বহরমপুর পাতালেশ্বর শিব 

Sawan 2024: শ্রাবণের শেষ সোমবারে উপচে পড়া ভিড় ৩০০ বছরের পাতলেশ্বর মন্দিরে

মুর্শিদাবাদ: শ্রাবণ মাসকে হিন্দু ধর্মে অতি পবিত্র একটি মাস বলে গণ্য করা হয়। এটি দেবাদী দেব মহাদেবের মাস বলে পরিচিত। শ্রাবণ মাসে শিব ভক্তরা বিভিন্ন শৈব ক্ষেত্রে গিয়ে শিবলিঙ্গের মাথায় জল ঢালেন। বিশেষ করে শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলোতে শিব ভক্তদের বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায় বিভিন্ন শিব মন্দিরে। এই সোমবার অর্থাৎ ১২ অগস্ট হল এবারের শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার। স্বাভাবিকভাবেই এই দিন বিভিন্ন শৈবক্ষেত্র এবং শিব মন্দিরে সকাল থেকেই উপচে পড়ছে ভক্তদের ভিড়।

শ্রাবণ মাসের চতুর্থ সোমবার উপলক্ষে এদিন ভক্তদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেল বহরমপুরের পাতালেশ্বর শিব মন্দিরে। এক সময়ে কাশিমবাজার বন্দরকে কেন্দ্র করে এই এলাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নগরীতে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু অষ্টাদশ শতকে গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভাগীরথী ‘কাটিগঙ্গা’-তে পরিণত হলে বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে ক্রমশই গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে কাশিমবাজার। কিন্তু প্রতি বছরের এই সময়টা একেবারে বদলে যায় শহরের ছবিটা। আর তার কারণ পাতালেশ্বর মন্দির।

আর‌ও পড়ুন: আর স্কুলে পৌঁছনো হল না, সরকারি বাসের ধাক্কায় রাস্তাতেই মৃত্যু শিক্ষকের

মুর্শিদাবাদের ইতিহাসে কাশিমবাজার এক সুপ্রসিদ্ধ নাম। একসময় ফরাসি, ডাচ, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সকলেই এখানে বাণিজ্য কুঠি গড়ে তুলেছিল। হুগলি, পদ্মা ও জলঙ্গির মাঝখানে অবস্থিত ত্রিভুজাকার শহরটিকে অনেকে কাশিমবাজার বলে বর্ণনা করেছেন। এই কাশিমবাজার প্রাচীনকাল থেকেই ইতিহাসের অনেক সাক্ষ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। শোনা যায়, ১৭ দশকে ভাগিরথী নদী তার গতিপথ কিছুটা পরিবর্তনে করে কাশিমবাজারের পাশে দিয়ে ফরাসডাঙা পর্যন্ত গড়ে তুলেছিল কাটিগঙ্গা। আজ থেকে আনুমানিক ৩০০ বছর আগে কাটিগঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে গড়ে উঠেছিল এই পাতালেশ্বর শিব মন্দির। হিন্দু পুরাণ অনুসারে এখানকার শিবলিঙ্গকে বলা হয় স্বয়ম্ভু জ্যোতির্লিঙ্গ।

২০০৬ সালে পাতলেশ্বর মন্দিরের উন্নতির জন্য কমিটি তৈরি করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এই অঞ্চলের অধিবাসীরা ও ব্যবসায়ীরা মন্দিরটির উন্নতিকল্পে চার লক্ষ টাকা দান করেন। পরবর্তীকালে মন্দিরটিকে একটু বৃহৎ আকার দেওয়া হয়। শ্রাবণের শেষ সোমবার এই মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালতে বরাবরই ভিড় জমান ভক্তরা। এবারেও তার অন্যথা হল না।

কৌশিক অধিকারী