মুর্শিদাবাদ: বুধবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে নাবালিকা নাতনিকে খুনের চেষ্টা করে আত্মঘাতী হল প্রৌঢ়। গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন প্রৌঢ় বলেই জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুকুমার দাস (৭০)।
মৃতের পরিবারের সদস্যরা জানান, সুতি বাঙাবাড়ি এলাকাতে নিজের নাবালিকা নাতনিকে মারধর করে আত্মহত্যা করেন দাদু। দাদুর বাড়িতেই থাকতেন পর্না প্রমানিক। কিন্তু হঠাৎই পর্না প্রমানিককে ভারি অস্ত্র দিয়ে মারধর করে দাদু বলে অভিযোগ।
পরে প্রৌঢ় সুকুমার দাস নিজেই তার ঘরে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার জেরে স্হানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় পর্না প্রামানিক কে। অন্যদিকে সুকুমার দাসের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন পুলিশ ।সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন।
মৃতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সুকুমার বাবু এক সময়ে পুলিশের হোমগার্ড পদে কর্মরত ছিলেন। গত ২৫ বছর আগে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। তারপর থেকেই বাড়িতে একপ্রকার সজ্জাসায়ী ছিলেন তিনি। এরপরে সুকুমার দাসের স্ত্রী নূপুর দাস মহিলা হোমগার্ড পদে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সুতি থানার অন্তর্গত আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত রয়েছেন।
সুকুমার ও নূপুর দেবীর একমাত্র কন্যা ও তার স্বামী দিন মজুরের কাজ করেন। বছরের বেশির ভাগ সময়ই ভিন রাজ্যে কর্মরত। নূপুর দেবীর বছর ৮ এর পর্না প্রমানিককে নিয়ে সুতির বাঙাবাড়ি গ্রামে নিজের বাড়িতে থাকতেন দাদু ও দিদা। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ থাকার জন্য সম্প্রতি সুকুমার বাবুর কিছু মানষিক সমস্যা দেখা দেয়। বুধবার সুকুমারের স্ত্রী আহিরণ ফাঁড়ি থেকে নিজের কর্মস্থলে চলে এলে সুকুমার বাবু তার নাবালিকা নাতনিকে ভারি কোন কিছু দিয়েই প্রচন্ড মারধর করেন বলে অভিযোগ।
এরপরেই সুকুমার দাস নিজের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে নূপূর দাস ও আহিরণ ফাঁড়ির পুলিশ দ্রুত বাড়িতে পৌঁছে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় নাবালিকা কে উদ্ধার করে প্রথমে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে অবস্থার অবনতি হলে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে চিকিৎসার জন্য। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
কৌশিক অধিকারী