দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান : সময়ের আগেই জন্ম হয়েছে তাদের। মাতৃগর্ভের কাটানো সময়টা তাদের কাটাতে হয়েছে টানা চিকিৎসার মাধ্যমে। জন্মের পর থেকে লাগাতার দু মাসের বেশি সময় যমজ শিশু চিকিৎসাধীন ছিল হাসপাতালে। জন্মের সময় সম্পূর্ণ হয়নি শারীরিক বিকাশ। সম্পূর্ণ হয়নি মস্তিষ্কের বিকাশও। কিন্তু চিকিৎসকের লাগাতার পরিশ্রম, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়মিত নজরদারি, যত্নের ফলে অবশেষে আজ তারা সুস্থ। দুর্গাপুরের সগরভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা সৌভিক চক্রবর্তী। তার স্ত্রী আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান নিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের অনেকটা আগেই তাদের জন্ম হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, ২৮ থেকে ২৯ সপ্তাহের মধ্যে যমজ শিশু দুটির জন্ম হয়।যার মধ্যে একটি পুত্র সন্তান এবং একটি কন্যা সন্তান।
যাদের জন্মের সময় ওজন ছিল এক কেজির কম। তাছাড়াও শারীরিক ও মস্তিষ্কের গঠন সম্পূর্ণ হয়নি। আর এর মধ্যেই প্রিম্যাচিউরড ওই শিশু দুটি ভয়ংকর সংক্রমনের শিকার হয়। দুর্গাপুরের একটি নার্সিংহোমে জন্ম নেওয়া ওই শিশু দুটিকে এরপর স্থানান্তর করা হয় দুর্গাপুরেরই একটি বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে ওই শিশু দুটির চিকিৎসা শুরু করেন শিশু বিশেষজ্ঞ সীতাংশু চ্যাটার্জি। তিনি টানা দুই মাস ধরে ওই শিশু দুটির চিকিৎসা করেছেন। ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, যেহেতু সময়ের আগে শিশু দুটির জন্ম হয়েছিল, ফলে তারা সংক্রমণের শিকার হয়েছিল।
আরও পড়ুন : পড়ুয়াদের পুষ্টি যোগাতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বড় চেষ্টা, বিদ্যালয়ে হচ্ছে মাশরুম চাষ
হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর ফের তাদের অন্য ইনফেকশন ধরা পড়ে। যার ফলে শিশু দুটির জীবন সংশয় দেখা দিয়েছিল। ওই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, সংক্রমণ ধরা পড়ার পর চিকিৎসা করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। অ্যান্টিবায়োটিক বা ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রেও নানা রকম প্রতিবন্ধকতা ছিল। তবে শেষমেষ সেই শিশু দুটিকে সুস্থ করা গিয়েছে। তাছাড়াও শিশু দুটির জন্মের সময় চোখের সমস্যা দেখা গিয়েছিল।
যার জন্য দেওয়া হয়েছিল বিশেষ ইনজেকশন। বর্তমানে শিশু দুটি সুস্থ স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। যে কারণে যমজ শিশু দুটিকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
জীবন সংশয়ে থাকা এই দুটি শিশুর প্রাণ বাঁচাতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেমন খুশি, তেমনই খুশি শিশু দুটির পরিবারও।
নয়ন ঘোষ