বনকাটির অযোধ্যা গ্রামের পিতলের রথ।

West Bardhaman News : লাক্ষা-গালা ব্যবসার একদিনের মুনাফার টাকায় তৈরি হয়েছিল বিশাল পিতলের রথ, হয় বিশাল উৎসব

কাঁকসা, পশ্চিম বর্ধমান : রথযাত্রা থেকে উল্টো রথের দিনেই এখানে বেশি জাঁকজমক। বাংলার প্রাচীন রথগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। কাঁকসার জঙ্গলে ঘেরা বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকার অযোধ্যা গ্রাম। সেখানেই কয়েকশো বছর ধরে রথযাত্রা উপলক্ষে বিশাল উৎসবের আয়োজন করা হয়। উল্টো রথের দিন আনন্দ উৎসব হয় আরও বেশি। গ্রামের বিশাল আকার পিতলের রথটিকে কেন্দ্র করে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস।

জানা গিয়েছে, অযোধ্যা গ্রামে একসময় বর্ধিষ্ণু মুখার্জি পরিবারের বসবাস ছিল। মূলত মুখার্জি পরিবারের হাত ধরেই অযোধ্যার রথযাত্রার শুরু হয়। বৈবাহিক সূত্রে মুখার্জি পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। গ্রামের রায় পরিবারের। জানা যায়, লাক্ষা এবং গালার ব্যবসা ছিল মুখার্জি পরিবারের। ব্যবসা চলতবীরভূমের ইলামবাজার এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সেই সময় ব্যবসা থেকে একদিনের মুনাফার টাকা দিয়ে বিশাল আকারের এই পিতলের রথটি তৈরি করানো হয়। যে রথে চড়েই এখনও পর্যন্ত জগন্নাথদেব মাসির বাড়ি যান। বহু পুরানো এই রথটিও বেশ আকর্ষণীয়। কারণ পিতলের এই রথযাত্রার গায়ে অঙ্কিত রয়েছে একাধিক ছবি।

আরও পড়ুন : স্বস্তি ফিরছে মধ্যবিত্তের পকেটে, রেডের পর একটু আয়ত্তে সবজির দাম, রইল হিসেব

চার যুগের বিভিন্ন ছবি বর্ণিত রয়েছে এই পিতলের রথের গায়ে। যেখানে সমুদ্র মন্থন থেকে শুরু করে রাম রাবণের যুদ্ধের ছবি অঙ্কিত রয়েছে। এছাড়াও অঙ্কিত রয়েছে বাংলা সহজ পাঠের বিভিন্ন ছবি। পাশাপাশি জিমন্যাস্টিকের বেশ কিছু ছবি অঙ্কিত রয়েছে এই পিতলের রথের গায়ে। মূলত নবরত্ন মন্দিরের আদলে পিতলের এই রথটি তৈরি করানো হয়। যদিও এই রথটি কে তৈরি করেছিলেন, সে বিষয়ে সঠিক কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। প্রসঙ্গত, অযোধ্যা গ্রামে একাধিক পুরানো মন্দির রয়েছে।তবে অযথা গ্রামের রথযাত্রা এলাকার বিশেষ আকর্ষণ।

আরও পড়ুন : আর গল্পে নয়, এবার বাস্তবেও উঠে পড়ল গরু! তবে, গাছে নয়, গ্যারাজের চালে! দুর্গাপুরে যা ঘটল…

রথযাত্রা এবং উল্টো রথযাত্রার দিন এখানে বহু মানুষের সমাগম হয়। আশপাশের থেকে এলাকা থেকে বহু মানুষ এখানে রথ দেখতে আসেন। থাকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা। রথযাত্রার দিন এখানে যত না উৎসব হয়, তার থেকে উল্টো রথের দিন বেশি আনন্দে মেতে ওঠেন স্থানীয়রা। কিন্তু উৎসব পর্ব শেষ হলে রথটি রাখা থাকে মুখার্জি পরিবারের বাড়ির চত্বরেই। একসময় রাজপ্রাসাদের মতবৈভবে ভরতিবাড়িটি এখন ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছে।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F 

কিন্তু সেই ধ্বংসস্তূপ আর এই রসটি এখনও সেই উজ্জ্বল সময়ের উপস্থিতি জানান দেয়।

নয়ন ঘোষ