চা পাতার দেখা

চলতি বছর তমলুক থানার অন্তর্গত ধুরপা গ্রামের মাতৃশক্তি পুজো কমিটির দুর্গাপুজো দ্বিতীয় বছরে পড়ল। শহরের দিকে মেয়েরা দুর্গাপুজোর আয়োজন করে থাকলেও গ্রামে মহিলাদের আয়োজিত পুজোর দৃষ্টান্ত খুব কমই পাওয়া যায়। আর সেই জায়গায় গ্রামের মহিলারা নিজেদের লক্ষীর ভান্ডার থেকে পুজোর উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে পুজো কমিটির সম্পাদিকা শম্পা জানা বলেন,  গ্রামে দুর্গাপুজো হত না। পুজোর আনন্দে মেতে ওঠা হত না সেভাবে। সে ভাবনা থেকেই গ্রামে দুর্গাপুজোর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রামের মেয়েরা সেভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় দুর্গাপুজো কীভাবে আয়োজন করা হবে সে নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয়। আর সব চিন্তার অবসান ঘটে লক্ষী ভান্ডারে। গ্রামের মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের এক মাসের টাকা পুজোর জন্য দেওয়া হয়।

তমলুকের এই ধুরপা গ্রামে মাতৃ শক্তি পুজো কমিটিতে মোট ৮০ থেকে ৯০ জন মহিলা রয়েছেন। মহিলারা তাদের লক্ষীর ভান্ডারে প্রাপ্ত টাকা থেকে এক মাসের টাকা দুর্গাপুজোর আয়োজনে তুলে দেন। এর পাশাপাশি মহিলারা পাড়ায় পুজোর জন্য চাঁদা আদায় করেন। মহিলারা জানান তাদের এই পুজো আয়োজনে সব থেকে বড় সাহস জোগিয়েছে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। চলতি বছর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকার পরিমাণ বেড়েছে। ফলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে আয়োজন হওয়া এই পুজোর জৌলুসও শেষ বছরের তুলনায় এ বছর বাড়বে বলে জানান মহিলারা।

সৈকত শী