১০০ বছরের পুরনো ঘড়ি রয়েছে তার ঘরে

Vintage Clock Collection: ৪৫ দেশের ৫০০-র বেশি ঘড়ি! শতবর্ষের প্রাচীন সময়কে মুঠোবন্দি করাই স্বপনবাবুর স্বপ্ন

জলপাইগুড়ি: ডিজিটাল ঘড়ি কিংবা স্মার্টওয়াচের যুগে পুরাকালের ঐতিহ্যবাহী ঘড়ির সম্ভার চোখে পড়লে তাক তো লাগবেই! আর এরকমই সম্ভার রয়েছে জলপাইগুড়ির এক ব্যক্তির ঝুলিতে। ঘরে ঢুকলে মনে হতে পারে কোনও সংগ্রহশালার তরফ থেকে প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছে। আসলেই সংগ্রহশালার থেকে কোনও অংশেই কম নয় তাঁর ঘর। বর্তমানে সময় দেখতে আর দেওয়ালের তিন কাঁটার ঘড়ির দিকে তাকাতে হয় না। দেওয়াল ঘড়ি হোক কিংবা হাত ঘড়ি সবেতেই এখন ডিজিটাল কিংবা স্মার্ট ওয়াচ-এরই রমরমা।

কিন্তু ভাবতে অবাক লাগলেও জলপাইগুড়ি শহরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নানা দেশের বহু দুষ্প্রাপ্য ঘড়ি নিজের বাড়িতে সংগ্রহ করেছেন শিল্প সমিতি পাড়া সংলগ্ন লিচুতলার বাসিন্দা স্বপন চক্রবর্তী। শিবমন্দির এলাকার নব যুবক সংঘ শ্রুতিকক্ষে ৪৫ টি দেশের রকমারি প্রায় ৫০০ এরও বেশি ঘড়ির সম্ভার রয়েছে তার। ঘড়ির পাশাপাশি রয়েছে ইংরেজ আমলের টেলিফোন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের দুষ্প্রাপ্য মুদ্রা, গ্রামোফোন। এমনকি রয়েছে সম্রাটদের নানারকমারি সুরাপাত্রও।

তাঁর সংগ্রহে থাকা সুইজারল্যান্ড, লন্ডন, জাপান জার্মানি-সহ বিভিন্ন দেশের দুষ্প্রাপ্য ঘড়িগুলির মধ্যে এখনও বেশ কয়েকটি সচল। শুধু বিদেশের নয়, ভারতের বিভিন্ন সম্রাটদের সুরাপাত্র থেকে শুরু করে নানা ব্যবহার্য জিনিস রয়েছে তাঁর সংগ্রহের সম্ভারে।

আরও পড়ুন : প্রাচীন রীতিতে আজও মনসাপুজোয় কোচবিহারে মদনমোহনবাড়ি ভরে ওঠে মনসাদেবীর পালাগানে

জলপাইগুড়িবাসীর অনেকের কাছেই হয়তো এই তথ্য অজানা। কারণ প্রচারের আলো থেকে স্বপনবাবু অনেকটাই দূরে। স্বপনবাবুর বয়স এখন প্রায় সত্তরোর্ধ্ব! বয়সের ভারে খানিক কাবু হলেও দেশ-বিদেশের দুষ্প্রাপ্য জিনিসের সংগ্রহ থেকে বিরতি নেননি তিনি। এখনও সংগ্রহের কাজে বেশ উৎসাহ তাঁর। তাঁর এমন উৎসাহে মুগ্ধ নবযুবক সংঘ ক্লাবের কর্মকর্তারাও। তবে বিশিষ্ট মহলের দাবি, এই ধরনের সামগ্রী প্রদর্শিত হলে পুরাকালের ঐতিহ্যবাহী জিনিসও সম্পর্কে ধারণা হবে নয়া প্রজন্মের। পাশাপাশি ইতিহাসকে জানার উৎসাহ জন্মাবে তাদের মনে।

কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। কীভাবে স্বপনবাবু দেশবিদেশের এত জিনিস সংগ্রহ করলেন? স্বপনবাবুর কথায়, পরিচিত যাঁরা যাঁরা বিদেশে গিয়েছেন, তাঁদের সকলের কাছ থেকেই জিনিসগুলি সংগ্রহ করেছেন।এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর মেয়েও। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এমন সংগ্রহ সম্ভার সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। স্বপনবাবুর জন্যই আজও জলপাইগুড়ির বুকে তরতাজা ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী।