ইংলিশ উৎসব সুন্দরবনে

Ilish Utsav: রয়্যাল বেঙ্গল দর্শন নয়, ইলিশের টানেই সুন্দরবনে ছুটে আসছে পর্যটকরা, কী মেনু থাকছে?

সুন্দরবন: শীতকাল বা পুজো মরশুমে ভিড় লেগেই থাকে এই বাদাবনের জঙ্গলে। কিন্তু এখন ভরা বর্ষাকালও বাদ যাচ্ছে না। গত মাস থেকে শুরু হওয়া ইলিশ ট্যুরিজমের দৌলতে এখন হোটেল ব্যবসায়ী থেকে বোট মালিক সবারই পৌষ মাস চলছে। সপ্তাহান্তে সুন্দরবনের হোটেলগুলিতে ঠাঁই নাই অবস্থা। ট্যুর অপারেটরদের সাজানো প্যাকেজে ইলিশের রকমারি পদই হয়ে উঠেছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

পর্যটকদের আকর্ষণ করতে কে কত রকমের ইলিশের পদ করতে পারে, তা নিয়েও ট্যুর অপারেটরের মধ্যে চলছে ঠান্ডা প্রতিযোগিতা। একদিন দু’রাত এবং দু’রাত তিনদিন, এই দু’টি প্যাকেজই সবথেকে বেশি জনপ্রিয়। মাথাপিছু খরচ ৩০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা। যে ক’দিন পর্যটকরা সুন্দরবনে থাকবেন সে ক’দিনই খাবেন ইলিশের মুখরোচক পদ। বৃষ্টিতে সুন্দরবনের নদীগুলির রূপ অপরূপ। ফুঁসে ওঠা নদীর জলে দুলতে থাকা লঞ্চে চেপে ইলিশের স্বাদ নিতে একপ্রকার ‘ক্রেজি’ পর্যটকরা।

আরও পড়ুনঃ দিঘার সমুদ্রের এ কী অবস্থা! স্নানে নেমে ভয়াবহ অবস্থা পর্যটকদের! আতঙ্কে ছোট-বড় সবাই

সুন্দরবন ট্যুরিস্ট বোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম রসুল সর্দার বলেন, ‘শুক্র-শনি ও রবি বাসন্তীর সোনাখালি ঘাট থেকে কুড়ি থেকে বাইশটি করে লঞ্চ ছাড়ছে। সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলিতে তুলনামূলকভাবে কম পর্যটক আসছেন। তবে ওই তিনদিন জায়গা দেওয়ার মতো অবস্থা থাকছে না। বাঘ না দেখার হতাশা মানুষ পুষিয়ে নিচ্ছেন পেটভরে নদীর ইলিশ খেয়ে।’ পর্যটকরা হরেক প্রকারের পদ খেয়ে তৃপ্ত।

আরও পড়ুনঃ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেও মিলছে না উপকার! অযত্নে বেড়ে ওঠা এই ফুল শরীরের মহা-ওষুধ, খেলেই ম্যাজিক

হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, পর্যটনকে বাঁচিয়ে রাখতে সারা বছরই কিছু না কিছু উদ্যোগ নিতে হয় যাতে পর্যটকরা আকৃষ্ট হন। যেহেতু বর্ষাকালে ইলিশ মাছের চাহিদা থাকে তুঙ্গে তাই এখানে এসে সামান্য টাকায় কয়েকটি দিন জলের রুপোলি শস্যে ডুবে থাকতে পারেন পর্যটকরা। সুন্দরবন বেড়াতে গেলে এখন ইলিশের এই রকমারি পদ চেখে দেখতে পারবেন পর্যটকরা। বর্ষায় এখন ইলিশ ট্যুরিজমের ধুম লেগেছে সুন্দরবনে। পর্যটকরা তাতে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন।

শুধু এ রাজ্যই নয়, মুম্বই, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, গুয়াহাটি প্রভৃতি জায়গা থেকে দলে দলে পর্যটক আসছেন ইলিশের টানে। সুন্দরবনে মানুষ যেতেন বাঘের দেখতে। এখন বাঘ গিয়েছে পিছিয়েএগিয়ে গিয়েছে ইলিশ। তার বাহারি পদগুলি চাখতে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। নোনা জলে থেকে মিষ্টি জলে প্রবেশ করলেই ইলিশের স্বাদ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। খাদ্যরসিকদের বক্তব্য, ক্যানিংয়ে মাতলার মাছের স্বাদ অপূর্ব। এছাড়া ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ এলাকার নদীগুলির ইলিশও অসাধারণ। তার উপর যোগ হয়েছে রাঁধুনির হাতের গুণ। ঘরোয়াভাবে তৈরি হচ্ছে ভাপা-পাতুরি-ঝাল। ফলে সুন্দরবনের দেশজ রান্নায় তা উপাদেয় হয়ে উঠছে এমন যে, খেয়ে আশ মিটছে না পর্যটকদের।

সুমন সাহা