বীরভূম: প্রচলিত কথা আছে, বাঙালির ধর্মে ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল ঝুলনযাত্রা। শ্রাবণ মাসে একাদশী থেকে পূর্ণিমা, এই পাঁচদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব ঝুলন উৎসব। রাধা মাধবের ঝুলন যাত্রা হিসাবে বিখ্যাত ঝুলন উত্সব প্রতি বছর অত্যন্ত ধুমধাম করে পালিত হয়। রাধা-কৃষ্ণের ভক্তেরা এই বিশেষ দিন দোলনা সাজিয়ে যুগলবিগ্রহ স্থাপন করে পুজো করেন। শুধু মন্দির বা বনেদিবাড়িতে নয়, বহু হিন্দু বাড়িতেই আয়োজন করা হয় ঝুলন উত্সবের।
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে এবার পথে জেলার আইনজীবীরাও
আর এই ঝুলন যাত্রা উপলক্ষে বোলপুরের একটি ক্লাব এক অন্য ধরনের সাজসজ্জা করেছে। যেখানে এলাকার বাচ্চা থেকে বড়রা সকলে মিলে সাজের মাধ্যমে কেউ রূপ নিয়েছে কৃষ্ণ, কেউ আবার রাধার সাজে সেজেছেন। অনেক আবার অন্যান্য দেব-দেবীর সাজে সেজে একদৃষ্টে বসে রয়েছে। যা দেখতে ভিড় উপছে পড়ে দর্শক ও ভক্তদের।
এই উত্সবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ঐহিত্য। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের সঙ্গেই ছোটদের ঝুলন সাজানোর আকর্ষণও কিছু কম নয়। নানা ধরনের মাটির পুতুল, কাঠের দোলনা আর গাছপালা দিয়ে ঝুলন সাজানো হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও ঝুলন উপলক্ষে চলে নাম সংকীর্তন। এই সময় প্রতি দিন ২৫-৩০ রকমের ফলের নৈবেদ্য, লুচি, সুজি নিবেদন করা হয় রাধা-কৃষ্ণকে।
ক্লাবের এক সদস্য জানান, আজ থেকে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত বিভিন্ন মেলা, পুজোর মণ্ডপে দেখা যেত মানুষ বিভিন্ন সাজসজ্জার মাধ্যমে সাধারণের মনে আনন্দ দিচ্ছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রাচীন সেই প্রথা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম হয়ত জানেও না যে গ্রাম বাংলায় এমন কোন সংস্কৃতি প্রচলিত ছিল। মূলত সেই কারণেই ক্লাবের তরফ থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সৌভিক রায়