মা কালীবেষ্টিত বাঁশের বাঁক নিয়ে যাচ্ছেন ভক্ত

Sawan 2024: বাঁকে ফুটে উঠছে শিল্পের কারুকাজ, দেখতে শ্রাবণ মাসে রাস্তার দুই ধারে উপচে পড়ছে ভিড়

নদিয়া: বাঁকে করে গঙ্গাজল নিয়ে গিয়ে সেটি শিবের মাথায় ঢালার প্রবণতা রয়েছে যুগ যুগান্তর ধরে। তবে বর্তমানে এই বাঁকেই ফুটে উঠেছে বিভিন্ন শিল্পকলা। যা দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় করছেন বহু মানুষ। আজ অর্থাৎ ১২ অগস্ট এবারের শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার। স্বাভাবিকভাবেই শিব ভক্তদের কাছে দিনটি বিশেষ তাৎপর্যের। এই দিনে বাঁকে করে জল নিয়ে গিয়ে শিবের মাথায় ঢাললেন লক্ষাধিক ভক্ত।

শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র বলে বিবেচিত হয় শিবভক্তদের কাছে। শ্রাবণ মাসের প্রথম ও শেষ সোমবার শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য নবদ্বীপের গঙ্গার ঘাটে ভিড় করেন লক্ষাধিক মানুষ।

আর‌ও পড়ুন: শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার সময় পিষে দিল বেপরোয়া লরি! ঘটনাস্থলেই শেষ দু’জন

কেউ গাড়িতে, কেউ মোটরবাইকে কেউবা পায়ে হেঁটে কাঁধে করে বাঁক নিয়ে গিয়ে ৩৫ কিলোমিটার দূরে শিবনিবাস মন্দিরে জল ঢালতে যান। মোটা বাঁশ দিয়ে তৈরি এক ধরনের বিশেষ বস্তু, যার দুই দিকে দড়ি দিয়ে ঝোলালো থাকে মাটির অথবা প্লাস্টিকের ঘট, সেটিকে বলা হয় বাঁক। সেই বাঁকে ঝোলানো ঘটে করেই জল বয়ে নিয়ে যান ভক্তরা। তবে এখন আর সাধারণ বাঁশের বাঁক দেখা যায় না। বরং শিবভক্তরা নিয়ে আসেন বিভিন্ন কারুকার্য করা রংবেরঙের বাঁক।

কোনও বাঁক থাকে বিভিন্ন ফুল দিয়ে সাজানো, কোনও বাঁকে থাকে শিবলিঙ্গ, শিবের ত্রিশূল, সাং কিংবা কোনও বাঁকে দেখা যায় মা কালীর মূর্তি। বর্তমানে এই কারুকার্য করা বাঁকের প্রতিযোগিতা লেগে যায় ভক্তদের মধ্যে। লক্ষাধিক মানুষের হাতে এই বাঁকে করে জল বয়ে নিয়ে যাওয়া দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে বহু সাধারণ মানুষ।

এইসকল বাঁকগুলি সাধারণ বাঁকের তুলনায় যথেষ্ট ভারি হয়। এবং সেগুলি নিয়ে যাওয়াও যথেষ্ট পরিশ্রমসাধ্য। সেই কারণেই পথ চলতি সেই সমস্ত ভক্তদের সেবা করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারাও রাস্তার ধারে তৎপর থাকেন। কেউ বাঁশের চাতাল করে রাখেন সেই বাঁকগুলি রাখার জন্য, কেউবা ভক্তদের বিশ্রামের জন্যে দেন জল ও আহার। কেউবা তাঁদের পা ধুয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন।

মৈনাক দেবনাথ