ঝাড়গ্রাম: জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হল নিজের উপার্জনকে সঠিকভাবে সঞ্চয় করা। সঞ্চয় না থাকলে মানুষের জীবনে কী বিপর্যয় হতে পারে, তা কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গিয়েছে করোনা পরিস্থিতি । সংগঠিত, অসংগঠিত সমস্ত শ্রমিকদেরই নিজের উপার্জনের যথাসাধ্য সঞ্চয় করা উচিত। নিজের ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখতে এবং যে কোনও বিপদ থেকে উদ্ধার হতে সঞ্চয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই ব্যস্ততম জীবনের মধ্যে মানুষকে সঞ্চয়ের বার্তা দেওয়ার জন্য দুর্গাপুজোর মন্ডপের থিম সঞ্চয় ভবিষ্যৎ। ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরার ঘোড়াধরা সর্বজনীন দুর্গোৎসব পুজো কমিটির পুজো এই বছর ৫৯ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।
পুজোর থিম সঞ্চয় ভবিষ্যৎ। পুরো মণ্ডপ জুড়ে সংগঠিত, অসংগঠিত শ্রমিকদের কর্মজীবন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কোথাও দেখানো হয়েছে চা বাগানের কর্মীদের কথা,কোথাও মৎস্যজীবীদের কথা, কোথাও আবার কলকারখানায় কাজের সঙ্গে নিযুক্ত শ্রমিকদের কথা। তুলনা করা হয়েছে একটি মানুষের জীবনের সঙ্গে একটি গাছের। গাছ যেমন বড় হলে তার শাখা প্রশাখা সংখ্যা বাড়ে, ঠিক মানুষের জীবনেও আর্থিক চাহিদা বাড়ে। কিন্তু তার মধ্যেও মানুষকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সঞ্চয় করতে হবে। তা গাছের ডালে ডালে থলির মধ্যে টাকা সঞ্চয়ের বার্তা দিয়েছে পুজোর উদ্যোক্তারা।
ঘোড়াধরা সর্বজনীন দুর্গোৎসব পুজোকমিটির সম্পাদক উজ্জ্বল পাত্র বলেন, “করোনা অতিমারির সময় সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছিল সঞ্চয় থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তখন মানুষের হাতে কাজ ছিল না। গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিল। যাঁদের কাছে অর্থ সঞ্চয় করা ছিল, তাঁরাই কিন্তু স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করেছে। বাকি বহু মানুষকে অপরের উপর ভরসা করে বেঁচে থাকতে হয়েছে। সেই জায়গায় মানুষ যাতে আগামী ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নিজের উপার্জনের থেকে কিছু অর্থ যদি সঞ্চয় করে, তা হলে হঠাৎ আশা বিপর্যয় থেকে নিজেই নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবে।”
বর্তমান সময়ে মানুষের জীবন ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। কারও থেমে থাকার সময় নেই। সকলেই উপার্জনের পথ খুঁজছে। আর এই উপার্জনের মধ্য দিয়ে নিজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আগামী ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে অর্থ সঞ্চয় করে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুজো কমিটির এই ভাবনা চিন্তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সকলেই।
বুদ্ধদেব বেরা