পাঁচমিশালি Knowledge Story: চাঁদে মানুষের পা-ই পড়েনি কখনও! আর্মস্ট্রংদের কাহিনি পুরোই বানানো গল্প? মেলে ভয়ঙ্কর ‘প্রমাণ’, চমকে উঠবেন জেনে Gallery September 1, 2024 Bangla Digital Desk ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে প্রথম চাঁদে গিয়ে যখন নেমেছিলেন মার্কিন নভোচারীরা, সেই ঘটনা বিশ্বজুড়ে দেখেছেন কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু পৃথিবীতে এখনো এমন বহু মানুষ আছেন, যারা বিশ্বাস করেন, মানুষ আসলে কোনদিন চাঁদে যায়নি। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে গবেষণা চালিয়েছে। তাদের গবেষণা সব সময় দেখা গিয়েছে, চাঁদে মানুষ যাওয়ার ব্যাপারটিকে সাজানো ঘটনা বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় পাঁচ শতাংশ মানুষ। এদের সংখ্যা হয়তো কম, কিন্তু চাঁদে যাওয়ার ব্যাপারে অবিশ্বাস ছড়ানোর জন্য যড়যন্ত্র তত্ত্ব জিইয়ে রাখতে সেটিই যথেষ্ট। চাঁদে মানুষ যাওয়ার ব্যপারটিকে পুরোপুরি ধাপ্পাবাজি মনে করেন যারা, তারা এর সপক্ষে বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরেন। এরা মনে করেন মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র সেরকম প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ তখনও ছিল না, যেটি সফল অভিযানের জন্য দরকার ছিল। এই যুক্তি দিয়ে এরা বলে থাকেন, নাসা তাদের অভিযান যে সফল হবে না, সেটা বুঝে ফেলেছিল। কাজেই তারা সোভিয়েত ইউনিয়নকে মহাকাশ অভিযানে টেক্কা দেওয়ার জন্য হয়তো চাঁদে সফল অভিযান চালানোর নাটক সাজিয়েছিল। কারণ মহাকাশ অভিযানে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে ছিল, এমনকি তারা চাঁদের বুকে একটি যান ক্র্যাশ ল্যান্ড করিয়েছিল। নীল আর্মস্ট্রং চাঁদের বুকে পা দিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ডালপালা ছড়াতে থাকে। তবে এসব গুজব বা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব পাত্তা পেতে শুরু করে ১৯৭৬ সালে একটি বই প্রকাশ হওয়ার পর। বইটির লেখক একজন সাংবাদিক বিল কেসিং। নাসার একটি সহযোগী সংস্থার জনসংযোগ বিভাগে তিনি কিছুদিন কাজ করেছিলেন। তার বইটির নাম ছিল, উই নেভার ওয়েন্ট টু মুন: আমেরিকাস থার্টি বিলিয়ন ডলার সুইন্ডল। সেই বইতে লেখকের মূল বক্তব্য হচ্ছে, মানুষ কখনই চাঁদে যায়নি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসলে তিন হাজার কোটি ডলারের প্রবঞ্চনা করা হয়েছে। এই বইতে এমন কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল যা পরবর্তী বছরগুলোতে ‘চন্দ্র অভিযানের’ সাফল্যে অবিশ্বাসীরা এই বিতর্কে সবসময় উল্লেখ করেছেন। কিছু ছবি দিয়ে তারা এই উদাহারণটি দেওয়ার চেষ্টাও করেন। তাদের প্রশ্ন, চাঁদে তো বাতাস নেই, তাহলে সেখানে মার্কিন পতাকা উড়ল কেমন করে। তাদের আরও প্রশ্ন, কেন এই ছবিতে চাঁদের আকাশে কোন তারামন্ডল দেখা যাচ্ছে না। এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে নাকচ করে দেওয়ার মতো অনেক বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে, বলেছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার মাইকেল রিক। তিনি বলেন, নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ অলড্রিন যখন পতাকাটি খুঁটি দিয়ে চাঁদের মাটিতে লাগাচ্ছিলেন, তখন সেটি কুঁচকে গিয়েছিল। আর যেহেতু পৃথিবীর তুলনায় চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ছয় গুণ কম, তাই কুঁচকানো পতাকাটি সেরকমই থেকে গিয়েছিল। আরেকটি জনপ্রিয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হচ্ছে, পৃথিবীকে ঘিরে যে তেজস্ক্রিয়তার পরিমন্ডল, সেটিতে নভোচারীদের মারা যাওয়ার কথা। তারা কীভাবে চাঁদে যেতে পারে? পৃথিবীকে ঘিরে এই তেজস্ক্রিয় অঞ্চলটিকে বলে ‘ভ্যান অ্যালেন বেল্ট’ এবং সৌর ঝড় আর পৃথিবীর চুম্বকীয় ক্ষেত্রের নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় এই তেজস্ক্রিয়তার সৃষ্টি হয়। নাসার বিজ্ঞানীদের মতে, অ্যাপোলো-১১ এর ক্রু যারা ছিলেন, চাঁদে যাওয়ার সময় তারা ভ্যান অ্যালেন বেল্টে ছিলেন মাত্র দুই ঘন্টা। আর এই বেল্টের যে অঞ্চলটিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা সবচেয়ে বেশি, সেখানে তারা অবস্থান করেন পাঁচ মিনিটেরও কম। ফলে তাদের ওপর তেজস্ক্রিয়তার সেরকম প্রভাব একেবারেই পড়েনি। এরকমই নানা তত্ত্ব থাকলেও এখনও পর্যন্ত চাঁদে পা রাখা মানুষ হিসেবে নীল আর্মস্ট্রংকেই মনে রাখে মানুষ। চাঁদে পা রাখা দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম বাজ অলড্রিন ৷ এয়ারফোর্স অ্যাস্ট্রনট সার্ভিসের সদস্য ছিলেন তিনি ৷ আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গেই চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন অলড্রিন ৷ কিন্তু সেই ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়েও আজও জিইয়ে রয়েছে নানান রহস্য।