Shifting Cultivation: বর্ষার বৃষ্টিই ভরসা পাহাড়ের মানুষের, এখানে কীভাবে চাষাবাদ হয় জানেন?

জলপাইগুড়ি: বর্ষাই ভরসা এই এলাকার মানুষের। কিন্তু কে? চাষাবাদের জন্য উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকার বাসিন্দারা অপেক্ষা করে থাকেন বর্ষাকালের জন্য। বর্ষার বৃষ্টি ঠিক করে না হলে এইসব জায়গায় চাষ করাই সম্ভব হবে না।

উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলাটি নানান বৈচিত্র্যের যেন এক ক্ষুদ্র সমাহার।‌ পাহাড়, নদী, জঙ্গলে ঘেরা এই জেলাবাসীদের জীবনযাত্রার পথও নানান প্রতিকুলতায় ভরা। এমনই এক গ্রামের নাম মহাবীর বস্তি৷ জেলার মেটেলি ব্লকের পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত এই গ্রাম থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে বন্য প্রাণীদের বাসস্থান চাপরামাড়ি বনাঞ্চল। একদিকে গ্রামের কৃষি জমিতে নেই কোনও সেচের ব্যবস্থা, অপরদিকে নিত্য দিন হাতি সহ অন্যান্য বন্য প্রাণীদের আনাগোনা লেগেই আছে। এই দু’ইয়ে মিলে কার্যত বন্ধ হ‌ওয়ার জোগাড় কৃষি কাজ। ফলে এখানকার গরিব চাষিদের রোজগারের টান পড়েছে।

আর‌ও পড়ুন: শ্রাবণ মাসে শিব-পার্বতীর মূর্তির চাহিদা তুঙ্গে, কিনতে হলে কত টাকা খসবে জানেন?

তবে ডুয়ার্সের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে রয়েছে প্রতিকূলতাকে জয় করে বেঁচে থাকার মন্ত্র। সেই মন্ত্র আর আষাঢ়ের বর্ষা এই দুইয়ের উপর ভরষা করেই চলে ধান রোপণ থেকে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত এক অদৃশ্য সংগ্রাম। তবে শুধুই যে এই এলাকার মানুষ এভাবে সংগ্রাম চালিয়ে চাষাবাদ জারি রাখেন তা কিন্তু নয়। এই ছবিটা সমগ্র পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে সমান প্রযোজ্য। এইসব পাহাড়ি এলাকায় ঠিক কেমনভাবে চাষ হয়?

পাহাড়ি এলাকায় ঝুম চাষ অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রচলিত কৃষি পদ্ধতি। মূলত, পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে কেটে সেখানে মাটি উর্বর করে নানান সবজি সহ রকমারি চাষ করা হয়। গোটা বছরজুড়ে এক এক জায়গায় ধাপ কেটে এক এক ধরনের চাষ করেন এখানকার মানুষজন। তবে, এই চাষাবাদে জলসেচের ক্ষেত্রে বড্ড বেগ পেতে হয়। সব জায়গার পাশে নদী না থাকায় সেখানে সেচের সুবিধা পাওয়া যায় না। তাই অপেক্ষা কর‍তে হয় ভরা বর্ষার। বর্ষাকালে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে এই সময়টায় জল সেচের আর প্রয়োজন পড়ে না। ঢালু এলাকা হওয়ায় জল জমে থাকার সম্ভাবনাও কম থাকে এলাকাগুলোতে। এভাবেই প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যান সারা বছর ধরে। বাধা-বিপত্তি-বিপদ হাজারও থাকলেও সব কাটিয়েই এগিয়ে চলাই মূল মন্ত্র উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স থেকে শুরু করে পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের।

সুরজিৎ দে