Tag Archives: Sawan

Sawan 2024: ‘ভোলে বাবা পার করেগা’- গলায় এই মন্ত্র, বাঁকে নিজের শিশু, দু’দিনের পথ পাড়ি দিয়ে মহাদেবের মাথায় জল ঢালা

হুগলি: ঋষি শ্রবণের পৌরাণিক গল্প অনেকেরই জানা। যেখানে নিজের বৃদ্ধ মা বাবাকে তীর্থ করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাঁধে বাঁক নিয়ে তাতে মা ও বাবাকে বসিয়ে তীর্থ করছিলেন অন্ধ মুনির পুত্র ঋষি শ্রবণ। সেই কাহিনীর কোথায় ঠিক মনে পড়ে যায় তারকেশ্বরের এক পুণ্যার্থীকে দেখলে। তারও কাঁধে বাঁক, তার একদিকে রয়েছে শিবের মাথায় ঢালার এক ঘড়া জল ও অন্যদিকে রয়েছে তাঁর ছোট্ট মেয়ে। এই নিয়েই শেওড়াফুলি থেকে পায়ে হেঁটে তারকেশ্বর যাচ্ছেন পুণ্যার্থী৷

শ্রাবণ মাসে তারকেশ্বরে বাবা তারকনাথের কাছে জল ঢালতে যাওয়ার প্রথা বহু প্রাচীন। সেখানে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী আসে কাঁধে বাঁক নিয়ে মহাদেবের কাছে জল ঢালতে। শ্রাবণের শেষ সোমবারে উপচে পড়া ভিড় সেখানেই কাঁধে বাক নিয়ে তার মধ্যে বাচ্চাকে বসিয়ে মানসিক পূরণ করতে যাচ্ছেন চন্দননগরের বাসিন্দা রবিন অধিকারী। শেওড়াফুলি থেকে জল তুলে কাঁধের বাঁকের মধ্যে নিজের ছোট্ট মেয়েকে বসিয়ে পথ হাঁটছেন বাবা। সঙ্গে সঙ্গী রয়েছেন তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

আরও পড়ুন – Indian Cricketer Love story: তারিখের ফেরেই সব, প্রেমের বাঁধনে বাঁধা পড়েছিলেন, এবার তারিখ মিলিয়েই বিয়ের মেগা সিদ্ধান্ত, চিনে নিন ভারতীয় ক্রিকেটারের মিষ্টি হবু বউকে

এই বিষয়ে রবিন অধিকারী বলেন, বাচ্চার জন্য মানসিক করা ছিল সেই কারণেই কাঁধে বাচ্চাকে নিয়ে তারা যাচ্ছেন জল ঢালতে। পথ যতই দুর্গম হোক না কেন কোন রকম কষ্টই তাদের কাছে লাগছে না কারণ তাদের ব্রত, ‘ভোলে বাবা পার কারেগা।’ দুদিন ধরে পথ হেঁটে তারা পৌঁছাবেন তারকেশ্বর মন্দিরে। সেখানে গিয়ে তারা পুজো দেবেন জল ঢালবেন।

প্রসঙ্গত, পুরাণের কাহিনী অন্ধক মনি ও ঋষি শ্রবণ এর ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি ঘটছে তারকেশ্বর জলযাত্রীদের কাছে। পুরাণের কাহিনীতে ছেলে কাঁধে করে নিয়ে তীর্থ করতে যাচ্ছিল মা-বাবাকে আর তারকেশ্বরের ক্ষেত্রে বাবা নিজের সন্তানকে নিয়ে বাঁকে বসিয়ে যাচ্ছেন মহাদেবের কাছে জল ঢালতে।

Sawan 2024: বাঁকে ফুটে উঠছে শিল্পের কারুকাজ, দেখতে শ্রাবণ মাসে রাস্তার দুই ধারে উপচে পড়ছে ভিড়

