আসানসোল: এগিয়ে আসছে বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো৷ রাজ্যের সব কুমোরটুলিগুলির মত আসানসোলের কুমোরটুলিতেও এখন চরম ব্যস্ততা। পুজোর আগে জোরকদমে চলছে প্রতিমা তৈরি। শুধু দুর্গা প্রতিমা নয়, একইসঙ্গে গণেশ, বিশ্বকর্মা, কালী, লক্ষ্মী প্রতিমা তৈরির কাজও চলছে। প্রথম ধাপের কাজ অনেকটাই এগিয়ে ফেলেছেন মূর্তি শিল্পীরা। কিন্তু দোমেটে কি করে হবে, তা ভাবিয়ে তুলেছে শিল্পীদের।
দোমেটে, অর্থাৎ মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরিতে দ্বিতীয় বারের জন্য মাটির প্রলেপ দেওয়া। কাঠামোয় প্রথমবার মাটি দেওয়ার জন্য লোকাল মাটি ব্যবহার করেন শিল্পীরা। কিন্তু দোমেটে করার জন্য ব্যবহার করা হয় বিশেষ মাটির। অথচ সেই মাটির আকাল দেখা দিয়েছে আসানসোলের কুমোরটুলিতে। আসানসোলের মহিষীলা এলাকায় কুড়িটি মৃৎশিল্পী পরিবারের বসবাস। সেখানে সকলেই একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। বুঝে উঠতে পারছেন না, এই বিশেষ মাটি না পেলে তারা কি করে প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করবেন।
প্রসঙ্গত, মূর্তিতে দ্বিতীয়বার মাটির প্রলেপ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় গঙ্গা মাটি। এই মাটি ব্যবহার করলে মৃন্ময়ী মূর্তিতে আরও সুক্ষ্মভাবে আনা যায়। বিশেষ করে যেকোনও মূর্তির মুখমণ্ডল তৈরি করতে এই মাটির প্রয়োজন পড়ে। বর্ধমানের কালনা থেকে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই মাটি পেতেন মৃৎশিল্পীরা। কিন্তু বর্তমানে সেখান থেকে গঙ্গামাটি আসছে না। যারা এই মাটি সরবরাহ করতেন, তারা বলছেন প্রশাসন মাটি তোলার ক্ষেত্রে কড়া মনোভাব নিয়েছে। তার ফলে মাটি সরবরাহ করতে পারছেন না।
অন্যদিকে মহিষীলার মৃৎশিল্পীরা বলছেন, পুজো এগিয়ে আসছে। আর কিছুদিন বাদেই উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যাবে। গণেশ পুজো, বিশ্বকর্মা পুজো পরপর আসবে। দুর্গাপুজোর পরই লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো। তাই প্রতিমা তৈরির কাজ অনেকটা আগে থেকেই সেরে রাখেন শিল্পীরা। কিন্তু চলতি বছরে প্রথম ধাপের কাজ শিল্পীরা অনেকটা এগিয়ে রাখলেও, দোমেটে করা নিয়ে ব্যাপক চিন্তায় পড়েছেন। গঙ্গামাটি না পেলে তারা কীভাবে কাজ সম্পূর্ণ করবেন, তা ভেবেই অস্থির হচ্ছেন সকলে।
নয়ন ঘোষ