নদিয়া: বাঁকে করে গঙ্গাজল নিয়ে গিয়ে সেটি শিবের মাথায় ঢালার প্রবণতা রয়েছে যুগ যুগান্তর ধরে। তবে বর্তমানে এই বাঁকেই ফুটে উঠেছে বিভিন্ন শিল্পকলা। যা দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় করছেন বহু মানুষ। আজ অর্থাৎ ১২ অগস্ট এবারের শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার। স্বাভাবিকভাবেই শিব ভক্তদের কাছে দিনটি বিশেষ তাৎপর্যের। এই দিনে বাঁকে করে জল নিয়ে গিয়ে শিবের মাথায় ঢাললেন লক্ষাধিক ভক্ত।

শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র বলে বিবেচিত হয় শিবভক্তদের কাছে। শ্রাবণ মাসের প্রথম ও শেষ সোমবার শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য নবদ্বীপের গঙ্গার ঘাটে ভিড় করেন লক্ষাধিক মানুষ।

আর‌ও পড়ুন: শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার সময় পিষে দিল বেপরোয়া লরি! ঘটনাস্থলেই শেষ দু’জন

কেউ গাড়িতে, কেউ মোটরবাইকে কেউবা পায়ে হেঁটে কাঁধে করে বাঁক নিয়ে গিয়ে ৩৫ কিলোমিটার দূরে শিবনিবাস মন্দিরে জল ঢালতে যান। মোটা বাঁশ দিয়ে তৈরি এক ধরনের বিশেষ বস্তু, যার দুই দিকে দড়ি দিয়ে ঝোলালো থাকে মাটির অথবা প্লাস্টিকের ঘট, সেটিকে বলা হয় বাঁক। সেই বাঁকে ঝোলানো ঘটে করেই জল বয়ে নিয়ে যান ভক্তরা। তবে এখন আর সাধারণ বাঁশের বাঁক দেখা যায় না। বরং শিবভক্তরা নিয়ে আসেন বিভিন্ন কারুকার্য করা রংবেরঙের বাঁক।

কোনও বাঁক থাকে বিভিন্ন ফুল দিয়ে সাজানো, কোনও বাঁকে থাকে শিবলিঙ্গ, শিবের ত্রিশূল, সাং কিংবা কোনও বাঁকে দেখা যায় মা কালীর মূর্তি। বর্তমানে এই কারুকার্য করা বাঁকের প্রতিযোগিতা লেগে যায় ভক্তদের মধ্যে। লক্ষাধিক মানুষের হাতে এই বাঁকে করে জল বয়ে নিয়ে যাওয়া দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে বহু সাধারণ মানুষ।

এইসকল বাঁকগুলি সাধারণ বাঁকের তুলনায় যথেষ্ট ভারি হয়। এবং সেগুলি নিয়ে যাওয়াও যথেষ্ট পরিশ্রমসাধ্য। সেই কারণেই পথ চলতি সেই সমস্ত ভক্তদের সেবা করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারাও রাস্তার ধারে তৎপর থাকেন। কেউ বাঁশের চাতাল করে রাখেন সেই বাঁকগুলি রাখার জন্য, কেউবা ভক্তদের বিশ্রামের জন্যে দেন জল ও আহার। কেউবা তাঁদের পা ধুয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন।

মৈনাক দেবনাথ

Sawan 2024: শ্রাবণের শেষ সোমবারে উপচে পড়া ভিড় ৩০০ বছরের পাতলেশ্বর মন্দিরে

মুর্শিদাবাদ: শ্রাবণ মাসকে হিন্দু ধর্মে অতি পবিত্র একটি মাস বলে গণ্য করা হয়। এটি দেবাদী দেব মহাদেবের মাস বলে পরিচিত। শ্রাবণ মাসে শিব ভক্তরা বিভিন্ন শৈব ক্ষেত্রে গিয়ে শিবলিঙ্গের মাথায় জল ঢালেন। বিশেষ করে শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলোতে শিব ভক্তদের বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায় বিভিন্ন শিব মন্দিরে। এই সোমবার অর্থাৎ ১২ অগস্ট হল এবারের শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার। স্বাভাবিকভাবেই এই দিন বিভিন্ন শৈবক্ষেত্র এবং শিব মন্দিরে সকাল থেকেই উপচে পড়ছে ভক্তদের ভিড়।

শ্রাবণ মাসের চতুর্থ সোমবার উপলক্ষে এদিন ভক্তদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেল বহরমপুরের পাতালেশ্বর শিব মন্দিরে। এক সময়ে কাশিমবাজার বন্দরকে কেন্দ্র করে এই এলাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নগরীতে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু অষ্টাদশ শতকে গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভাগীরথী ‘কাটিগঙ্গা’-তে পরিণত হলে বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে ক্রমশই গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে কাশিমবাজার। কিন্তু প্রতি বছরের এই সময়টা একেবারে বদলে যায় শহরের ছবিটা। আর তার কারণ পাতালেশ্বর মন্দির।

আর‌ও পড়ুন: আর স্কুলে পৌঁছনো হল না, সরকারি বাসের ধাক্কায় রাস্তাতেই মৃত্যু শিক্ষকের

মুর্শিদাবাদের ইতিহাসে কাশিমবাজার এক সুপ্রসিদ্ধ নাম। একসময় ফরাসি, ডাচ, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সকলেই এখানে বাণিজ্য কুঠি গড়ে তুলেছিল। হুগলি, পদ্মা ও জলঙ্গির মাঝখানে অবস্থিত ত্রিভুজাকার শহরটিকে অনেকে কাশিমবাজার বলে বর্ণনা করেছেন। এই কাশিমবাজার প্রাচীনকাল থেকেই ইতিহাসের অনেক সাক্ষ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। শোনা যায়, ১৭ দশকে ভাগিরথী নদী তার গতিপথ কিছুটা পরিবর্তনে করে কাশিমবাজারের পাশে দিয়ে ফরাসডাঙা পর্যন্ত গড়ে তুলেছিল কাটিগঙ্গা। আজ থেকে আনুমানিক ৩০০ বছর আগে কাটিগঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে গড়ে উঠেছিল এই পাতালেশ্বর শিব মন্দির। হিন্দু পুরাণ অনুসারে এখানকার শিবলিঙ্গকে বলা হয় স্বয়ম্ভু জ্যোতির্লিঙ্গ।

২০০৬ সালে পাতলেশ্বর মন্দিরের উন্নতির জন্য কমিটি তৈরি করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এই অঞ্চলের অধিবাসীরা ও ব্যবসায়ীরা মন্দিরটির উন্নতিকল্পে চার লক্ষ টাকা দান করেন। পরবর্তীকালে মন্দিরটিকে একটু বৃহৎ আকার দেওয়া হয়। শ্রাবণের শেষ সোমবার এই মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালতে বরাবরই ভিড় জমান ভক্তরা। এবারেও তার অন্যথা হল না।

কৌশিক অধিকারী

Sawan 2024: শুশুনিয়ার ঝর্ণার জল নিয়ে পথ পাড়ি, শিবলিঙ্গে জল ঢালতে ব্যাপক উন্মাদনা

বাঁকুড়া: শ্রাবণ মাস দেবাদিদেব মহাদেবের মাস। সকাল থেকেই বিভিন্ন শিব মন্দিরে উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড়। শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবার সেই ছবি ধরা পড়ল বাঁকুড়াত‌ওে। শুধুমাত্র শিবের প্রতি বিশ্বাস আর ভক্তির জোরে শিশু থেকে বৃদ্ধ এমনকি কিশোর-কিশোরী থেকে প্রৌঢ়া, প্রত্যেককেই দেখা গেল শুশুনিয়া পাহাড়ের ঝর্ণা থেকে জল নিয়ে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে বাবা ভোলেনাথের মন্দিরে গিয়ে শিবলিঙ্গের মাথায় জল ঢালতে।

লম্বা পথ বাঁকে জল নিয়ে হাঁটতে তাঁদের কোনও কষ্ট হয়নি। এর কারণ হিসেবে পুণ্যার্থীরা জানিয়েছেন, তাঁদের মনে থাকা আধ্যাত্মিক চেতনা এই পথ পাড়ি দিতে শারীরিক ও মানসিক জোর যুগিয়েছে। ভোরে বাবার আশীর্বাদ পাওয়ার ইচ্ছে নিয়েই মন্দিরে পৌঁছে যান ভক্তেরা। দিনভর চলে মহাদেবকে স্নান করানো এবং পুজো পাঠ। বাঁকুড়ার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র শুশুনিয়া পাহাড়। পিছনে সুবিশাল পাহাড়। পাহাড়ের কোলে দেখা যাচ্ছে কালো মেঘ। আর এই পাহাড়ের জলকে কেন্দ্র করেই মানুষের আধ্যাত্মিক বিশ্বাস।

আর‌ও পড়ুন: অনলাইন পোর্টাল হয়েও হাল ফিরল না, পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে জেলার কলেজগুলো

শুশুনিয়ার পবিত্র ঝর্ণার জল বাঁকে করে বহন করে নিয়ে যান ভক্তরা। এরপর মন্দিরে গিয়ে শিবলিঙ্গের মাথায় সেই জল ঢালেন। সোমবার দেখা গেল পাহাড়ের কোলে গেরুয়া বসন পরিহিত সঙ্গবদ্ধ মানুষের লম্বা লাইন। রাস্তার এক ধার দিয়ে হাঁটছেন পূর্ণ্যার্থীরা, অপর ধার দিয়ে যাচ্ছে অন্যান্য যানবাহন। এত ভিড়ের মধ্যেও যেন শুশুনিয়ার সৌন্দর্য ঢেকে রাখা যাচ্ছে না।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

Sawan 2024: শ্রাবণের তৃতীয় সোমবার তোর্ষা কালীবাড়িতে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়

শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবারে ভক্তদের ভিড় তোর্ষা কালীবাড়িতে
শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবারে ভক্তদের ভিড় তোর্ষা কালীবাড়িতে
শুধু জেলার নয়, দূরদুরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা পুজো দিতে আসেন এই মন্দিরে
শুধু জেলার নয়, দূরদুরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা পুজো দিতে আসেন এই মন্দিরে
ভক্ত মহলে তোর্ষা কালীবাড়ির একটি আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে
ভক্ত মহলে তোর্ষা কালীবাড়ির একটি আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে
শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার মন্দিরে যজ্ঞের আয়োজন হয়, ভক্তরা এই যজ্ঞে আহুতি দেন
শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার মন্দিরে যজ্ঞের আয়োজন হয়, ভক্তরা এই যজ্ঞে আহুতি দেন
ভক্তরা তোর্ষা নদী থেকে জল তুলে শিবলিঙ্গের অভিষেক করেন
ভক্তরা তোর্ষা নদী থেকে জল তুলে শিবলিঙ্গের অভিষেক করেন

Sawan 2024: ভারতের একমাত্র পঞ্চমুখী শিব মন্দির এইখানে অবস্থিত, শ্রাবণ মাসে ছুটে আসেন ভক্তরা

মুর্শিদাবাদ: শৈব সম্প্রদায়ের কাছে এই শ্রাবণ মাস মহাদেবের মাস। অতি পুণ্যের মাস শ্রাবণ। সেই মাসের তৃতীয় সোমবারে ভক্তদের সমাগমে ভরে উঠেছে মুর্শিদাবাদের বাঘডাঙা পঞ্চমুখী শিব মন্দির। ভারতবর্ষের একমাত্র পঞ্চমুখী শিব মন্দির হিসেবে এটি বিখ্যাত।

মনস্কামনা নিয়ে দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা পায়ে হেঁটে শিবের মাথায় জল ঢালার উদ্দেশ্যে এই পঞ্চমুখী শিব মন্দিরে এসেছেন। মুর্শিদাবাদ জেলার স্থানীয় ইতিহাসে অতি পরিচিত বাঘডাঙা হল একটি প্রাচীন জায়গা, যা আজও জীর্ণতার চাদর জড়িয়ে মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়ে আছে। এই এলাকার পঞ্চমুখী শিবমন্দির প্রাঙ্গণের মধ্যে কালীশ্বর শিব মন্দির প্রধান। এছাড়া আরও ১৩ টি শিবমন্দির রয়েছে। আঠারো শতকের শেষদিকে বাঘডাঙার রাজা কালীশঙ্কর রায় এই মন্দিরগুলি প্রতিষ্ঠা করেন। মূল দ্বার দিয়ে প্রবেশ করে প্রশস্ত অঙ্গনে রয়েছেন কালীশ্বর শিব। দৈর্ঘ্য-প্রস্থে প্রায় ১৮ ফুট।

আর‌ও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরই দুর্গাপুর ব্যারেজ দেখতে ছুটলেন জেলাশাসক ও এসপি

৯ টি চূড়াবিশিষ্ট মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট। দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তি ও ফুলকারি নকশা আছে। কালীশ্বর শিব এখানে পঞ্চমুখের এবং প্রায় চার ফুট উচ্চতার। এই প্রাঙ্গণের মধ্যে উত্তরে পাঁচটি শিবমন্দির আছে, যার দুটি আটচালা ও বাকিগুলি চারচালা। দক্ষিণে আট’টি শিবমন্দির আছে, যার দুটি আটচালা ও বাকিগুলি চারচালা স্থাপত্য রীতির। মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে একটু উত্তরে গেলেই বাঘডাঙা রাজের বিশাল ঠাকুরবাড়িতেও অনেকগুলি মন্দির রয়েছে।

ঠাকুরবাড়ির মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করলেই পড়ে প্রাচীর ঘেরা প্রশস্ত অঙ্গন। একটি বড় দালান মন্দিরে দেবী সিংহবাহিনী নিত্য পুজো পান। মূল বেদীর উপর দেবী মহিষমর্দিনী রয়েছেন। দুর্গা পুজোয় এখানে বড় উত্‍সব হয়। এর পশ্চিমদিকে রয়েছে লক্ষ্মী-জনার্দনের মন্দির। আঠারো শতকে সূর্যমানের পুত্রবধূ পার্বতীদেবী এই মন্দিরগুলি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

একসময় এখানে অনেক মন্দির ছিল ও কাঁসর-ঘণ্টাধ্বনিতে মুখরিত থাকত চারপাশ। কিন্তু আজ উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় সব ধ্বংসপ্রাপ্ত। রাজবাড়িতে ছিল রাধাকৃষ্ণ মন্দির, কাছেই ছিল একবাংলা সূর্যেশ্বর মন্দির সহ কত ছোটবড় মন্দির। এখন সবই প্রায় ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। চারিপাশ ভোরে উঠেছে জঙ্গলে। এখানে নরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়দের পূজিত প্রায় ৩০০ বছরের কষ্টিপাথরের কালীমূর্তিটি মূল মন্দির নষ্ট হওয়ার কারণে একটি দালান মন্দিরে পূজিত হচ্ছে। কাছেই বিরাট দিঘি রয়েছে, নাম সদর পুকুর। বর্তমানে বাঁধানো ঘাট, বসার জায়গা করে দিঘির সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে।

কৌশিক অধিকারী

Sawan 2024: শ্রাবণের তৃতীয় সোমবারে বিরল মহাযোগ, ঠিক এই সময়ে করুন শিবের জলাভিষেক, খুলবে ভাগ্য, বিপদে ঢাল হয়ে থাকবেন মহাদেব

শিবের প্রিয় মাস শ্রাবণ মাস। এই মাসে নিষ্ঠা সহকারে দেবাদিদেবের পুজো করা হয়।আজ পবিত্র শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবার। এই দিনটি ভগবান শিবের পুজো ও জলাভিষেকের জন্য খুবই বিশেষ। তৃতীয় সোমবার হরিহরতিকা।
শিবের প্রিয় মাস শ্রাবণ মাস। এই মাসে নিষ্ঠা সহকারে দেবাদিদেবের পুজো করা হয়।আজ পবিত্র শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবার। এই দিনটি ভগবান শিবের পুজো ও জলাভিষেকের জন্য খুবই বিশেষ। তৃতীয় সোমবার হরিহরতিকা।
 এই দিনে ভগবান শিবের বিশেষ শিবলিঙ্গের পূজা করলে ভগবান শিব ও বিষ্ণু উভয়ের আশীর্বাদ বর্ষিত হয়। শুধু তাই নয়, ভগবান নিরীহ ভক্তের সকল ইচ্ছা পূরণ করেন। এবার শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবার অনেক আশ্চর্যজনক কাকতালীয় ঘটনা রয়েছে।
এই দিনে ভগবান শিবের বিশেষ শিবলিঙ্গের পূজা করলে ভগবান শিব ও বিষ্ণু উভয়ের আশীর্বাদ বর্ষিত হয়। শুধু তাই নয়, ভগবান নিরীহ ভক্তের সকল ইচ্ছা পূরণ করেন। এবার শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবার অনেক আশ্চর্যজনক কাকতালীয় ঘটনা রয়েছে।
কাশীর জ্যোতিষী পণ্ডিত সঞ্জয় উপাধ্যায় জানান, শবন মাসের তৃতীয় সোমবার শুক্লপক্ষে পড়ছে। এই দিনে অশ্লেষা নক্ষত্র রয়েছে এবং যয়ীজ নামে একটি যোগ তৈরি হচ্ছে, যা অত্যন্ত শুভ। এছাড়াও এই দিনে সৌম্য নামে একটি যোগও তৈরি হচ্ছে, যা এই সোমবারকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।
কাশীর জ্যোতিষী পণ্ডিত সঞ্জয় উপাধ্যায় জানান, শবন মাসের তৃতীয় সোমবার শুক্লপক্ষে পড়ছে। এই দিনে অশ্লেষা নক্ষত্র রয়েছে এবং যয়ীজ নামে একটি যোগ তৈরি হচ্ছে, যা অত্যন্ত শুভ। এছাড়াও এই দিনে সৌম্য নামে একটি যোগও তৈরি হচ্ছে, যা এই সোমবারকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।
পণ্ডিত সঞ্জয় উপাধ্যায় জানান, আজ সোমবার হরিহর। কারণ এটি শুক্লপক্ষে শুরু হচ্ছে। এই দিনে ভগবান শিবের শঙ্কর নারায়ণ শিবলিঙ্গের পূজা করা উচিত।
পণ্ডিত সঞ্জয় উপাধ্যায় জানান, আজ সোমবার হরিহর। কারণ এটি শুক্লপক্ষে শুরু হচ্ছে। এই দিনে ভগবান শিবের শঙ্কর নারায়ণ শিবলিঙ্গের পূজা করা উচিত।
এই শিবলিঙ্গের পুজোর সময় বেলপত্র এবং তুলসী দুটোই অর্পণ করা উচিত। এর ফলে শিব ও বিষ্ণু উভয়েরই আশীর্বাদ পাওয়া যাবে।
এই শিবলিঙ্গের পুজোর সময় বেলপত্র এবং তুলসী দুটোই অর্পণ করা উচিত। এর ফলে শিব ও বিষ্ণু উভয়েরই আশীর্বাদ পাওয়া যাবে।
পঞ্চাঙ্গ অনুসারে,একই সময়ে অমাবস্যা তিথি থেকে অশ্লেষা নক্ষত্রও শুরু হয়েছে, যা চলবে সোমবার বিকাল ৩টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে ভগবান শিবের জলাভিষেকের জন্য এই সময়টি খুবই শুভ।
পঞ্চাঙ্গ অনুসারে,একই সময়ে অমাবস্যা তিথি থেকে অশ্লেষা নক্ষত্রও শুরু হয়েছে, যা চলবে সোমবার বিকাল ৩টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে ভগবান শিবের জলাভিষেকের জন্য এই সময়টি খুবই শুভ।

 

Sawan Month Adiyogi: পুণ্য শ্রাবণে মহাদেবের বিরল রূপ, চমকে দিলেন বাঁকুড়ার শিল্পী, এক দর্শনেই মন ভরবে

বাঁকুড়া: আদি যোগী! শ্রাবণ মাসের মহাদেব। মহাদেবের প্রতি ভক্তের নিষ্ঠা এবং ভালবাসা, যেন মুষলধারে বৃষ্টি কেও হার মানিয়ে দেয় শ্রাবণ মাসে। বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়ার পবিত্র জল মাথায় বহন করে বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন এক্তেশ্বর মন্দির পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যান ভক্তরা, শুধুমাত্র দেবাদিদেব মহাদেবের মাথায় জল ঢালার জন্য। সে কারণেই এই শৈব মাসে বাঁকুড়ার এক তরুণ শিল্পী সোহম কুমার মণ্ডল তৈরি করলেন আদি যোগীর মূর্তি।

যার উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফুট। মূর্তিটি তিনি তৈরি করেছেন ভরা শ্রাবণের মাঝেই। তৈরি করতে কষ্ট হয়েছে। বৃষ্টির জল এবং আবহাওয়া বাধা হয়ে দাঁড়ালেও শিল্পীর অদম্য প্রচেষ্টায় মাত্র তিন দিনেই ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন তিনি আদিযোগীকে। পুরো মূর্তিটি তৈরি হয়েছে শোলা দিয়ে। সময় লেগেছে তিন দিন। ওজন রয়েছে প্রায় ১০ কেজি। তিন দিন তিন রাত পরিশ্রম করে তৈরি হয়েছে এই মূর্তি, এ ভর্তি যাবে তালডাঙরা।

আরও পড়ুনDigha News: ওজন ৫০০ কেজি! ইলিশ-বোয়াল নয়, দিঘায় এই দৈত্যাকার মাছই এখন খবরের হেডলাইনে! দাম আরও চমকদার!

পুরো মূর্তিটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় তিন পেটি শোলা। এক লিটার প্রাইমার এবং ১ লিটার রং। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে বেশ। প্রায় কুড়ি হাজার টাকা মূল্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে মূর্তিটি। লক্ষ্য শুশুনিয়া থেকে এক্তেশ্বর! ভরা শ্রাবণ মাসে শৈব চেতনা যেন জেগে ওঠে বাঁকুড়া জেলায়। এবারও তার উন্মাদনা দেখা গেল শৈল্পিক চিন্তা ভাবনাতে। ফুটে উঠলেন আদি যোগী শোলা দিয়ে। মূর্তিটি অনেকটা তৈরি করা হয়েছে যামিনী রায়ের আদলকে সম্মান জানিয়ে। বিশ্ব বরেণ্য শিল্পীর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই মূর্তিটি তৈরি করেছেন তরুণ শিল্পী সোহম কুমার মন্ডল।

বিভিন্ন ধরনের শৈল্পিক চর্চা করতে থাকেন সোহম। সামনেই আসন্ন পুজো এবং তার আগে, প্রায় তিন-চারটি মন্ডপের কাজ পেয়েছেন তিনি। ব্যস্ততা চরম তুঙ্গে, তা সত্ত্বেও অর্ডার মাফিক তৈরি করলেন পাঁচ ফুটের আদিযোগী। যা এখন পৌঁছে যাবে বাঁকুড়ার সবচেয়ে বড় শৈব ক্ষেত্র গুলির মধ্যে একটি একটি এক্তেশ্বর শিবমন্দিরে।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

 

Purulia Farmers: ভরা শ্রাবণেও বৃষ্টির দেখা নেই, সেচের অভাবে মাথায় হাত পুরুলিয়ার চাষিদের

পুরুলিয়া: খরা প্রবণ জেলা পুরুলিয়া।‌ এই জেলার মাটিতে চাষবাস খুব কমই হয়। ‌এবার শ্রাবণ মাসেও পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখা নেই জেলায়। ‌আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চাষিদের। রোহিনী উৎসবের সময় অনেকেই জমি হাল দিয়েছিলেন। সেই সমস্ত জমিতে ধানের চারা লাগানো হলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে সেভাবে চাষ করা সম্ভব হয়নি।

অন্যান্য বছর শ্রাবণ মাসে মুষলধারায় বৃষ্টি হয়। কিন্তু এই বছর সেই তুলনায় বৃষ্টির দেখা নেই। এলাকায় সেভাবে কোনও সেচের ব্যবস্থা নেই। বছরে একবারই ধান চাষ হয় পুরুলিয়ার এইসব এলাকায়।‌ তাই এই চাষ অনেকখানি বর্ষার উপর নির্ভরশীল। ‌পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ঠিকঠাকভাবে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সঠিকভাবে চাষ না হলে গোটা বছর সংসার চলবে কি করে সেই চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন কৃষকরা।

আর‌ও পড়ুন: শিক্ষক-দারোয়ান-রাঁধুনি সব তিনিই! ভিলেন রাস্তার জন্য প্রধান শিক্ষকের এ কী হাল

এই বিষয়ে ঝালদা-১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ্য কবিতা মণ্ডল বলেন, বর্ষার পরিমাণ অনেকখানি কম রয়েছে। তাই চাষিরা চাইছেন যাতে খরা ঘোষণা করা হোক। আমার কাছে ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আবেদন করেছেন তাঁরা। এই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করব।

শমিষ্ঠা ব্যানার্জি

Sawan 2024: বিষ্ণুপুরে না হয়েও এই মন্দিরে দেখা যায় টেরাকোটা শিল্প! শ্রাবণ মাস এলেই উপচে পড়ে ভিড়

কোচবিহার: জেলা শহরের আরেকটি বেশ পুরনো মন্দির হল ধলুয়াবাড়ির শিব মন্দির। এই মন্দির কোচবিহারের রাজার আমলে স্থাপন করা হয়েছিল। এখানে পুজো করা হয় শিবলিঙ্গ এবং নারায়ণ। এই মন্দির প্রাচীন স্থাপত্য নির্মাণ শৈলীতে তৈরি করা। এই মন্দিরের গায়ে বিষ্ণুপুর ঘরানার টেরাকোটার শিল্প দেখতে পাওয়া যায়। এখানে প্রবেশের গেটের সামনে রয়েছে দুটি নন্দীর মূর্তি, যা মহাদেবের বাহন রূপে পরিচিত। আর ঠিক মন্দিরের পাশেই রয়েছে প্রাচীন কালের একটি পাতকুয়ো। যদিও বর্তমানে এই কুয়োকে সংস্কার করে সুন্দর করা হয়েছে।

কোচবিহারের এই প্রাচীন মন্দিরের পুজো কমিটির সম্পাদক শ্যামল দাস জানান, বছরের অন্যান্য সময়ে এই মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনা কম থাকলেও শ্রাবণ মাসে ভক্তদের সংখ্যা বেড়ে যায়। এই সময় সকাল থেকে মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়। দূর দূরান্ত থেকেও বহু পর্যটক আসেন এই মন্দির দর্শনে। মূল মন্দিরের পাশেই দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা রয়েছে। পুজো দিয়ে দর্শনার্থীদের বসার জন্য বিশ্রাম ঘরও বানানো হয়েছে মন্দির চত্বরে। এই মন্দিরের পরিবেশ যেকোন‌ও পর্যটকের মনকে খুব সহজেই আকর্ষণ করে। তাই প্রতিদিন বহু মানুষ এই মন্দিরে ভিড় জমান পুজোর সময়।

আর‌ও পড়ুন: বাইকে তারাপীঠে এসেছিল বিহারের পাঁচ বন্ধু, ফেরার পথে সব শেষ!

মন্দিরের এক ভক্ত স্বপ্না দাস জানান, শ্রাবণ মাসে এই মন্দিরে ভক্তদের সংখ্যা লক্ষাধিক হয়ে যায়। সকাল থেকে বহু মানুষ আসেন এই মন্দিরে পুজো দিতে। স্থানীয় বাসিন্দা সুচিস্মিতা দত্ত শর্মা জানান, এই মন্দির জেলার পর্যটনে অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। জেলার বুকে আর কোনোও মন্দিরে এই ধরনের টেরাকোটা শিল্প দেখতে পাওয়া যায় না। তাই তো এই মন্দিরের আকর্ষণে দূর দূরান্তের বহু পর্যটক ছুটে আসেন। তবে এই মন্দিরের সংস্কারের দরকার। দ্রুত সেই সমস্ত কাজ করা হলে মন্দিরটি আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

বর্তমান সময়ে জেলার এই বিশেষ মন্দিরকে ঘিরে বাইরের পর্যটকদের আকর্ষণ চোখে পড়ার মত। সারা বছর পর্যটকেরা কমবেশি আসতেই থাকেন এই মন্দির দর্শনে। তবে শ্রাবণ মাসে এই সংখ্যাটা বেড়ে যায় অনেকটাই। রাজ আমলের সুপ্রাচীন এই মন্দির জেলার ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে।

সার্থক পণ্ডিত